1. coxsbazarekattorbd@gmail.com : Cox's Bazar Ekattor : Cox's Bazar Ekattor
  2. coxsekttornews@gmail.com : Balal Uddin : Balal Uddin
৩০ মাদক কারবারির দাপট কক্সবাজার হোটেল জোনে - Cox's Bazar Ekattor | দৈনিক কক্সবাজার একাত্তর
বুধবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:৩৩ পূর্বাহ্ন

৩০ মাদক কারবারির দাপট কক্সবাজার হোটেল জোনে

  • আপলোড সময় : সোমবার, ২১ আগস্ট, ২০২৩
  • ৩৪ জন দেখেছেন

বিশেষ প্রতিনিধি:
পর্যটন এলাকা কক্সবাজারের কলাতলী হোটেল মোটেল জোনে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অর্ধশতাধিক চিহ্নিত মাদক কারবারি। এসব মাদক কারবারিদের মধ্যে বেশির ভাগ তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী ও ছিনতাইকারী। জেল ফেরত এসব আসামীরা সাগরতীরের কলাতলী, লাইট হাউজ ও সৈকত পাড়া এলাকায় বসবাস করে মদ ও ইয়াবা বিক্রি করছে দীর্ঘদিন ধরে। হোটেল মোটেল জোন ও পর্যটনকে পুঁজি করে এই অবৈধ কারবার চলছে নির্বিঘ্নে।
আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়- হোটেল মোটেল জোনের আলোচিত ছিনতাইকারী ও ইয়াবা কারবারির মধ্যে রয়েছে লাইট হাউজ এলাকার মৃত ডাকাত নুরুল ইসলামের ছেলে আক্তার কামাল, আমিন ও সাইফুল। কটেজ ও হোটেল জোনে তারা ইয়াবা কারবারি হিসেবে বেশ চিহ্নিত। তারা অস্ত্র, ছিনতাই, ডাকাতি ও মাদকসহ একাধিক মামলা নিয়ে ইতিমধ্যে কারাগারেও যান। পর্যটন জোনে ছিনতাইকারী হিসেবে বেশ দখল রয়েছে তাদের।
লাইট হাউজ এলাকায় জায়গা কিনে স্থানীয় হয়েছেন মিয়ানমারের নাগরিক আয়ুব। স্ত্রীকে সাথে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কটেজ জোনে ইয়াবা ব্যবসায় চালিয়ে যাচ্ছে বার্মায়া আয়ুব। দুই বছর আগে ইয়াবাসহ আটকও হয়েছিল আয়ুব। তারপরও তার মাদক ব্যবসা বন্ধ হয়নি। লাইট হাউজ এলাকার বড় ইয়াবা ভেন্ডার হিসেবে রয়েছে ঝন্টু। ইয়াবার বড় চালান নিয়ে আটকও হয়েছিল কয়েকবার। কারাগার থেকে বের হয়ে প্রকাশ্যে কলাতলী হোটেল মোটেল জোনে মাদকের রাজত্ব চালাচ্ছে ঝন্টু।
কলাতলী সৈকত পাড়ার আলোচিত ইয়াবা ডন খোকা ও আবু সালেহ। এই দুই ভাই ভিন্ন ভিন্নভাবে চালিয়ে যাচ্ছে ইয়াবা কারবার। ইয়াবা নিয়ে আটকও হয়েছিল খোকা। হোটেল জোনে বিদেশী মদ বিক্রিতে শীর্ষ রয়েছে লাইট হাউজ এলাকার কলিম উল্লাহর ছেলে শাহ আলম ওরফে বোতল শাহ আলম। বিভিন্ন হোটেলে অবৈধভাবে বিদেশি মদের বেশির ভাগ সরবরাহ দেন শাহ আলম। ইতিমধ্যে মদসহ দুই বার আটকও হয়েছিল বোতল শাহ আলম।
লাইট হাউজস্থ ফাতের ঘোনার শীর্ষ কয়েকজন ইয়াবা ডনের মধ্যে অন্যতম আনজুল হোসেন। ইয়াবাসহ আটক হলেও থেমে থাকেনি তার ইয়াবা কারবার। ঢাকা চট্টগ্রামে তার রয়েছে বিশাল মাদকের নেটওর্য়াক। ফাতের ঘোনার কয়েকজন সমাজ নেতার ইন্ধনে আনজুল হোসেনের ব্যবসা জমজমাট বলে জানা গেছে।
