শহীদুল ইসলাম কাজল
মহেশখালীর মাতারবাড়ী -চালিয়াতলী সংযোগ সড়কের ভোগান্তি যেন শেষ হওয়ার নয়। নির্মিত হওয়ার পর থেকে ভাঙন আর মেরামত এভাবেই চলছে উক্ত সড়কের কার্যক্রম। সর্বশেষ ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর প্রভাবে সড়কের তিনটি অংশে ভাঙনের ফলে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে সীমাহীন ভোগান্তিতে মাতারবাড়ী- ধলঘাটা ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ। ভাঙন কবলিত এলাকা স্থানীয় সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক এম পি পরিদর্শন করে দ্রুত মেরামতের নির্দেশ দিলেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছেনা বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। দ্রুত কাজ না হওয়ায় অনেকেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আসাদ এন্টারপ্রাইজ’কে দোষারোপ করেছেন। সরজমিন গিয়ে পথচারীদের ব্যক্তব্যে জানা যায়, মাত্র ৭/৮ জন শ্রমিক দিয়ে ধীরগতিতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এভাবে চলতে থাকলে আগামী এক সাপ্তাহেও সরাসরি যোগাযোগ সম্ভব হবে না বলে জানান অনেকেই। মাতারবাড়ীর একাধিক ব্যবসায়ী জানান- দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন এ অবস্থায় লন্ডভন্ড সড়কে অতিরিক্ত পরিবহন ভাড়া ও শ্রমিকদের মজুরির কারনে মাতারবাড়ী-ধলঘাটে সবকিছুর দাম বাড়ছেই। কাজের ধীরগতিতে বাড়ছে ভোগান্তি, চলছে ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য। আধা কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটেও ৫০ টাকার ভাড়ায় এখন নিচ্ছে ৭০ টাকা। কোথাও এর প্রতিকার না পাওয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম-ই যেন শেষ ভরসা দুঃখ কষ্ট জানানোর। ফেসবুক এ ভুক্তভোগীদের আর্তনাদ, জানেনা কবে মুক্তি পাবে সড়ক যন্ত্রণা থেকে।
এমন নাজুক পরিস্থিতিতে পণ্য পরিবহনে রাজঘাট ইজারাদার এবং যাত্রী পরিবহনে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় নিয়ে নিরবতা কতৃপক্ষের। অনেকেই জানান- পরিবহন সমিতিতে এক সময়ের সন্ত্রাসী ও অপরাধীরা দায়িত্বে থাকায় যে কোন সময় মনগড়া ভাড়া বৃদ্ধি করলেও যাত্রীদের করার কিছুই থাকে না। কোন সম্মানিত ব্যক্তি এদের অতিরিক্ত ভাড়া দাবি নিয়ে প্রতিবাদ করলে লাঞ্ছিত হওয়ার অভিযোগ পাওয়া যায়। দীর্ঘদিন থেকে এভাবে চলে আসলেও নিরব জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় প্রশাসন। মাতারবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু হায়দার নির্বাচিত হওয়ার পর দীর্ঘদিনের ভাড়া নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার হলে তিনিও ব্যর্থ হন পরিবহন সমিতির কাছে। পরিবহন সমিতির পিছনের শক্তি ক্ষমতার লেজুড়বৃত্তি এমনই জানান সচেতন মহল। তাই অন্যায়ের বিরুদ্ধে আইনানুগ প্রতিবাদের মানুষ ক্রমশ আড়ালে চলে যাচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জানান- গাড়ি সমিতির নামে বছরে প্রায় কোটি টাকা আয় হয় সেখান থেকে সরকার দলীয় কয়েকজন নেতাদের কাছে টাকা যাওয়ার কারণেই লাগামহীন ভাড়া আদায় বন্ধ হচ্ছেনা। মাতারবাড়ী সড়কে ভোগান্তি ও ভাড়া নৈরাজ্য নিয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইয়াছিন জানান-অতিরিক্ত ভাড়া ও সড়কের সীমাহীন ভোগান্তির বিষয়ে স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উপজেলা প্রকৌশলীকে নির্দেশনা দিয়েছেন। তবে আশ্বাসে যেন প্রতিবারের মতো সড়কের ভোগান্তি দীর্ঘায়িত না হয় এমনই আশা করেন ভুক্তভোগীরা। বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উপজেলা প্রকৌশলী সবুজ কুমার দে” এর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি জানান, গতকাল সরজমিন গিয়ে ভাঙা অংশের কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে জোর তাগাদা দিয়েছেন। দু-তিন দিনের মধ্যে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হবে বলে তিনি জানান। দীর্ঘদিনের অবহেলিত মাতারবাড়ী সংযোগ সড়কের মানসম্মত কাজের দাবি সর্বস্তরে।
Leave a Reply