শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:৩৫ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :

মহেশখালীতে জাল সনদ দিয়ে শিক্ষকতা পেশায় ছালেহ আহমেদ’র ২৩ বছর

নিজস্ব প্রতিবেদক।
কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার ধলঘাটা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক ছালেহ আহমদের দীর্ঘদিন ধরে জাল সনদ দিয়ে প্রতারনার মাধ্যমে শিক্ষকতা করে যাচ্ছেন। সম্প্রতি জাল সনদের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর বিদ্যালয়ের সভাপতির কাছে পদত্যাগ পত্র দিয়েছেন ছালেহ আহমেদ। শিক্ষকতার মত একটি মহত পেশাকে জাল সনদ দিয়ে কলুষিত করার জন্য তার শান্তির দাবি করেছেন স্কুলটির শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অভিবাক শিক্ষকরা।
জানা গেছে,১৯৯৮সালে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করে তিনি।ওই সময় চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যাচেলর সায়েন্স (বি,এসসি পাশ) করার সনদ জমা দেন ছালেহ আহমেদ।
পরে ২০০১ সালে মহেশখালী ধলঘটা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় সিনিয় সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। পরে ২০০৭থেকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন।কিন্তু ২০১১সাল থেকে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পান ছালেহ আহমেদ।
এদিকে দীর্ঘ ২৩ বছর পর জানা গেল ছালেহ আহমদে বি,এসসি পাশ করেননি।এর পরও জাল সনদ দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে শিক্ষকতা করে যাচ্ছেন ছালেহ আহমেদ। এমনকি সনদ জমা দেওয়া চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনাও করেননি তিনি।
অনুসন্ধান করে জানা গেছে, চট্রগ্রামের হাটাজারীর নাছিরহাট কলেজ থেকে ১৯৯২ সালের (ফ্রেবরুয়ারী ও মার্চে) অনুষ্ঠিত বি.এসসি পরিক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। তার তার পরিক্ষার রোল ২০১৮৮ এবং রেজি: নং ৩০০২৭ শিক্ষাবর্ষ। সেবার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেননি ছালেহ আহমেদ। এর পরেও চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জাল সনদ বানিয়ে শিক্ষকতা পেশায় যোগদান করেন তিনি।
এদিকে সম্প্রতি ছালেহ আহমদের জাল সনদ শিক্ষকতার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর সমালোচনার মুখে পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছেন তিনি।
ধলঘটা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি হুমান কবির জানান, জাল সদনের বিষয়ে চাকরির বিষয়টি তিনি অবগত নন।তবে অসুস্থতা দেখিয়ে গত এক মাস আগে প্রধান শিক্ষক ছালে আহমেদ তার কাছে পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছেন তিনি।
এদিকে জাল সনদ দিয়ে প্রতারনার মাধ্যমে চাকরি নেওয়ায় ছালেহ আহমদের বিরুদ্ধে যাথাযত আইনী ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন স্কুলটির শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অভিবাকরা। তারা বলছে,শিক্ষকতার মত একটা মহত পেশাকে কলুষিত করার পর শাস্তিমূল ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে তা হবে শিক্ষক সমাজের জন্য কলঙ্কের।
নাম প্রকাশ করার শর্তে একাধিক শিক্ষক ও কর্মচারীরা জানিয়েছেন, তিনি জাল সনদে চাকরি করলেও নিয়মিত প্রভাব বিস্তার করতেন বিভিন্নভাবে। শিক্ষক ও কর্মাচারীদের জিম্মি করে খালি স্টাম্পে সাক্ষর নিয়ে রেখেছেন। পরবর্তীতে এসব স্টাম্প ও সাক্ষরের ভয় দেখিয়ে নানা অনৈতিক কর্মকান্ডেও বাধ্য করতেন।
পদত্যাগ পত্র জমা দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করলেও জাল সনদের অভিযোগের বিষয়টি ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেছেন ছালেহ আহমেদ।
কক্সবাজার জেলা শিক্ষা অফিসার মুহাম্মদ নাসির উদ্দীন বলেন, বিষয়টি আমি অবগত হয়েছি। তদন্ত চলমান রয়েছে। জাল সনদের বিষয়টি প্রমাণ পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *