আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবসে কক্সবাজারে বর্ণাঢ্য র্যালী, আলোচনা সভা
কক্সবাজার ৭১ ডেষ্ক:
শিক্ষার মূলস্রোত থেকে ঝড়ে পড়া ও বিদ্যালয় বহির্ভূত ৮-১৪ বছর বয়সী শিশুদের জন্য আউট অব স্কুল চিলড্রেন প্রোগ্রাম এর মাধ্যমে কক্সবাজার পৌরসভা, সদর, রামু ও চকরিয়া উপজেলায়, ১২ হাজার ৩শ’ শিশুকে এক্সিলারেটেড কোহর্ট মডেলের মাধ্যমে শিক্ষাদান করা হচ্ছে। যা বাস্তবায়ন করছে সমাজ কল্যাণ ও উন্নয়ন সংস্থা (স্কাস)। ইতোমধ্যে গত ৩০ জুন ২০২৩ তারিখে প্রকল্পের প্রথম ফেজ সমাপ্ত হয়েছে এবং দ্বিতীয় ফেজ এর কার্যক্রম চলমান রয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে আগামী ২০২৫ সালের ৩০ জুন এসব শিশুকে শিক্ষার মূল ধারায় ফিরিয়ে দেয়া সম্ভব হবে।
ইউনেস্কো নির্ধারিত ‘পরিবর্তনশীল ও শান্তিপূর্ণ সমাজ গঠনে সাক্ষরতার প্রসার’- এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে জেলায় গতকাল শুক্রবার আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস উদযাপন উপলক্ষে আলোচনা সভায় এ তথ্য উঠে আসে। আলোচনা সভার পূর্বে সকাল ১০ ঘটিকায় একটি বর্ণাঢ্য র্যলী অনুষ্ঠিত হয়। র্যালীশেষে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাচ্ছে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে প্রতিজন নাগরিককে শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে স্মার্ট সিটিজেন হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। শিক্ষাক্ষেত্রে বৈষম্য দূরীকরণের মাধ্যমে উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে টেকসই ও সকলের অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি -৪ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে। সাক্ষরতা কর্মসূচীর বাইরে থাকা দেশের প্রায় ২৪ শতাংশ জনগোষ্ঠির সাক্ষরতা প্রদানসহ তাদের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে সরকার। দেশপ্রেমে শাণিত হয়ে সবাইকে এই কার্যক্রমে সহযোগিতা প্রদান করতে হবে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিভীষণ কান্তি দাশ’র সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন- জেলা উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর সহকারী পরিচালক একেএম বজলুর রশীদ তালুকদার।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) তাপ্তি চাকমা, জেলা শিক্ষা অফিসার নাছির উদ্দীন, কক্সবাজার প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মুজিবুল ইসলাম, জেলা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা অফিসার হানিফ মিয়া, শিক্ষা ও কল্যাণ শাখার সহকারী কমিশনার মুনমুন পাল, সমাজ কল্যাণ ও উন্নয়ন সংস্থা (স্কাস) চেয়ারম্যান জেসমিন প্রেমাসহ সংশ্লিষ্ট শিক্ষক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান প্রমুখ।
জেলা উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো’র তথ্যমতে, জেলায় ১৯৯১ সালে ব্যাপক আকারে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা তথা গণশিক্ষা কাযক্রম শুরু হয়। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিল প্রাক- প্রাথমিক শিক্ষা, মৌলিক শিক্ষা ও কিশোর -কিশোরী শিক্ষা। সফলভাবে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের পর উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা প্রকল্প ১,২,৩ ও ৪ বাস্তবায়ন হয়। এতে বিপুল সংখ্যক নিরক্ষর জনগোষ্ঠী নিরক্ষরতার অভিশাপ থেকে মুক্ত হয়। সদ্যসমাপ্ত জেলায় মৌলিক সাক্ষরতা প্রকল্প ( ইখচ) এর মাধ্যমে ৪ উপজেলায় ৭২ হাজার নিরক্ষরকে সাক্ষরতা প্রদান করা হয়েছে।
বর্তমান সরকার সুবিধাবঞ্চিত ও বিদ্যালয় বহির্ভূত ৮-১৪ বছর বয়সী শিশুদের শিক্ষার ক্ষেত্র সম্প্রসারণ করে ১০ লক্ষ শিশুকে আউট অব চিলড্রেন প্রোগ্রাম এর আওতায় শিক্ষাদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। কক্সবাজার জেলায় ৩১০ টি শিখন কেন্দ্রের মাধ্যমে ১২ হাজার ৩শ’ শিশুকে কোহর্ট মডেলের মাধ্যমে শিক্ষা প্রদান ও শিক্ষার মূল ধারায় ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে প্রকল্প কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
দেশে বর্তমানে সাক্ষরতার হার ৭৬ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ। গতবছর অর্থাৎ ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে এ হার ছিল ৭৪ দশমিক ৬৬ শতাংশ। সে হিসাবে এক বছরে দেশে সাক্ষরতার হার বেড়েছে ১ দশমিক ৪২ শতাংশ।
কক্সবাজার জেলায় সাক্ষরতা হার ৬৭.১৫।
Leave a Reply