1. coxsbazarekattorbd@gmail.com : Cox's Bazar Ekattor : Cox's Bazar Ekattor
  2. coxsekttornews@gmail.com : Balal Uddin : Balal Uddin
নাজিরারটেকের শুটকি পল্লীতে মাছ শুকানোর ধুম - Cox's Bazar Ekattor | দৈনিক কক্সবাজার একাত্তর
রবিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৭:৫৩ অপরাহ্ন

নাজিরারটেকের শুটকি পল্লীতে মাছ শুকানোর ধুম

  • আপলোড সময় : রবিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২১
  • ১৫৭ জন দেখেছেন

বিশেষ প্রতিবেদক:

সাগর থেকে মাছ শিকার শেষে তীরে ভিড়েছে অন্তত ২০টি মাছ ধরার নৌকা। সেই নৌকা থেকে কেউ ভ্যানে করে, কেউ কাঁধে করে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ নিয়ে যাচ্ছে শুঁটকি মহালে।
সেখানেও শ্রমিকদের কথা বলার ফুসরত নেই। কেউ মাছ পরিষ্কার করছেন, কেউ মাছের আঁটি বাঁধছে আবার কেউ কেউ সেই মাছ তুলে দিচ্ছেন মাচায়।
পুরো মহাল জুড়ে অন্তত ১৫ হাজার শ্রমিকের এমন ব্যস্ততা দেখা গেল দেশের অন্যতম কক্সবাজারের নাজিরারটেক শুঁটকি মহালে।এ মহালে পুরোদমে শুরু হয়েছে শুঁটকি উৎপাদনের কাজ।
বঙ্গোপসাগর থেকে সংগ্রহ করা ছোট-বড় ২০ থেকে ২৫ প্রজাতির মাছ শুকানো ও প্রক্রিয়াজাত করা হচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্রতি মৌসুমে শুধুমাত্র নাজিরারটেক শুঁটকি মহালে মাছের গুড়াসহ ৫০ থেকে ৬০ হাজার টন বিভিন্ন জাতির শুঁটকি উৎপাদন করা হয়।
যার বাজার মূল্য প্রায় দুইশ’ কোটি টাকা। উৎপাদিত এসব শুঁটকি দেশের চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি করা হচ্ছে বিদেশেও।
কক্সবাজার শহর থেকে তিন কিলোমিটার দূরে বঙ্গোপসাগরের পাশ ঘেঁষে প্রায় ১০০ একর বালুচর জুড়ে গড়ে তোলা হয়েছে নাজিরারটেক শুঁটকি মহাল। শুধুমাত্র সূর্যের তাপে এখানে বিভিন্ন প্রজাতির শুঁটকি করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুধু নাজিরারটেক নয়, প্রতিবছরের মতো শীত মৌসুমের শুরু থেকে মহেশখালীর সোনাদীয়া দ্বীপ, টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ, সেন্টমার্টিন, কুতুবদীয়াসহ জেলার উপকূলীয় বিভিন্ন শুঁটকি মহালে শুঁটকি উৎপাদন শুরু হয়েছে। সাগরের বেড়িবাঁধ এবং বিশেষ উপায়ে তৈরি বাঁশের মাচার ওপর পাতলা করে বিছিয়ে সূর্যের তাপে কাঁচা মাছ শুকিয়ে শুঁটকিতে পরিণত করা হয়।
স্থানীয় বাদশার মালিকানাধীন শুঁটকি মহালে দেখা গেল, এখানে ১৫ জন শ্রমিক কাজ করছেন। কেউ মাছ পরিষ্কার করছেন, কেউ সেই মাছ মাচায় তুলছেন।
শুঁটকি মহালের শ্রমিক জানে আলম জানান, নভেম্বরের শুরু থেকে এখানে শুঁটকি উৎপাদন শুরু হয়েছে। এখন পুরোদমে উৎপাদন চলছে। ছুরি, লইট্ট্যা, সুরমা, পোপা, চামিলাসহ ১০ থেকে ১৫ প্রজাতির মাছ তারা শুঁটকি করে থাকেন বলেও জানান বাদশা।
