1. coxsbazarekattorbd@gmail.com : Cox's Bazar Ekattor : Cox's Bazar Ekattor
  2. coxsekttornews@gmail.com : Balal Uddin : Balal Uddin
রামুতে সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে টোল আদায়ের নামে ইউনিয়ন পরিষদের প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি - Cox's Bazar Ekattor | দৈনিক কক্সবাজার একাত্তর
বুধবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:৫১ পূর্বাহ্ন

রামুতে সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে টোল আদায়ের নামে ইউনিয়ন পরিষদের প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি

  • আপলোড সময় : সোমবার, ৩১ জুলাই, ২০২৩
  • ৫৬ জন দেখেছেন

হাসান তারেক মুকিম,রামু

কক্সবাজারের রামু উপজেলার কাউয়ারখোপ ইউনিয়ন পরিষদের বিরুদ্ধে সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে টোল আদায়ের নামে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে।

সড়ক পথে আনা বিভিন্ন পন্যের উপর  ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে রশিদ দিয়ে ওই টাকা আদায়ের সত্যতা পাওয়া গেছে।

ক্ষমতায় অপব্যবহার করে ইউপি চেয়ারম্যান  শামশুল আলম ও প্যানেল চেয়ারম্যান মোহাম্মদ কায়েশ নিয়ম-নীতি উপেক্ষা করে এ চাঁদা আদায় করছেন বলে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীদের অভিযোগ।

রামু-নাইক্ষ্যংছড়ি সড়কের মইষকুম বাঁকখালী  ব্রিজ, ইউনিয়নের উখিয়ারঘোনা সওদাগর পাড়া ও স্থানীয় সাইমুম সরওয়ার কমল উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন সড়ক এ তিন স্থানে গেইট বসিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের রশিদের মাধ্যমে গরু-ছাগল সহ বিবিধপণ্য থেকে নিয়মবহির্ভূত টোল আদায় করছে বলে জানা গেছে।

পরিষদের এ অর্থ আদায়কে সম্পূর্ণ অবৈধ চাঁদাবাজি হিসেবে উল্লেখ করেছেন স্থানীয় এলাকাবাসী। এতে করে সাধারন ব্যবসায়ীদের মাঝে চাপা ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।

এদিকে টোলের নামে চাঁদা আদায়ের ঘটনাকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনাও ঘটছে। এ নিয়ে বড় ধরনের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সচেতন মহল।

ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা জানান, রামুর সীমান্ত এলাকা গর্জনিয়া বাজার থেকে গরু-ছাগল, সুপারি সহ বিবিধপণ্য ক্রয় করে ঐ ইউনিয়নে সুনির্দিষ্ট ভাবে টোল আদায় করা হলেও একই পন্যের উপর পুনরায় কাউয়ারখোপ ইউনিয়ন পরিষদের নামে টোল আদায় করা হচ্ছে।

প্রতি গরু থেকে ৫ শ টাকা ও ছাগল থেকে ৩ শ টাকা এছাড়া বিবিধ পন্য থেকেও মোটা অংকের টাকা আদায় করা হচ্ছে। এদিকে একই পণ্যে বার বার টোল আদায়ের ফলে চরম বিপাকে ও  অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে ব্যবসায়ীরা। নিয়মানুযায়ী এক স্থানে টোল পরিশোধ করলে অন্যত্র টোল আদায়ের বিধান নাই। কিন্তু রামুর কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মেম্বারগন এ নিয়ম মানছে না।

রামুর সাবেক ছাত্রনেতা-ব্যবসায়ী সাদ্দাম হোসেন ও মোঃ ইকবাল ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, কাউয়ারখোপ ইউনিয়ন পরিষদ টোলের নামে রীতিমত চাঁদাবাজিতে লিপ্ত হয়েছে। গর্জনিয়া বাজার থেকে ক্রয় করা ১৪টি গরু-ছাগলের উপর তাদেরকে পুনরায় কাউয়ারখোপ ইউনিয়ন পরিষদকে ৫ হাজার টাকা চাঁদা পরিশোধ করতে হয়েছে। তারা আরো জানান,আমরা নিজেরাই যদি চাঁদাবাজদের শিকার হই, তাহলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়? অর্থলোভী কিছু জনপ্রতিনিধিদের এ সমস্ত অনৈতিক কর্মকান্ড সরকারের ভাবমূর্তিকে চরমভাবে ক্ষুন্ন করবে।

