কক্সবাজার জেলার ৮ উপজেলার ৭২টি ইউনিয়নের ২১৬টি ওয়ার্ড, এক পৌরসভা ও ৩৩টি রোহিঙ্গা শিবিরে জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন শুরু হবে আগামী ১৮ জুন । এসময় জেলায় মোট ৪ লাখ ৮৩ হাজার ৯৮৩ জন শিশুকে ভিটামিন এ প্লাস খাওয়ানো হবে।এছাড়া ৫দিনে ১ লাখ ৫২ হাজার ৩৫৬ রোহিঙ্গা শিশুকেও খাওয়ানো হবে এ প্লাস ভিটামিন ।
বুধবার ১৪ জুন বেলা ৩ টায় কক্সবাজার শহরের সিভিল সার্জন অফিস এর ইপিআই সম্মেলন কক্ষে জাতীয় ও স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. মহিউদ্দিন মো: আলমগীর।
তিনি বলেন,আগামী ১৮জুন সারাদেশের ন্যায় কক্সবাজার জেলাব্যাপী জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন শুরু হবে। শিশুর সুস্থভাবে বেঁচে থাকা,স্বাভাবিক বৃদ্ধি, দৃষ্টিশক্তি ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ভিটামিন এ অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অনুপুষ্টি। ভিটামিন এ এর অভাবে রাতকানা থেকে শুরু করে জেরোপথ্যালমিয়ার মত রোগ হতে পারে যাতে করে চোখের দৃষ্টিশক্তি সম্পূর্ণ লোপ পেতে পারে।এছাড়া ভিটামিন এ এর অভাবে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় ও ডায়রিয়ার ব্যাপ্তিকাল বৃদ্ধি পায়। রক্তস্বল্পতা দেখা দেয় ও ত্বকের শুষ্কতা বৃদ্ধি পায়।
তিনি বক্তব্যে বলেন, যেহেতু ভিটামিন এ এর অভাব একটি জনস্বাস্থ্য বিষয়ক সমস্যা তাই সম্পূরক খাদ্য হিসেবে বছরে দুইবার জাতীয় ভিটামিন এ প্লান ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়। জন্মের পর পরই নবজাতক শিশুকে শাল দুধ খাওয়ানো, জন্মের পর প্রথম ৬ মাস শিশুকে শুধুমাত্র মায়ের দুধ খাওয়ানো,গর্ভবতী ও প্রসূতি মায়েদের স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ভিটামিন এ সমৃদ্ধ সবুজ শাক সবজি ও হলুদ ফল খাওয়ানো এবং রান্নায় ভিটামিন এ সৃমদ্ধ ভোজ্য তেল ব্যবহার করা দরকার।
ডা. মহিউদ্দিন মো: আলমগীর আরও বলেন, এ লক্ষে জেলার ৫৮ হাজার ৪২৭ জন ৬ থেকে ১১ মাস বয়সী শিশুদের ১ লক্ষ ইউনিট সম্পন্ন নীল ক্যাপসুল ও ৪ লাখ ২৫ হাজার ৫৫৬ জন ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী শিশুদের জন্য ২ লক্ষ ইউনিট সম্পন্ন লাল ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।এছাড়া উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩টি রোহিঙ্গা শিবিরে ৬ থেকে ১১ মাস বয়সী ১৫ হাজার ৬৬৫ শিশুদের ১ লক্ষ ইউনিট সম্পন্ন নীল ক্যাপসুল ও ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী ১ লাখ ৩৬ হাজার ৬৯২ শিশুদের ২ লক্ষ ইউনিট সম্পন্ন লাল ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। ৩৩টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ৪৫টি সাইটে ১ হাজার ৬৬৪ জনের ৪১৬টি টিম পাঁচ দিন ধরে ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন বাস্তবায়ন করবে।
তিনি আরও বলেন,এই ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইনে জেলায় ৯টি স্থায়ী টিকাদান কেন্দ্র,১ হাজার ৭৭৬টি অস্থায়ী,১৭টি ভ্রাম্যমাণ ৯টি অতিরিক্ত টিকাদান কেন্দ্রেসহ মোট ১ হাজার ৮০২টি টিকাদান কেন্দ্র রয়েছে।এতে মোট ২২৫ জন স্বাস্থ্য সহকারী,১৭৩ জন পরিবার কল্যাণ সহকারী, ৫ হাজার ৪০৬ জন সেচ্ছাসেবক ও ২১৬ জন প্রথম সারির এবং ১৮জন দ্বিতীয় সারির তত্ত্বাবধায়ক নিয়োজিত থাকবেন।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডাক্তার শাহ ফাহিম আহমেদ ফয়সাল এর সঞ্চালনায় সভায় আরও বলা হয়,ইতোমধ্যে কক্সবাজার জেলার সকল উপজেলার তদারককারী, মাঠকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের সংশ্লিষ্ট সকলকে স্বাস্থ্যকর্মীদের হাতের ও ব্যবহৃত সরঞ্জামের পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা,শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করা এবং পর্যাপ্ত মাস্ক সরবরাহ করা সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে।
ইপিআই সম্মেলন কক্ষে ঘন্টাব্যাপী সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা ইপিআই সুপার মোহাম্মদ সাইফুল হক,তাপস কুমার বড়ুয়া প্রমুখ।
Leave a Reply