কয়েক বছর আগে ইয়াবাসহ আটক হয়েছিল ফাতের ঘোনা এলাকার বেলাল। এখন ইয়াবা বিক্রিতে তার পরিচিতি বেড়ে যাওয়ায় হোটেল জোনে ইয়াবা বিক্রি করতে আসতে হয় না তার। নির্দিষ্ট ক্রেতারা ফাতের ঘোনা গিয়ে তার কাছ থেকে ইয়াবা কেনেন বলে জানা গেছে।
কটেজ জোনে পতিতা ও ইয়াবার ডেরা বানিয়েছে মহেশখালী কালারমারছড়া এলাকার কালা মান্নান। বর্তমানে লাইট হাউজস্থ বাঘঘোনা এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন কালা মান্নান। তিনি একাধিক ভাড়া বাসা নিয়ে পতিতা মজুদ রাখার নজিরও রয়েছে। পতিতার পাশাপাশি কটেজ জোনে ইয়াবা বিক্রি করে যাচ্ছে নিয়মিত। দীর্ঘদিন ধরে ধরা ছোঁয়ার বাইরে থাকায় মাদক বিক্রিতে এক প্রকার প্রকাশ্যে কালা মান্নান।
শীর্ষ ছিনতাইকারী ও মাদক কারবারি আক্তার কামালের কাছ থেকে ইয়াবা নিয়ে দেদারছে বিক্রি করছে জসিম। জসিম লাইট হাউসস্থ শফি নামে একজনের ভাড়া বাসায় থাকেন। ভাড়া বাসায় অবস্থান নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কটেজ জোনে ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে জসিম। তবে একসময় ইয়াবাসহ আটক হয়েছিল জসিম।
বর্তমান সময়ে হোটেল জোনে অপরাধের মাত্রা বাড়িয়েছে পুলিশের তালিকাভুক্ত অপরাধী ঘোনার পাড়ার গুন্নুজ্জা ও কাউসার। বহুবার পুলিশের হাতে আটক হয়ে কারাগারে যান গুন্নুজ্জা ও কাউসার। ঠিকই জামিনে বের হয়ে চালিয়ে যান অপরাধ। বর্তমানে ইয়াবা বিক্রি করে যাচ্ছে তারা।
কটেজ জোনে খুচরা ইয়াবা বিক্রি করে যাচ্ছে লাইট হাউজ এলাকার নাছির। ইয়াবাসহ আটক হয়ে কারাগারে যান নাছির। কারাগার থেকে বের হয়ে ইয়াবা কারবারে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠে নাছির।
ঢাকা ও কক্সবাজারে দুইবার ইয়াবাসহ আটক হয়েছিল বাবুল। তবুও তার ইয়াবা কারবার চলছে হোটেল জোনে। চাহিদার সাথে সাথে বাবুল নিজেই ইয়াবা পৌঁছে দিচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়। কটেজ জোনে একটি ভাড়া বাসায় অবস্থান করে মাদক ব্যবসা চালাচ্ছে বাবুল।
ছিনতাই ও মাদকসহ বিভিন্ন মামলায় জেল কেটেছে বাহারছড়া এলাকার জিয়া উদ্দিন। কলাতলী জোনের ত্রাস হিসেবেও বেশি পরিচিত জিয়া। বর্তমান সময়ে কলাতলীর এই জোনে নিয়মিত ইয়াবা বিক্রি করে যাচ্ছে জিয়া।
কটেজে রুম ভাড়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবা ব্যবসা করে যাচ্ছে ঈদগাও এলাকার রাকিব। তিন মাস আগে ইয়াবাসহ কক্সবাজার সদর থানা পুলিশের হাতে আটক হন রাকিব। আটকের পর মাত্র দুই মাসের ব্যবধানে জেল থেকে বের হয়ে ফের ইয়াবা কারবার শুরু করে রাকিব।
ঈদগাঁও বোয়ালখালী থেকে এসে লাইট হাউস্থ বাবুর মার কলনিতে ভাড়া থাকেন করিম। সেখানে ভাড়া থেকেই দীর্ঘ ৭ বছর ধরে হোটেল জোনে ইয়াবা কারবার চালিয়ে যাচ্ছে করিম। এরিমধ্যে গত দুইবছর আগে ইয়াবাসহ আটকও হয়েছিল। আটক হলেও তার ব্যবসা ছিল চালু। করিম ও তার স্ত্রী মিলেই কটেজ ও হোটেল মোটেল জোনে ইয়াবা কারবার গড়ে তুলেছে দীর্ঘদিন ধরে।
