1. coxsbazarekattorbd@gmail.com : Cox's Bazar Ekattor : Cox's Bazar Ekattor
  2. coxsekttornews@gmail.com : Balal Uddin : Balal Uddin
নেতিবাচক প্রভাবে কক্সবাজারের পর্যটনে ভাটা, হোটেলে ৫০ শতাংশ রুম খালি - Cox's Bazar Ekattor | দৈনিক কক্সবাজার একাত্তর
রবিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৮:৪৮ অপরাহ্ন

নেতিবাচক প্রভাবে কক্সবাজারের পর্যটনে ভাটা, হোটেলে ৫০ শতাংশ রুম খালি

  • আপলোড সময় : বুধবার, ৫ জানুয়ারী, ২০২২
  • ১০২ জন দেখেছেন

বিশেষ প্রতিবেদক:
সাম্প্রতিক সময়ে পর্যটক নারী ও স্কুলছাত্রী ধর্ষণের ঘটনাসহ খাবারের দাম বৃদ্ধির নেতিবাচক প্রভাবে কক্সবাজারে কাঙ্খিত পর্যটক আসেনি। আগে থার্টি ফাস্ট নাইট উদযাপনে কক্সবাজারে হোটেলে কোন রুম খালি থাকত না। এবার ৫০ শতাংশ হোটেলের রুম খালি রয়েছে। দেশে অনেকটা স্বাভাবিক পরিবেশ থাকা সত্ত্বেও এমন দিনে কাঙ্খিত পর্যটক না থাকা কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পে ও পর্যটন ব্যবসায়ীদের জন্য উদ্বেগজনক।
গাড়ি পার্কিং পর্যটন গলফ মাঠের ইজারাদার কক্সবাজার পৌরসভার কাউন্সিলর সালাহউদ্দিন সেতু বলেন, গত ১৬ ডিসেম্বর ছুটির ৩ দিনে পর্যটকদের বড় বাস পার্কিং ছিল সাড়ে ৩শ টি। পার্কিং জায়গা না পেয়ে স্থানীয় ইলিয়াছ মিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠসহ বিভিন্ন স্থানে আরো আড়াইশ বড় বাস পার্কিং করা হয়। প্রতিদিন প্রায় ৭শ বাস কক্সবাজারে পার্কিং হয়। কিন্তু এবারে বছরের বিদায় ও বরণ উপলক্ষে কক্সবাজারে পর্যটকদের বড় বাস পার্কিং করা হয় মাত্র ৫০ টির মতো। এ থেকে বুঝা যায় অন্যান্য ছুটির সময়ের তুলনায় এবার পর্যটক আসেনি বললেই চলে।
তিনি বলেন, এতে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছে পর্যটক ব্যবসায়ীরা। মূলত থার্টি ফাস্ট নাইটকে উপলক্ষ্য করে পার্কিং ইজারা নেয়া হয়। এতে করে এবার কাঙ্খিত প্রাপ্তি হয়নি। মূলত পর্যটক নারী ধর্ষণ ও ডাল ভাতের দাম বেশি নেয়ার ঘটনা ভাইরাল হওয়ার কারণে এবার কক্সবাজার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে পর্যটকরা।
কক্সবাজারে পর্যটকদের স্বাগত জানিয়ে জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, কক্সবাজার শুধু দেশের নয় পৃথিবীর একটি আকর্ষণীয় পর্যটন জোন। তাই বিদেশি বেশ কিছু পর্যটক এসেছে এবার। বছরের প্রথম দিনে পর্যটকদের ফুল দিয়ে বরণ করা হয়। এ জন্য স্ব স্ব হোটেল পর্যটকদের ফুল দিয়ে বরণ করেন।
তিনি বলেন, সম্প্রতি কক্সবাজারকে নিয়ে প্রচারণায় কিছুটা নেতিবাচ প্রভাব পড়লেও পর্যটকদের সেবার মান বাড়াতে এবং সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে একাধিক বৈঠকে প্রয়োজনী সিদ্ধান্ত ও প্রস্তুতি নেয়া হয়। শুধু থার্টি ফাস্ট নাইট বা বর্ষবরণ নয় ভরা পর্যটন মৌসুমে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
মনিটরিং কমিটি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করছেন জানিয়ে মামুনুর রশীদ বলেন, সরকারিভাবে জানিয়ে দেয়ার কারণে এবার উন্মুক্ত স্থানে থার্টি ফাস্ট নাইটের কোন আয়োজন করা হয়নি।
কক্সবাজার হোটেল মোটেল গেস্ট হাউজ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার জানান, এবার আশানুরূপ পর্যটক আসেনি। এবারে থার্টি ফাস্ট নাইট উপলক্ষে এ পর্যন্ত প্রায় ৫০ শতাংশ রুম বুকিং হয়েছে। সৈকতে উন্মুক্ত স্থানে অনুষ্ঠান আয়োজনে সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকায় কোন আয়োজন ছিল না। তাই এবার কক্সবাজারে পর্যটক আগমন আশানরূপ হয়নি। তবে এবার অনেক আবাসিক হোটেলে বেশি কিছু বিদেশি পর্যটক রুম বুকিং নিয়েছেন।
