1. coxsbazarekattorbd@gmail.com : Cox's Bazar Ekattor : Cox's Bazar Ekattor
  2. coxsekttornews@gmail.com : Balal Uddin : Balal Uddin
মহাসড়কে শ্রমিক সংগঠনের নামে চাঁদাবাজি, অতিষ্ট পরিবহন চালকরা - Cox's Bazar Ekattor | দৈনিক কক্সবাজার একাত্তর
রবিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৬:৪৬ অপরাহ্ন

মহাসড়কে শ্রমিক সংগঠনের নামে চাঁদাবাজি, অতিষ্ট পরিবহন চালকরা

  • আপলোড সময় : সোমবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২২
  • ৮৩ জন দেখেছেন

বিশেষ প্রতিবেদক:
কক্সবাজার—চট্টগ্রাম মহাসড়কে নামে চলছে চাঁদাবাজির মহোৎসব। আরাকান সড়ক শ্রমিক ইউনিয়নের নামে কেন্দ্রীয় বাসটার্মিনাল ও লিংকরোডে সিরিয়ালের নামে প্রতিদিন মোটা অঙ্কের টাকা উঠানো হচ্ছে। এতে রীতিমতো অতিষ্ট হয়ে উঠেছে পরিবহন মালিক ও চালকরা।

অনুসন্ধানে জানা যায়, পর্যটন শহর হওয়ায় কক্সবাজারে প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ৫ শতাধিক গাড়ি আসে। এসব গাড়ি ও চট্টগ্রামগামী প্রায় ১৫০ গাড়ি কক্সবাজার ত্যাগ করতে গুণতে হয় ৫০ থেকে ১১০ টাকা পর্যন্ত। তাঁরমধ্যে কক্সবাজার কেন্দ্রীয় বাসটার্মিনাল থেকে ছেড়ে যাওয়া গাড়িকে ৬০ টাকা ও লিংকরোডে ৫০ টাকা করে দুই দফা চাঁদা দিতে হয়। সে হিসেবে ১৫০ গাড়ি থেকে দৈনন্দিন ১১০ টাকা করে মোট ১৬ হাজার ৫০০ টাকা চাঁদা আদায় করা হয়। যা মাস শেষে দাঁড়ায় ৪ লক্ষ ৯৫ হাজার টাকা। আরাকান সড়ক শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যনির্বাহী সম্পাদক কলিম উল্লাহ করিমের নেতৃত্বে বাসটার্মিনালে জসিম, হাবিব, সৈয়দ নুর, আবু তালেব, জয়নাল এবং লিংকরোডে মিন্টু, মঈন ও ওসমান বিভিন্ন গাড়ি থেকে ওই টাকা নেয়। চাঁদাবাজির লাইন ক্লিয়ার করতে বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তিকেও ভাগ দেওয়া হয়। ট্রাফিক পুলিশের তৎকালীন সহকারী পুলিশ সুপার বাবুল চন্দ্র বণিক এসব চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্য বন্ধে কঠোর অবস্থানে ছিলেন। যার কারণে বন্ধ ছিল তাদের চাঁদা আদায়। কক্সবাজারে পুলিশের গণবদলির পর চাঁদাবাজ চক্রটি ফের বেপরোয়া হয়ে উঠে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাসটার্মিনাল সিএনজি পাম্পের পাশে চেয়ার নিয়ে কিছু ব্যক্তি জড়ো করে আছে। কেউ কেউ কথা বলছে চট্টগ্রামগামী চালকদের সাথে। সেখানে মূলতঃ দেওয়া হয় সিরিয়াল নাম্বার। কক্সবাজার পৌরসভা ও ট্রাফিক পুলিশের কোন বৈধতা না থাকলেও পরিবহন চালকদের জিম্মি করে আদায় করা হচ্ছে টাকা। একই দৃশ্য লিংকরোডেও। বিভিন্ন পরিবহনের চালকরা জানান, করিমের রয়েছে বিশাল সংঘবদ্ধ বাহিনী। কোন চালক তাদের দাবিকৃত চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে তাকে মারধরসহ ব্যাপক লাঞ্চিত করা হয়। গত শনিবার বাসটার্মিনাল এলাকায় একটি গাড়ি পার্কিংকে কেন্দ্র করে তুলাবাগান হাইওয়ে পুলিশের ফয়েজ নামে এক কর্মকর্তাকে স্ত্রীসহ শারীরিক ও মানসিকভাবে লাঞ্চিত করে ওই চাঁদাবাজ চক্রের সদস্যরা। ওই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, তাদের এমন বেপরোয়া আচরণ দেখে আমি হতবাক। স্ত্রী নিয়ে কক্সবাজার যাওয়ার পথে তাঁরা আমাকে লাঞ্চিত করে। পুলিশ পরিচয়ে দিয়েও তাদের কাছ থেকে রেহায় মিলেনি। বিষয়টি উর্ধ্বতন কতৃর্পক্ষকে জানিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে নিজেকে বাংলাদেশ আওয়ামী মটর চালক লীগের সাধারণ সম্পাদক পরিচয় দিয়ে আরাকান সড়ক শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যনির্বাহী সম্পাদক কলিম উল্লাহ করিম বলেন, তিনি ২০ বছর ধরে পরিবহন সেক্টরে আছেন। তাই তার অধিকার রয়েছে টাকা আদায়ের। বাসটার্মিনাল ও লিংকরোডে ৮—১০ জন তার মানুষ গাড়ি পার্কিং, সিরিয়াল ও নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করেন। প্রতিদিন তিনিসহ এক ব্যক্তির পেছনে ৫০০ টাকা করে খরচ আছে। তাই সেই খরচ মেটাতে টাকা নেওয়া হচ্ছে। ট্রাফিক পুলিশ ও কক্সবাজার পৌরসভার অনুমতি আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এসবের কি প্রয়োজন। তিনি কক্সবাজারে সুপরিচিত। সবাই তাকে চিনেন। সে সুবাধে কেউ কিছু বলার অধিকার নেই। তবে তিনি দাবি করেন, চাঁদা আদায় নয়, খরচ তোলা হয় গাড়ি থেকে। হয়তোবা কেউ ভুল বুঝিয়ে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। সেই ষড়যন্ত্রের সমুচিত জবাব দেওয়া হবে।

কক্সবাজার ট্রাফিক পুলিশের সহকারি পুলিশ সুপার এম,এম, রকীব ঊর রাজা বলেন, তিনি এ বিষয়ে জানতেন না। গাড়ি থেকে কেউ চাঁদা আদায় করলে খোঁজ নিয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সুশীল সমাজের মতে, পরিবহণ খাতে চাঁদাবাজির কারণে রাস্তায় চলাচলকারী অগণিত যাত্রী প্রতিদিন চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। এ ছাড়া পণ্য পরিবহণের ক্ষেত্রেও সৃষ্টি হচ্ছে নানা প্রতিবন্ধকতা। চাঁদাবাজির কারণে পণ্যমূল্য বৃদ্ধির অভিযোগ দীর্ঘদিনের। জনস্বার্থ রক্ষায় চাঁদাবাজির মতো অন্যায় ও অনৈতিক কর্মকাণ্ড অবিলম্বে রোধ করা প্রয়োজন।

শেয়ার করতে পারেন খবরটি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো বিভিন্ন খবর দেখুন

Sidebar Ads

© All rights reserved © 2015 Dainik Cox's Bazar Ekattor
Theme Customized By MonsuR
x