বিশেষ প্রতিবেদক :: কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগ কমিটির আকার কেমন হবে, তা নিয়ে এখনও নিশ্চিত নন দলটির দুই শীর্ষনেতা। তারা বলছেন, ত্যাগী ও যোগ্য নেতাকর্মীরাই আসছে এই কমিটিতে।
গত ১২ জুন কক্সবাজার পৌরসভা নির্বাচন সম্পন্ন হওয়ার পর আবারো সামনে এসেছে জেলা আওয়ামী লীগের প্রসঙ্গটি। দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, তাদের সকলের হবে। প্রত্যাশা- ‘আর বিলম্ব নয়, দ্রুত জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাংগ কমিটি গঠন করা হোক।
গত ১৩ই ডিসেম্বর কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনে কোনো কাউন্সিল অধিবেশন ছাড়া আইনজীবী ফরিদুল ইসলাম চৌধুরীকে সভাপতি এবং মেয়র মুজিবুর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়। দুইজনই বিলুপ্ত কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
আওয়ামী লীগের সর্বশেষ অনুষ্ঠিত জাতীয় সম্মেলনে ঘোষণা করা হয়েছিলো দলের যে কোনো শাখার সম্মেলন ও কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হওয়ার সর্বোচ্চ ৪৫দিনের মধ্যে পূর্ণাংগ কমিটি গঠন করে তা কেন্দ্রীয় কমিটির অনুমোদন নিতে হয়।
কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কমিটি গঠনে ঐক্যমতে পৌঁছাতে পারছেন না। কমিটি গঠনকে কেন্দ্ৰ করে দু’জনের মধ্যে কিছুটা দূরত্ব ও তৈরি হয়েছে।
কক্সবাজার পৌরসভা নির্বাচনের বেশ কিছুদিন আগে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক সিরাজুল মোস্তফাকে কক্সবাজার জেলার পূর্ণাংগ কমিটি গঠনে বিশেষ দায়িত্ব দেন। সিরাজুল মোস্তফা সভাপতি ফরিদুল ইসলাম এবংসাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমানের সাথে এ বিষয়ে কয়েক দফা কথা ও বলেন। কিন্তু কমিটি গঠনের কার্যক্রম মোটেও এগুইনি ।
এরমধ্যে কক্সবাজার পৌরসভা নির্বাচন ঢামাঢোল শুরু এবং নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। এ নির্বাচনের কথা বলে সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান কমিটি গঠনের ব্যাপারে কেন্দ্রের কাছ থেকে সময় চেয়ে নেন। কেন্দ্ৰ ও পৌরসভা নির্বাচনের বিষয়টি বিবেচনা করে কমিটি গঠনের বিষয়ে চাপ সৃষ্টি করেননি। এখন জেলার পূর্ণাংগ কমিটি কা গঠনের ক্ষেত্রে নতুন প্রেক্ষাপট সৃষ্টি হয়েছে। সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন পাননি।
বিদায়ী কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান দলীয় মনোনয়ন পেয়ে এক স্মরণীয় নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। বিদায়ী কমিটির আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাসেদুল হক রাশেদ দলীয় মনোনয়ন বাঞ্চিত হয়ে দলের সিদ্ধান্ত না মেনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন এবং পরাজিত হয়েছেন।
এ নির্বাচনে জেলা কমিটির অনেক দায়িত্বশীল নেতা দলের মনোনীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেননি বরং নানা কায়দায় কৌশলে বিরোধিতা করেছেন। পক্ষ নিয়েছেন দলের বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে। এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মাসেদুল হক রাশেদসহ অনেকেই দল থেকে বহিষ্কার হয়েছে। জেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে পৌর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অনেক ঘটনা ঘটেছে।
ওই সবকিছুকে বিবেচনায় নিয়ে গঠন করতে হবে জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাংগ কমিটি। দল থেকে যারা বহিষ্কার হয়েছেন তাদের নতুন কমিটিতে স্থান দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আবার দলীয় প্রার্থীর পক্ষে যারা জোরালো ভূমিকা পালন করেছেন এমন নেতা- সংগঠকদের কমিটিতে যথাযথ মূল্যায়ন করা হবে এমন দাবী ও ওঠছে নেতাকর্মীদের কাছ থেকে। এসব বিবেচনায় আওয়ামী লীগের পূর্ণাংগ কমিটি নিয়ে শুধু দলীয় নেতাকর্মীই নয়, জেলার রাজনৈতিক মহলে ও নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।
Leave a Reply