বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের জেরেই নোয়াখালীতে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় আটক ওমানপ্রবাসী আলতাফ হোসেন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এ তথ্য জানিয়ে হত্যার কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন।
বুধবার (১৪ জুন) সন্ধ্যা ৬টায় সুধারাম মডেল থানার সামনে সংবাদ সম্মেলনে হত্যার কারণ ও বিস্তারিত বর্ণনা তুলে ধরেন জেলা পুলিশ সুপার মো. শহিদুল ইসলাম। আটক আলতাফ হোসেন (২৮) লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি উপজেলার চরবাদাম ইউনিয়নের চরমেহের আব্দুল মুনাফের বাড়ির মৃত আবুল কালামের ছেলে।
এর আগে বুধবার বেলা ১১টার দিকে মাইজদীর গুপ্তাংকের বার্লিংটন মোড় এলাকায় হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন নোয়াখালী পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ফজলে আজিম কচি মিয়ার স্ত্রী নূর নাহার বেগম (৪০) ও তার মেয়ে স্কুলছাত্রী ফাতেমা আজিম প্রিয়ন্তী (১৭)।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, ‘মোবাইলে রং নম্বরে কলের সূত্র ধরে প্রায় চার মাস আগে ওমানপ্রবাসী আলতাফ হোসেনের সঙ্গে নূর নাহার বেগমের পরিচয় হয়। পরিচয়ের একপর্যায়ে উভয়ের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে আলতাফকে দেশে ফিরে ব্যবসা করার পরামর্শ দেন নূর নাহার। সেইসঙ্গে ব্যবসার মূলধন হিসেবে আলতাফকে আড়াই লাখ টাকা দেওয়ার আশ্বাস দেন। তার আশ্বাসে ওমানের ভিসা বাতিল করে গত ৮ জুন পরিবারের অজান্তে দেশে ফেরেন আলতাফ।’
জিজ্ঞাসাবাদে আলতাফ হত্যার কথা স্বীকার করেছেন উল্লেখ করে পুলিশ সুপার মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘দেশে ফিরে নূর নাহারের বাসায় গিয়ে চার-পাঁচবার দেখা করেন এবং ব্যবসার জন্য টাকা চান আলতাফ। কিন্তু টাকা দিতে সময়ক্ষেপণ করেন নূর নাহার। এতে ক্ষুব্ধ হন আলতাফ। বুধবার নূর নাহারের বাসায় গেলে টাকা দিতে অস্বীকার করেন তিনি। এ নিয়ে তাদের বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি নূর নাহারকে কুপিয়ে জখম করেন। এ সময় মায়ের চিৎকার শুনে মেয়ে প্রিয়ন্তী রক্ষা করতে এলে তাকেও ছুরিকাঘাত করেন। ছুরিকাঘাতে আহত প্রিয়ন্তী দৌড়ে বাসার নিচে নেমে এলে পেছনে পেছনে আসেন আলতাফ। তা দেখে আলতাফকে আটক করে পুলিশকে খবর দেয় স্থানীয়রা। পাশাপাশি প্রিয়ন্তীকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ছুরিকাঘাতে নূর নাহার ঘটনাস্থলেই মারা যান। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।’
মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয়রা
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোর্তাহীন বিল্লাহ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিজয়া সেন ও সুধারাম মডেল থানার ওসি আনোয়ারুল ইসলাম।
এদিকে, বাসায় ঢুকে মা-মেয়েকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয়রা। তারা হত্যাকারীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
Leave a Reply