বুধবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ১২:৪০ পূর্বাহ্ন
কক্সবাজার ৭১ ডেস্ক:
কক্সবাজারের উখিয়া থানার ওসি আহমেদ সনজুর মোরশেদে আশির্বাদে রিকশা চালক সেলিম এখন কোটিপতি। সেলিম উখিয়ার কোটবাজারে অটোরিকশা চালক ও রুমখাঁপালং এর মোঃ সোনাআলীর পুত্র। উখিয়া থানার ওসির বিশেষ আশির্বাদে সেলিমের মাসিক আয় ১০ লাখ টাকা। ওসি সানজুর মোরশেদের নির্দেশে উখিয়া উপজেলায় পরিবহন খাতে চাঁদাবাজি করে কোটিপতি হয়েছেন এই রিকশা চালক। উখিয়ার ওসির দেয়া টোকেন বিক্রী করে মাসে ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা উত্তলন করে এই সেলিম। বিগত কয়েক বছর ধরে সেলিমকে টোকেন বাণিজ্যে নামিয়েছেন উখিয়া থানার ওসি, ট্রাফিক পুলিশের টিআই ও তুলাবাগান ও কুতুপালং এর হাইওয়ে পুলিশের একাধিক শীর্ষ কর্মকর্তা।
কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার হলদিয়া পালং ইউনিয়নের রুমঁখা পালং এলাকার মোঃ সোনা আলীর পুত্র সেলিম কয়েক বছর আগেও অটো রিকশা চালাতো। এক পর্যায়ে সে কোটবাজারের টমটম (ইজিবাইক) এর লাইন্সম্যানের হিসেবে কাজ শুরু করে। উখিয়া থানা পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশ যখন অবৈধ টমটম ধরে নিয়ে গেলে সেলিম টাকার বিনিময়ে সে টমটম ছাড়িয়ে আনতো। এইভাবেই পুলিশের সাথে বিশেষ সখ্যতা গড়ে তুলে এই সেলিম। এক পর্যায়ে উখিয়া থানার ওসি সনজুর মোরশেদের ঘনিষ্ট হয়ে পড়ে সেলিম।
উখিয়া থানার ওসি সাননজুর মোরশেদ মধ্যস্থতায় উখিয়া ট্রাফিক পুলিশ, কুতুপালং হাইওয়ে পুলিশ ও তুলাবাগান হাইওয়ে পুলিশের পক্ষে সেলিমকে উখিয়ায় চলাচল করা সকল অবৈধ গাড়ি থেকে টোকেন দিয়ে টাকা তোলার দায়িত্ব দেন।
সেলিম উখিয়া থানা, ট্রাফিক ও হাইওয়ে পুলিশের পক্ষে প্রতিমাসে উখিয়ায় চলাচলকরা অবৈধ ডাম্পার, মিনি ট্রাক, পিকআপ, মাইক্রো, সিএনজি ও ইজিবাইক সহ সকল গাড়ি থেকে ৩০০০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত টোকেন বিক্রী করে। পুলিশের নামে টোকেন বিক্রী করে সেলিম মাসে ১০-১২ লাখ টাকা আয় করে।
টোকেন বাণিজ্য থেকে চুক্তি হিসেবে সেলিম প্রতি মাসে ২ লাখ টাকা উখিয়া থানার ওসি সানজুর মোরশেদকে, ১ লাখ টাকা উখিয়া ট্রাফিকের টিআই মোরশেদ ও সার্জেন্ট সুভ্রতকে, ৫০ হাজার টাকা কাজি নাজমুল হককে ও ৫০ হাজার টাকা কুতুপালং হাইওয়ে পুলিশের এস আই শরিফকে দেয়। প্রতিমাসে ৬ থেকে ৮ লাখ টাকা সেলিম নিজে রেখে দেয়।
ওসির সহযোগিতায় অবৈধ টোকেন বাণিজ্য করে সেলিমের কোটিপতি হওয়ার ঘটনা উখিয়ার সাধারণ গাড়ি চালকেরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
তারা অভিযোগ করেন, সেলিমের হাতে উখিয়ার গাড়ির মালিক ও চালকেরা জিম্মি। গাড়ির বৈধ কাগজ থাকলেও সেলিমের টোকেন না নিলে রাস্তার গাড়ি বের করা যায়না। টোকেন ছাড়া গাড়ি বের করলেই সেলিম পুলিশ দিয়ে গাড়ি ধরে থানায় নিয়ে ওসির মাধ্যমে মোটা অংকের টাকা আদায় করে।
অভিযোগের ব্যাপারে সেলিমের কাছ থেকে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি কোন টোকেন বাণিজ্য করেননা। পরিবহন শ্রমিক হিসেবে প্রশাসনের সাথে তার সু সম্পর্ককে ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা দিয়ে প্রতিপক্ষের লোকজন তাকে ঘায়েল করতে চাইছে।
উখিয়া থানার ওসি সানজুর মোরশেদ বলেছেন, সেলিম নামে কাওকে তিনি চিনেননা। তার নামে এরকম টোকেন বাণিজ্য করা হয় তা তিনি জানেনইনা। উখিয়া থানা টোকেন বাণিজ্যমুক্ত বলে তিনি জানান।