কটেজ জোনের রহমানি কটেজের পাশে একটি প্লটে অবস্থান করে ইয়াবা কারবার চালাচ্ছে ইয়াছমিন। প্রায় তিন বছর আগে ইয়াবাসহ আটক হয়েছিল ইয়াছমিন। কিন্তু তার এই মাদক ব্যবসা এখনো চলমান রয়েছে। তরুণ ইয়াবা কারবারিদের মধ্যে লাইট হাউজ এলাকায় শীর্ষ রয়েছে রিদুয়ান। তালিকাভুক্ত ইয়াবা কারবারি হিসেবেও তার নাম রয়েছে।
লাইট হাউজ এলাকার শীর্ষ আরেক মাদক কারবারি সেলিমের ছেলে মো. ফারুক। রোহিঙ্গা ক্যাম্প কেন্দ্রিক তার রয়েছে বিশাল মাদক কারবারির সিন্ডিকেট। যারা নিয়মিত হোটেল মোটেল জোনে মাদক সরবরাহ দিয়ে যাচ্ছে।
নিজ ছেলেকে ব্যবহার করে হোটেল জোনে বিদেশি মদের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে লাইট হাউজ এলাকার বাদশা। বহুবছর ধরে মদের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে বাদশা। তার বিষয়ে লাইট হাউজ সমাজ নেতারা অবগত থাকলেও কৌশলে চুপ রয়েছে। এরিমধ্যে নিজঘর থেকে বিদেশি মদসহ আটক হন বাদশ। পরে জামিনে বের হয়ে ফের মাদক কারবার চালিয়ে যাচ্ছে বাদশা। বিদেশি মদ বিক্রিতে রয়েছে পুতু। নিজ আস্তানায় বসে দীর্ঘদিন ধরে বিদেশি মদের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে পুতু। ইতিমধ্যে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর তালিকায়ও অবৈধ মাদক বিক্রিতে নাম রয়েছে পুতুর।
কলাতলী সৈকত পাড়া এলাকায় ছিনতাইকারী ও খুচরা ইয়াবা কারবারি হিসেবে নাম রয়েছে আরিফের। ইতিমধ্যে ইয়াবা বিক্রিকে কেন্দ্র করে বেশ কয়েকটি ঘটনার জন্ম দিয়েছে আরিফ। কয়েকদিন আগে ছিনতাইকারী হিসেবে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন আরিফ। সৈকত পাড়া কেন্দ্রিক ইয়াবা ব্যবসা চালাচ্ছে শীর্ষ সন্ত্রাসী মনিয়ার সহযোগি জমির ওরফে ছোট জমির।
একই সাথে রয়েছে ঈদগাঁও নাপিতখালী এলাকার শাকিল। ইয়াবা বিক্রি করতে গিয়ে বেশ কয়েকবার আটকও হয়েছিল শাকিল। বাবুল নামে একব্যক্তির ইয়াবা নিয়মিত হোটেল মোটেল জোনে বিক্রি করে যাচ্ছে শাকিল।
গোয়েন্দা পুলিশের একটি সূত্রে জানা গেছে- কলাতলী হোটেল মোটেল জোন, কটেজ জোন ও লাইট হাউজ এলাকায় মাদক কারবারিদের একটি প্রাথমিক তালিকা তৈরি হচ্ছে। এই তালিকায় সমাজের অনেক নেতার নামও রয়েছে। তালিকা ধরে এবং চিহ্নিত মাদক কারবারিদের দ্রুত সময়ে গ্রেপ্তারে অভিযানও করা হবে।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম বলেন, ‘মাদকের বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়নে আমরা কাজ করছি। মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে সবসময় অভিযান রয়েছে আমাদের। যেকান থেকে হোক না কেন, মাদক প্রবেশ এবং মাদক কারবারের বিরুদ্ধে পুলিশের অবস্থান কঠোর রয়েছে। কক্সবাজার জেলা পুলিশের সকল সদস্য এ বিষয়ে খুবই সতর্ক এবং তৎপর রয়েছে।’
সূত্র: াড়রপবড়িৎষফ২৪.পড়স

শেয়ার করতে পারেন খবরটি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো বিভিন্ন খবর দেখুন

Sidebar Ads

© All rights reserved © 2015 Dainik Cox's Bazar Ekattor
Theme Customized By MonsuR
x