শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:৩৬ পূর্বাহ্ন
করোনা মহামারির দুর্দিনে পুলিশ ফোর্স কম থাকার কারণে প্রায় দশমাস ধরে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার উপকূলীয় জনপদ বদরখালী ইউনিয়নের বদরখালী পুলিশ ফাঁড়ির কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ফাঁড়িতে পুলিশের সেবা কার্যক্রম বন্ধ থাকার কারণে এলাকায় চুরি, ছিনতাইসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বাড়ার পাশাপাশি মাদক ব্যবসাও বেড়েছে। এতে উপকূলীয় তিনটি ইউনিয়নের মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
থানা-পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৪ সালে বদরখালী সমবায় ও কৃষি উপনিবেশ সমিতির কয়েকটি কক্ষ নিয়ে অস্থায়ী বদরখালী পুলিশ ফাঁড়ির কার্যক্রম শুরু হয়েছিল। ২০১৫ সালে সমিতির স্থায়ী কার্যালয়ের ভবন নির্মাণকাজ শুরু হলে ফাঁড়ির কার্যক্রম বদরখালী বাজারের অদূরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কার্যালয়ে স্থানান্তর করা হয়।
এরপর ২০২১সালের শুরুতে অস্থায়ী পুলিশ ফাঁড়ির কার্যালয়ে তালা লাগিয়ে দিয়ে কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় থানা-পুলিশ। একজন উপপরিদর্শক ও এক সহকারী উপপরিদর্শকসহ পুলিশ সদস্যদের অস্থায়ী ফাঁড়িটি পরিচালিত হচ্ছিল।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপকূলীয় বদরখালী, পশ্চিম বড়ভেওলা ও ঢেমুশিয়া তিন ইউনিয়নের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা কাজ করতেন। দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তর সমবায় সমিতি ‘বদরখালী সমবায় ও কৃষি উপনিবেশ সমিতি’ নিয়ে এলাকাটি চকরিয়ার সবচেয়ে বড় স্টেশন। এ ছাড়া বদরখালী বাজার আরও দুটি উপজেলার সংযোগস্থল।
নৌপথ পারাপারের মাধ্যম হিসেবে প্রতিদিন অর্ধ লাখ মানুষ বদরখালীর ফেরিঘাট ব্যবহার করেন। বদরখালীতে দেশের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন প্রকল্প মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের যাতায়াতের মূল স্থল ও নৌপথ রয়েছে।
পুলিশ ফাঁড়ি বন্ধ হওয়ার পর প্রতিদিনই রাতের আঁধারে ব্যবসায়ী ও নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ ছিনতাইয়ের শিকার হচ্ছেন। এ নিয়ে থানায় একাধিক অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
বদরখালী ইউনিয়নের বাসিন্দা আওয়ামী লীগ নেতা নুরে হাবিব তছলিম বলেন, ‘বদরখালী পুলিশ ফাঁড়ির কার্যক্রম থাকার সময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল। সাম্প্রতিক ইউপি নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতায় গিয়াস উদ্দিন মিন্টু নামের এক ব্যক্তি প্রতিপক্ষের হাতে খুন হন। এখন পুলিশ ফাঁড়ির কার্যক্রম পুনরায় চালু করার দাবি করছেন বদরখালীবাসী। তাই পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’
জানতে চাইলে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (চকরিয়া সার্কেল) মো. তফিকুল আলম বলেন, ‘বদরখালী পুলিশ ফাঁড়ির কার্যক্রম বন্ধ হয়নি। মূলত করোনাকালে ফোর্স কম থাকার কারণে স্থায়ী পুলিশ রাখা যায়নি। তবে থানা থেকে নিয়মিত টহল টিম ও আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ কাজ করছে। ফের ফাঁড়িতে পুলিশ মোতায়েন করার জন্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করবো।