শুঁটকি মহালের ব্যবসায়ী মো. শহিদুল্লাহ জানান, এ বছর শীত মৌসুম শুরুর আগে থেকে নাজিরারটেক শুঁটকি মহালেও শুঁটকি উৎপাদন শুরু হয়েছে। রূপচাঁদা, ছুরি, কোরাল, সুরমা, লইট্যা, পোপা, টেকচাঁদা, হাঙ্গর, ফাইস্যা, নাইল্যাসহ ২০ থেকে ২৫ প্রজাতির শুঁটকি এ মহালে উৎপাদন করা হচ্ছে। বর্ষাকাল ছাড়া বছরের নয়মাস এখানে শুঁটকি উৎপাদন চলে।
স্থানীয় আরেক শুঁটকি ব্যবসায়ী মো. লোকমান হোসেন জানান, কক্সবাজারের আবহাওয়া মাছ শুঁটকি করার জন্য খুবই উপযোগী। লবণাক্ত আবহাওয়ার কারণে প্রতিবছর চট্টগ্রাম থেকে বিপুল পরিমাণ কাঁচামাছ শুকানোর জন্য এ মহালে আনা হয়। এবারও আনা হয়েছে। শুঁটকির উৎপাদনও খুব ভালো হচ্ছে।
নাজিরারটেক শুঁটকি ব্যবসায়ী বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি মো. আতিক উল্লাহ বাংলানিউজকে জানান, নাজিরারটেক শুঁটকি মহালের আয়তন প্রায় একশ’ একর। এখানে ব্যবসায়ীও আছেন প্রায় দুই হাজার। এখানে রয়েছে ছোট-বড় অর্ধশতাধিক আড়ৎ। এ মহাল থেকে সবমিলিয়ে প্রতিদিন প্রায় দুইশ’ টন বিভিন্ন জাতের শুঁটকি উৎপাদন করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, প্রতি মৌসুমে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টন শুঁটকি এখানে উৎপাদন হয়। যার বাজার মূল্য প্রায় দুইশ’ কোটি টাকা। এসব শুঁটকি দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করা হয়। শুধু তাই নয়, এ শুঁটকি মহালে ১৫ থেকে ২০ হাজার শ্রমিক রয়েছেন। যারা এখানে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন।
জেলা মৎস্য কর্মকতা এসএম খালেকুজ্জামান বলেন, বঙ্গোপসাগর থেকে আহরণ করা বিশেষ করে ছোট আকৃতির মাছগুলো দিয়ে শুঁটকি উৎপাদন করা হয়। শুধু কক্সবাজারে নয়, এখানে উৎপাদিত শুঁটকি ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, নাটোরসহ দেশের বিভিন্নস্থানে মানুষের চাহিদা মেঠানো হচ্ছে এবং দেশের মানুষের প্রোটিনের বড় একটি অংশ কক্সবাজারে উৎপাদিত শুঁটকি থেকে পূরণ হচ্ছে। এমনকি, শুঁটকির একটি উল্লেখযোগ্য অংশ বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে।
তিনি বলেন, নিরাপদ শুঁটকি উৎপাদনে উদ্বুদ্ধ করতে কয়েকটি এনজিও সংস্থার সহযোগিতায় আমরা ইতোমধ্যে নজিরারটেকে ব্যবসায়ী এবং উৎপাদনকারীদের নিয়ে আমরা উদ্বুদ্ধকরণ সভা করেছি।

71/mun

শেয়ার করতে পারেন খবরটি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো বিভিন্ন খবর দেখুন

Sidebar Ads

© All rights reserved © 2015 Dainik Cox's Bazar Ekattor
Theme Customized By MonsuR
x