বার্তা পরিবেশক:
রামুতে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের পছন্দমত দালান-বির্ল্ডিংয়ের মালিককে ভিজিডি কার্ড দিতে সুপারিশ না কয়ায় ফতেখাঁরকুল সদর ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম ভুট্টোকে হত্যার হুমকি দিয়েছে উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও তার স্বামী। জানা যায়, ২০২৩-২৪ দুই বছর মেয়াদে প্রতি মাসে ৩০ কেজি হারে ভিজিডি চাউলের কার্ড বরাদ্দ দেয়ার জন্য রামু উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আফসানা জেসমিন পপি ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড দ্বীপ ফতেখাঁরকুল গ্রামের বাসিন্দা নজির আহমদের অবিবাহিত কন্যা তফুরা বেগম ও বিবাহিত জয়নাব বেগমের নাম প্রস্তাব করেন। উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সুরাইয়া আমিন উক্ত তালিকা ফতেখাঁকুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবরে প্রেরণ করেন। একই পরিবার থেকে দু’বোনের নাম মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান কর্তৃক প্রস্তাব করায় এনিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের ভিজিডি বাছাই সভায় ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়। স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার জাফর আলম ও গ্রাম পুলিশ মোঃ ইসলামের তদন্তের মাধ্যমে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রস্তাবিত দু’বোনের পিতা নজির আহমদের বাড়ি এক তলা ছাদ বিশিষ্ট দালান হিসেবে প্রতিয়মান হয়। ধণার্ঢ্য পরিবারের সদস্য হিসেবে তাদের অযোগ্যতার পাশাপাশি তফুরা বেগম অবিবাহিত। ভিজিডির নির্দেশনা মতে কোন অবিবাহিত নারী সদস্য ভিজিডির জন্য অযোগ্য বিবেচিত হবেন। তাছাড়া একই পরিবারের অপর সদস্য জয়নাব বেগম ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের ভোটার হলেও পাশ^বর্তী রাজারকুল ইউনিয়নের আদর্শগ্রাম ঢালার মুখের নাছির উদ্দিনের সাথে বিবাহ হয়ে যাওয়ায় স্বামীর ঘরে তার অবস্থানের কারণে তাকেও উপকারভোগি মনোনয়নে পরিষদের সদস্যরা অনীহা প্রকাশ করেন। উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আফসানা জেসমিন পপির পছন্দমত দালান-বির্ল্ডিয়ের মালিকের কন্যা একই পরিবারের দু’জন (অবিবাহিত কিশোরী, ভিন্ন ইউনিয়নে বসবাসকারীকে) উপকারভোগি মনোনয়ন না দেয়ায় ফতেখাঁরকুল ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম ভুট্টোর উপর বিরাগভাজন হন। গত ২৪ জানুয়ারী উপজেলা সমন্বয় কমিটির সভায় উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পপি তার পছন্দমত উপকারভোগিকে ভিজিডি কার্ডের জন্য সুপারিশ না করায় চেয়ারম্যান ভুট্টো ও মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কাছে কৈফিয়ত তলব করেন। এসময় চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানের মধ্যে মধ্যে উত্ত্যপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। একপর্যায়ে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পপি ইউপি চেয়ারম্যান ভুট্টোকে সামান্য একজন ইউপি চেয়ারম্যান বলে হেয় করেন এবং চেয়ারম্যান ভুট্টোর মরহুম পিতার বিরুদ্ধে আপত্তিকর ও অশালীন বক্তব্যে রাখেন। এসময় চেয়ারম্যান ভুট্টো মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পপির বক্তব্যের বিরুদ্ধে জোরালো প্রতিবাদ জানাই। সমন্বয় সভা চলাকালে বিনা অনুমতিতে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের স্বামী ইউনুছ খান উপজেলা সমন্বয় কমিটির সভায় প্রবেশ করে চেয়ারম্যান ভুট্টোর সাথে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহমিদা মোস্তফার উপস্থিতিতে চলা সমন্বয় সভার সদস্য না হয়েও ভাইস চেয়ারম্যানের স্বামীর প্রবেশ করাকে অপরাপর ইউপি চেয়ারম্যানগণ আইনের লংঘন বলে দাবী করেন। তারপরও ইউএনও’র সামনে ভাইস চেয়ারম্যানের স্বামী ইউনুছ খান চিৎকার করে ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম ভুট্টোকে হত্যার হুমকি দেয়। সভাস্থল থেকে বের হয়ে আবারও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের স্বামী ইউনুছ খান চেয়ারম্যান ভুট্টোকে হত্যা ও বেজ্জইত করার হুমকি দিয়ে গাল-মন্দ করে। এখবর দ্রুত এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে ভুট্টোর সমর্থকরা ঘটনা জানতে উপজেলা চত্ত্বরে জড়ো হতে থাকলে অবস্থা বেগতিক দেখে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের স্বামী ইউনুছ খান উপজেলা চত্ত্বর থেকে কৌশলে সটকে পড়েন। পরে রামু থানার অফিসার ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন উপজেলা চত্ত্বরে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এবিষয়ে ফতেখাঁরকুল ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম ভুট্টো জানান, উপজেলা চত্ত্বরে লোক জড়ো হওয়ার বিষয়ে আমি কিছুই জানতাম না। মূলত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের স্বামী ইউনুছ খান সন্ত্রাসী কায়দায় চিৎকার-চেচামেচি ও আমাকে হত্যার হুমকি দেয়ার বিষয়টি লোকজন জানতে পারে জনতা নিজেরাই উপজেলা চত্ত্বরে চলে আসে। এবিষয়ে বক্তব্যে জানতে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আফসানা জেসমিন পপিকে ফোন করলেও তিনি কল রিসিভ করেন নি।
Leave a Reply