 

কক্সবাজার সদর উপজেলার খরুলিয়ার ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম অভিযোগ করে জানান, ৪টি গরু ক্রয় করে তিন জায়গায় ট্যাক্স দিয়ে পুনরায় তাকে কাউয়ারখোপে এসে ট্যাক্স আদায় করতে হয়েছে। এটি রীতিমতো জুলুম ও প্রকাশ্য চাঁদাবাজি ছাড়া আর কিছু নয়।

 

রামুর বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফ্ফর আহমদ জানান, একাধিকবার টোল আদায়ের যাতাঁকলে পিষ্ঠ ব্যবসায়ীরা। একই পণ্য থেকে তিন-চার বার টোল আদায়, এ যেন এক গরুকে তিনবার জবাই করার মতো। ব্যবসায়ীদেরকে সর্বপ্রথম গর্জনিয়া বাজারে হাসিল, ২য় বার গর্জনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের টোল আদায়, ৩য় পর্যায়ে নাইক্ষ্যংছড়ি জেলা পরিষদের ট্যাক্স এখন সর্বশেষ কাউয়ারখোপ ইউনিয়ন পরিষদের টোলের বোঝা বহন করতে বাধ্য করা হচ্ছে। এমনিতেই  দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারনে ব্যবসায়ীরা মারত্মক সমস্যায় পড়েছেন তার মাঝে অতিরিক্ত টোল আদায় তাঁদের কাছে যেন মরার ওপর খাঁড়ার ঘা।

 

টোলের নামে চাঁদা আদায়ের বিষয়ে কাউয়ারখোপ ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান জানান,পরিষদের মিটিংয়ে এজেন্ডার মাধমে চেয়ারম্যান ও সকল সদস্য-সদস্যাদের সর্বসম্মতিক্রমে রেজুলেশন সহকারে টোল আদায়ের সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।

 

কাউয়ারখোপের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ জানান, কাউয়ারখোপে সরকারীভাবে একজন ইজারাদার রয়েছে, এমন একটি পর্যায়ে পরিষদ কর্তৃক টোল আদায় একটি সাংঘর্ষিক বিষয়। তিনি আরো জানান, কাউয়ারখোপ ইউনিয়ন পরিষদ সৃষ্টি হওয়ার পর থেকে কোনদিন টোল আদায় করা হয়নি। জনস্বার্থের কথা বিবেচনা করে তিনিও টোল আদায় করেননি। তার পূর্ববর্তী কোনো চেয়ারম্যানও এরকম টোল আদায় করেননি। মুলত সীমান্ত এলাকায় টোল আদায়ের বিধান রয়েছে, এক্ষেত্রে এক জায়গায় টোল পরিশোধ করা হলে একই পণ্য থেকে পুনরায় টোল আদায় অন্যায় ও অনিয়ম। উপজেলা ও জেলা প্রশাসনের অনুমতি ব্যতিরেকে ইউনিয়ন পরিষদ ইচ্ছে করলেই সড়কে টোল আদায় করতে পারেন না বলেও জানান তিনি।

 

জানতে চাইলে কাউয়ারখোপ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শামশুল আলম এব্যাপারে কথা বলতে অনাগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

 

 

ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক টোলের নামে টাকা আদায়ের কোনো এখতিয়ার আছে কি না জানতে চাইলে রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহমিদা মুস্তফা বলেন, কাউয়ারখোপ ইউনিয়ন পরিষদের টোল আদায়ের বিষয়টি তিনি অবগত নন। তিনি এব্যাপারে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনের কথা জানান।

 

জানতে চাইলে কক্সবাজার জেলা (স্থানীয় সরকার) এর উপ-পরিচালক মোঃ নাসিম আহমেদ তদন্ত পূর্বক রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য নির্দেশ প্রদানের কথা জানান। 

এদিকে নিয়মবহির্ভূত টোল আদায় বন্ধে সাধারণ ব্যবসায়ীরা রামু উপজেলা-জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।

শেয়ার করতে পারেন খবরটি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো বিভিন্ন খবর দেখুন

Sidebar Ads

© All rights reserved © 2015 Dainik Cox's Bazar Ekattor
Theme Customized By MonsuR
x