কক্সবাজার সদর উপজেলার বাঁকখালী নদীর ঝিলংজার পূর্ব মোক্তার কুলের দরগাহ এলাকায় শ্যালো মেশিন দিয়ে তোলা হচ্ছে বালি। সেই বালি বিক্রি করা হচ্ছে প্রতি ডাম্প প্রাক ১৫০০ টাকা থেকে ২০০০ টাকা পর্যন্ত। এভাবে প্রতিদিন ৮/১০ টি ডাম্প ট্রাকে ৬০/৭০ গাড়ি ভর্তি বালি বিক্রি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
সরেজমিনে আলাপকালে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার লোকজন জানান, অবৈধভাবে বালি উত্তোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ঝিলংজার পূর্ব মোক্তারকূলের দরগাহ এলাকার মৃত দানু মিয়ার পুত্র সালাম মিয়া বাবুল। তার সাথে লিংকরোডের আমিন ও কোনারপাড়ার সিরাজের নেতৃত্বে ১০/১২ টি ডাম্প ট্রাকে করে শহরের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করা হয়। দৈনিক ৬০/৭০ গাড়ি বালি বিক্রি করা হয়। প্রতি গাড়ি বালির দাম রাখা হয় ১৫০০ টাকা থেকে ২০০০ টাকা পর্যন্ত। এভাবে দৈনিক লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে সিন্ডিকেটটি।
স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল খালেক বলেন, ‘এভাবে বালি উত্তোলনের ফলে প্রতি বছর বাঁকখালী নদীর তীর ভেঙে বিস্তীর্ণ ফসলি জমি তলিয়ে যায়। অভিযোগ করলেও কোন কাজ হয় না। হাতেগোনা কয়েকজন ব্যক্তির লোভের কারণে পুরো এলাকা ঝুঁকিতে থাকে।’
কৃষক আকতার মিয়া বলেন, ‘বালি উত্তোলনের ফলে কৃষি জমির ক্ষতির পাশাপাশি ভাঙনের সৃষ্টি হয়। প্রশাসন কয়েক দফা অভিযান চালিয়েও তাদের কর্মকান্ড বন্ধ করতে পারছে না।’
সরেজমিন ঘুরে এসে এভাবে বালি উত্তোলনের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন পরিবেশ বিষয়ক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এনভায়রনমেন্ট পিপল এর প্রধান নির্বাহী রাশেদুল মজিদ।
তিনি বলেন, ‘পরিবেশগত প্রভাব সমীক্ষা এবং সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া এভাবে অপরিকল্পিতভাবে বালি উত্তোলনের কোন সুযোগ নেই। যেভাবে বালি উত্তোলন করা হচ্ছে তাতে ঝুঁকির মুখে পড়বে নদী তীরের মানুষ।’
নেতৃত্বদানকারি সালাম মিয়া বাবুল মেশিন দিয়ে বালি উত্তোলনের কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, স্থানীয় মসজিদ সংলগ্ন একটি জানাজার মাঠ ভরাট করতে বালি তোলা হচ্ছে। এ বালি বিক্রি করা হচ্ছে না।
অনুমতি নেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে।
তবে যোগাযোগ করা হলে কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাকারিয়া জানান, বাঁকখালী নদীতে বালি উত্তোলনের কোন অনুমোদন নেই। বালি উত্তোলনের খবর পেয়ে বেশ কয়েকবার অভিযান চালানে হয়েছিল। আবারও বন্ধে অভিযান চালানো হবে।
Leave a Reply