কক্সবাজারের টেকনাফে ঠেকানো যাচ্ছেনা অপহরণের ঘটনা। এবার উপজেলার হ্নীলায় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতির ভাই অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। রবিবার (১৬ জুলাই) রাত এগারোটার দিকে হ্নীলা লেদার নিজ বাড়ি থেকে তাকে অপহরণ করা হয়। পরে অপহৃতের ভাইরা ধাওয়া করে অপহরণে ব্যবহৃত মাইক্রোবাস জব্দ করে। এসময় চালকসহ তিনজনকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয় তারা। পরে ধৃতদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার সকালে রঙ্গিখালী এলাকায় অপহরণকারী পরিবারের উপর হামলা চালিয়ে তিনজনকে পুলিশের হাতে তুলে দেয় অপহৃতের পরিবার ও স্থানীয়রা। এ সময় এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করে।
অপহৃত যুবকের নাম জাহাঙ্গীর আলম। তিনি স্থানীয় লাল মিয়ার ছেলে ও হ্নীলা ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলমের ভাই।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গেল রাত (রবিবার) অনুমান এগারোটার দিকে হ্নীলা ইউনিয়নের লেদা এলাকায় নিজ বাড়ি থেকে অপহরণের শিকার হন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি মোহাম্মদ আলমের ভাই জাহাঙ্গীর আলম। এ ঘটনায় স্থানীয়দের সহযোগিতায় পরিবারের সদস্যরা ধাওয়া করে। এক পর্যায়ে মধ্যরাতে উপজেলার মিনাবাজার এলাকা থেকে অপহরণের কাজে ব্যবহৃত মাইক্রোবাসটি জব্দ করে। এসময় চালকসহ সন্দেহভাজন তিনকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে জনতা। আটককৃতরা অপহরণের ঘটনা স্বীকার করেছে এবং অপহৃত জাহাঙ্গীরকে রঙ্গীখালী অপহরণকারী চক্র শাহ আলম ও আবুল আলম বাহিনী জড়িত বলে তথ্য দেয়। এরপর পরই স্থানীয় গিয়াস বাহিনীর সহযোগিতায় ৭, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের লোকজন অপহৃতকে উদ্ধারে রঙ্গিখালীতে হামলা চালায়। এ সময় অপহরণকারী চক্রের প্রধান শাহ আলম, আবুল আলম বাহিনীর কয়েকটি বাড়ি ভাংচুর করে হামলাকারীরা। পরে অপহরণকারী তিনজনের পিতাকে ধরে নিয়ে পুলিশকে তুলে দেয় তারা।
তাদের দেয়া তথ্য মতে, টেকনাফে যেসব অপহরণের ঘটনা ঘটে তার শতকরা ৯০ ভাগ করে থাকেন শাহ আলম, আবুল আলম বাহিনীর সদস্য ইয়াছিন আরফাত, সাদেক, নুর আবছার এবং শুক্ররসহ অন্যান্যদের নেতৃত্বে। এ গ্রুপের সাথে রয়েছে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী কয়েকটি গোষ্ঠী। এ বাহিনীর সাথে বিভিন্ন সময় সংঘর্ষ লেগে থাকে স্থানীয় গিয়াস বাহিনী নামে আরেকটি বাহিনীর সাথে। এ দুই বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে হত্যাসহ প্রায় ১০/১৫ টি মামলা রয়েছে। রবিরাত রাতে শাহ আলম ও আবুল আলম বাহিনীর লোকজন জাহাঙ্গীর আলমকে অপহরণ করে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
অপহৃতের ভাই মোহাম্মদ আলম বলেন, স্থানীয় আমাদের প্রতিপক্ষ বোরহানের ইন্ধনে আমার ভাইকে রাতের আঁধারে অপহরণ করে রঙ্গিখালী এলাকা দিয়ে পাহাড়ে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় ব্যবহৃত নোহা গাড়িসহ আমরা তিনজনে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছি। তারা পুলিশকে সব তথ্য দিয়েছে।
হ্নীলা ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য নুরুল হুদা বলেন, যাদের আটক করা হয়েছে তারা স্বীকার করেছেন জাহাঙ্গীরকে রঙ্গীখালী এলাকা দিয়ে পাহাড়ে নিয়ে গেছে। এবং তাদের প্রতিপক্ষরা অপহরণ করেছে। ৭ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য ও রঙ্গিখালীর বাসিন্দা জামাল হোসেন বলেন, জাহাঙ্গীর অপহরণের সাথে জড়িত সন্দেহে আটক তিনজনই স্থানীয় বোরহানের লোক। তাদের স্বীকারোক্তিতে জাহাঙ্গীর আলমের পরিবারের লোকজনসহ ৭,৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের জনগণ এসে রঙ্গিখালী এলাকায় হামলা চালিয়ে দুদু মিয়া, মো: হোসন ফকির, সোনামনিকে ধরে নিয়ে যায়। তাদের ছেলেরা অপহরণের সাথে জড়িত বলে জানা গেছে।
টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: জুবায়ের বলেন, অপহরণের ঘটনায় স্থানীয়রা ধরে আমাদের কাছে সোপর্দ করেছে। তাদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের দেয়া তথ্যগুলো যাচাইবাচাই করা হচ্ছে। আশা করছি আপনারা ভাল খবর পাবেন।
Leave a Reply