1. coxsbazarekattorbd@gmail.com : Cox's Bazar Ekattor : Cox's Bazar Ekattor
  2. coxsekttornews@gmail.com : Balal Uddin : Balal Uddin
ইয়াবা কারবারে দরগাহপাড়ার জাহাঙ্গীর এখন কোটিপতি! - Cox's Bazar Ekattor | দৈনিক কক্সবাজার একাত্তর
শুক্রবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৬:১৬ পূর্বাহ্ন

ইয়াবা কারবারে দরগাহপাড়ার জাহাঙ্গীর এখন কোটিপতি!

  • আপলোড সময় : বুধবার, ১ মার্চ, ২০২৩
  • ৮৮ জন দেখেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক:

কক্সবাজার সদরের ঝিলংজা ইউনিয়নের পূর্ব মুক্তারকুল দরগাহ পাড়া গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম। পেশায় একজন ভ্রাম্যমাণ সবজী বিক্রেতা। উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা থেকে ইয়াবা এনে পাইকারি ও খুচরা বিক্রি করে মাত্র ৭ বছরের মাথায় তিনি এখন কোটিপতি। কিনেছেন জমি ও গাড়ি। গ্রামের বাড়িতে গড়ে তুলেছেন অট্টালিকা। প্রতিবেশী কয়েকজন বেকার যুবককে নিয়ে এলাকায় গড়ে তুলেন মাদকের বিশাল সাম্রাজ্য।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ৭ বছর আগেও লিংকরোড, কলঘর, খরুলিয়াসহ বাংলাবাজারে খুচরা সবজী ও মসলা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন জাহাঙ্গীর। বাবা মিয়া হোসেন ছিলেন রাজমিস্ত্রি। অভাবের সংসারে পড়া-লেখায় মাধ্যমিকের গন্ডি পেরোতে পারেনি। অল্প বয়সে সংসারের হাল ধরতে নেমে পড়েন জীবন যুদ্ধে। এভাবে কয়েকবছর যেতে না যেতেই বাংলা বাজার এলাকায় ‘আল্লাহর দান’ নামের একটি মুদি দোকান দেন। দোকানটি ৩/৪ বছর পরিচালনা করার পর তার ভাই নুরুল আলমকে হস্তান্তর করেন।

দোকানী পেশা ছেড়ে এলাকার দুই ইয়াবা কারবারির মাধ্যমে মাদক কারবারে জড়িয়ে পড়েন। সখ্যতা গড়েন টেকনাফের শীর্ষ ইয়াবা কারবারিদের সঙ্গে। এরপর থেকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি ৩৮ বছর বয়সী জাহাঙ্গীরকে। বর্তমানে তিনি মাদকের একটি বিশাল বাহিনী তৈরি করেছেন। এই বাহিনীর অধীনে রয়েছে ৭ থেকে ১০ জন সদস্য, একাধিক মোটরসাইকেল। তাছাড়া মাদক পাচারের জন্য বেশ কয়েকজন নারীকে ব্যবহার করেছে এই জাহাঙ্গীর। বছর কয়েক আগে দরগাহ পাড়া থেকে লক্ষাধিক ইয়াবাসহ ৫ বেদে নারীকে আটক করে রামু থানা পুলিশ। ওই মাদকের বিশাল চালানটি জাহাঙ্গীর ও তার সিন্ডিকেটের বলে একাধিক স্থানীয় সূত্র নিশ্চিত করেছেন। বেদে নারীদেরকে দিয়ে ওই ইয়াবার চালানটি ঢাকায় পাচারের উদ্দেশ্যে মজুত করেছিলেন জাহাঙ্গীর ও তারা সিন্ডিকেট।

বেদে নারীরা দীর্ঘদিন ধরে উল্লেখিত সিন্ডিকেটের ইয়াবার চালান ঢাকা-চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কৌশলে পাচার করেছেন জাহাঙ্গীর সিন্ডিকেট। তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের মতো বেদে নারীদের প্রতি প্রশাসনের তেমন নজর না থাকায় তাদের দিয়ে অনায়াসে মাদক পাচার করে কাড়ি কাড়ি টাকা আয় করেছে সিন্ডিকেটটি।