তিনি জানান, এবার ধর্ষণের ঘটনায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ায় পর্যটনের সংখ্যা কমে গেছে। বছর বিদায় ও বরণের এমন সময়ে কক্সবাজারে এমন নাজুক অবস্থা আর হয়নি।
আবাসিক হোটেল অফিসার্স এসোশিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কলিম উল্লাহ জানান, এখন সব হোটেল অনলাইনে বুকিং নিচ্ছে। তাই কোন দালালের কাছে না নিয়ে গিয়ে সরাসরি হোটেল বুকিং দিলে সাশ্রয় রেটে রুম দেয়া সম্ভব। তবে এবার কাঙ্খিত পর্যটকের আগমন হয়নি। তবে খুশির খবর হচ্ছে এবার অন্যান্য বারের তুলনায় কিছু বিদেশি পর্যটক বেশি এসেছে।
কক্সবাজার বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি অ্যাডভোকেট আয়াছুর রহমান জানান, সম্প্রতি সময়ে কক্সবাজারে ধর্ষণের ঘটনায় সারাদেশে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। তাই অনেকে এই বিষয়কে মাথায় রেখে কক্সবাজার ভ্রমণ বাতিল করেছে। তবে একটা ঘটনাকে নিয়ে কক্সবাজার সম্পর্কে নেতিবাচক চিন্তা করা উচিত না।
কক্সবাজার টুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আহমেদ জানান, কক্সবাজারে সাড়ে ৪ শ আবাসিক হোটেলে প্রায় দেড় লাখ লোক রাত্রিযাপন করতে পারেন। নিরাপত্তার স্বার্থে প্রতিটি হোটেলে সিসিটিভি ক্যামরা নিশ্চিত করা হয়েছে। শঙ্খলা রক্ষায় নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এ জন্য বিশেষ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। সাদা পোশাকধারী পুলিশ সব সময় মাঠে থেকে দায়িত্ব পালন করছেন। কক্সবাজারে ৩৫টি পর্যটন জোন রয়েছে । প্রত্যেক পর্যটন জোনে ট্যুরিস্ট পুলিশ দায়িত্ব পালন করছেন। স্বাস্থ্যবিধি মানা ও পর্যটকদের নিরাপত্তায় কয়েক স্তরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। কক্সবাজারে যাতে আর কোন নেতিবাচক না ঘটে সেই জন্য সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় রয়েছে পুলিশ।
ট্যুরিস্ট পুলিশের চট্টগ্রামের ডিআইজি মো. মোসলেম উদ্দিন জানান, কক্সবাজারের পর্যটকদের জানমালসহ সার্বিক নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশ কাজ করছেন। এবার থার্টি ফাস্ট নাইট সহ পুরো পর্যটন মৌসুমে পর্যটকদের নিরাপত্তা ও সেবা প্রদানে বিশেষভাবে জোর দেয়া হয়েছে এবং সেইভাবে মাঠে রয়েছের ট্যুরিস্ট পুলিশ। কক্সবাজারে ট্যুরিস্ট পুলিশের সংখ্যা কিছুটা কম রয়েছে। ২৫০ জনের জায়গায় এখন ২০৮ জন নিয়োজিত রয়েছেন। শিগগিরই মোট ২৫০ জন ট্যুরিস্ট পুলিশ নিয়োজিত করা হবে কক্সবাজারে ।
সংঘবদ্ধ ধর্ষণ: পর্যটক দাবিদার এক নারী দাবি করেছেন, গত ২২ ডিসেম্বর রাতে শহরের সন্ত্রাসী আশিক তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেন। এক পর্যায়ে র‌্যাব অভিযান চালিয়ে কক্সবাজারের হোটেল জিয়া গেস্ট ইন থেকে ধর্ষণের শিকার তাকে উদ্ধার করে। অভিযোগের ভিত্তিতে হোটেলের ম্যানেজার ছোটনকে আটক করে র‌্যাব। এ ঘটনায় ২৩ ডিসেম্বর রাতে কক্সবাজার সদর থানায় এজাহারনামীয় ৪ জনসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন নির্যাতনের শিকার নারীর স্বামী। এ মামলায় এখন পর্যন্ত ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ট্যুরিস্ট পুলিশ মামলাটি তদন্ত করছে।

শেয়ার করতে পারেন খবরটি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো বিভিন্ন খবর দেখুন

Sidebar Ads

© All rights reserved © 2015 Dainik Cox's Bazar Ekattor
Theme Customized By MonsuR
x