ব্যবসায় টিকে থাকতে নিজের এলাকা ও কক্সবাজার শহরে গড়ে তুলেছেন আরোও একাধিক সিন্ডিকেট। সিন্ডিকেটকে টিকিয়ে রাখতে নিজের এলাকা এবং শহরের আন্ডারওয়ার্ল্ড খ্যাত কতিপয় প্রভাবশালীদেরকে প্রতিদিন মাদকের ‘সৌজন্য’ কপি সরবরাহ করে জাহাঙ্গীর ও তার লোকজন।

স্থানীয়দের দাবি, দরগাহপাড়ার সব চেয়ে বড় ইয়াবা গডফাদার জাহাঙ্গীর। মাঝে মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তার মাদকের চালান জব্দ হলেও তাকে কখনো আটক করা হয়নি। যার ফলে শূন্য থেকে বর্তমানে কোটিপতি। নিজ এলাকা দরগাহপাড়ায় তার ৫ তলা ফাউন্ডেশনে ১তলা বাড়ি গড়ে উঠেছে। এছাড়া এখানে আরো অনেক সহায় সম্পদ আছে। এছাড়া জাহাঙ্গীরের আত্বীয় স্বজনও ইয়াবার কল্যানে অনেকে লাখপতি বনে গেছে। অভাবের সংসারে সবজী বিক্রেতা জাহাঙ্গীর এখন বিলাসবহুল মটর সাইকেল নিয়ে ঘুরেন। দরগাহপাড়া, চান্দেরপাড়া, খুরুশকুল ও শহরের পেশকার পাড়ায় ক্রয় করেছেন অসংখ্য জমিজমা।

প্রতিমাসে একেকটি বিভিন্ন দামী ব্র্যান্ড্রের বাইকও তার সংগ্রহে থাকে। সম্প্রতি নিজ এলাকায় কিনেছেন ৩০ লাখ টাকা দিয়ে ১৫ গন্ডা জমি। কয়েকটি ব্যাংকের লিংকরোড ও কক্সবাজার শাখায় নামে-বেনামে কোটি কোটি টাকা জমা রেখেছেন বলেও একাধিক প্রতিবেশি দাবী করেছেন।

স্থানীয় একটি মসজিদের ইমাম বলেন, এই এলাকাটির সাথে মহাসড়ক এবং বাঁকখালী নদী লাগোয়া হওয়ায় মাদকের চালান আদান-প্রদান করতে সহজ সুযোগ রয়েছে। একারণে কেউ কাউকে নিয়ন্ত্রন করার নেই। আর ইয়াবা ব্যবসা করে অনেকে এখন কোটিপতি। টাকার জোরে তারা আর কাউকে মানতে চায়না। অনেক সময় মাদক বা ইয়াবা বিরুদ্ধে মসজিদে বক্তব্য দিলে তারপরে অনেকে ফোন করে হুমকি দেয় এবং নানানভাবে নাজেহাল করার চেষ্টা করে। দ্রুত ইয়াবা আগ্রাসন বন্ধ করা না গেলে সামনের পরিস্থিতি খুবই ভয়াবহ হতে পারে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি বলেন, ইয়াবার আর্শিবাদে হতদরিদ্র রাজমিস্ত্রি মিয়া হোসেনের ছেলে জাহাঙ্গীরের জীবন-যাপন যেভাবে পরিবর্তন হয়েছে তা দেখে বিস্মিত হয়েছি। ইয়াবা ব্যবসায় তার আমুল পরির্বতন ও সাফল্য দেখে এলাকার অনেক বেকার যুবক মাদক ব্যবসায় উদ্বুদ্ধ হয়েছেন। তারাও এখন সমান তালে মাদক কারবার চালিয়ে যাচ্ছেন।

জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও মাদক সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে জাহাঙ্গীর প্রতিবেদককে মুঠোফোনে জানান- ‌‌”আমার কসমেটিকস এর ব্যবসা আছে। দোকান আছে। এর বাইরে অন্য কোনো ব্যবসা নেই। অস্বাভাবিক সম্পদ অর্জনের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিবেদককে বিস্তারিত খোঁজ নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে ফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন।

শেয়ার করতে পারেন খবরটি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো বিভিন্ন খবর দেখুন

Sidebar Ads

© All rights reserved © 2015 Dainik Cox's Bazar Ekattor
Theme Customized By MonsuR
x