রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৪৮ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
চকরিয়ায় বিশেষ অভিযানে ইউপি সদস্যসহ গ্রেফতার ৯ মানহানিকর সংবাদ প্রচার করায় জেলা ছাত্র দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফাহিমুর রহমানের বিবৃতি পোকার আক্রমণে বিবর্ণ মহেশখালীর প্যারাবন মহেশখালীর ঘটিভাঙ্গা-সোনাদিয়া সড়কের উপর অবৈধ ভাবে তৈরি করা হচ্ছে ব্যক্তিগত কাঠের রাস্তা শেখ হাসিনার পতনের ঘটনায় প্রশাসনিক নিরবতাকে কাজে লাগিয়ে খাস জমি দখল করে প্রতিযোগিতা মূলকভাবে নির্মাণ হচ্ছে অনুমোদনহীন বহুতল ভবন। যেন দেখার কেউ নাই হোটেল বেলাভূমি ও হোটেল ক্লাসিক সহ কটেজ জোনে অভিযান পরিচালনা করায়, কক্সবাজার জেলা পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা সংস্থা ডিবি পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার সাবেক মুখ্য সচিব নাসের ও সচিব মেজবাহ গ্রেফতার মহেশখালীতে অজ্ঞাত যুবকের লাশ উদ্ধার পর্যটন নগরী কক্সবাজারের হোটেল বেলাভূমি ও হোটেল ক্লাসিক এখন পতিতা, মরণ নেশা ইয়াবা ও মাদকের স্বর্গরাজ্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে রোগী কল্যাণ সমিতি পুনর্গঠন

ঘুরে দাঁড়াচ্ছে পর্যটন ব্যবসা

কক্সবাজার ৭১ রিপোর্ট:
দীর্ঘদিন পর ঘুরে দাঁড়াচ্ছে কক্সবাজারের পর্যটন ব্যবসা। মহান বিজয় দিবস এবং টানা তিন দিনের ছুটিতে পর্যটকে ভরে গেছে সমুদ্র নগর। তাতে যোগ হয় বাণিজ্য মেলা। গত দুইদিন ধরে শহরের প্রতিটি অলিগলিতে মানুষ আর মানুষ। চার শতাধিক হোটেল মোটেল গেস্ট হাউসেও কোনো কক্ষ ফাঁকা নেই। কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন রুটে পর্যটকবাহী ৮টি জাহাজের টিকিটও অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে। পর্যটকের চাপে ভোগান্তিতে স্থানীয়রাও। পর্যটকের আগমনকে পুঁজি করে অনেক আবাসিক হোটেলে অতিরিক্ত ভাড়া গুনছে বলে অভিযোগ উঠেছে। খাবারের দোকানের বিরুদ্ধেও অভিযোগ তুলেছে পর্যটকেরা।
স্থানীয়রা বলছে, মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে কক্সবাজারের পর্যটন খাতে খরা নামে। বন্ধে কেটে গেছে দুইটি পর্যটন মৌসুম। ইতোমধ্যে অনেক ব্যবসায়ী তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গুটিয়ে চলে গেছেন। ধারদেনা করে অনেকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ধরে রেখেছে। তারা নতুনভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছে। পেয়েছে নতুন প্রাণ।
১৬ ডিসেম্বর থেকে পর্যটকের পদভারে মুখরিত হয়ে ওঠে সমুদ্র শহর। সৈকতের লাবণী পয়েন্টে দেখা গেছে, নানা বয়সী পর্যটকে ভিড়। কেউ বালিয়াড়িতে দৌঁড়ঝাপ দিচ্ছে। কেউবা সমুদ্রস্নানে ব্যস্ত। হিমছড়ি, ইনাননিতে পচুর ভ্রমণ পিয়াসী লোকজন। যে যার মত করে আনন্দে মেতেছে। সবমিলে প্রাণ ফিরেছে ভঙ্গুর পর্যটনে।
কক্সবাজার হোটেল মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার বলেন, তিন দিনের ছুটিতে প্রায় নব্বই ভাগ কক্ষ আগাম বুকিং হয়ে গেছে। যেকটি খালি ছিল তাও এখন বুকিং। করোনাকালে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা ঘুরে দাঁড়ানারো স্বপ্ন দেখছে। পুরো মৌসুম ব্যবসা করতে করলে পারলে দীর্ঘদিনের ক্ষতি কিছুটা কাটিয়ে ওঠতে পারবে তারা।
রেইনভিউ রিসোর্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও কলাতলী মেরিনড্রাইভ হোটেল-রিসোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুকিম খান বলেন, করোনার কারণে দীর্ঘদিন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় তাদের অপূরণীয় লোকসান গুনতে হয়েছে। অনেকে ব্যবসা ছেড়ে চলে গেছে। যারা টিকে আছে তারা এবারের পর্যটন মৌসুকে কেন্দ্র করে কিছুটা ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার চেষ্টায় আছে। তার জন্য হোটেল মোটেল জোনের ব্যবসায়ীরা সব ধরণের প্রস্তুতি আগেভাগে নিয়ে রেখেছে। যতটুকু সম্ভব স্বাস্থ্যবিধি মানছে।
তবে আবারো করোনা বা ওমিক্রণের মতো নতুন কোন ধাক্কায় আসলে ব্যবসায়ীরা বড় ধরণের লোকসানে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলেও জানান তিনি।
টুয়াকের সভাপতি এম. রেজাউল করিম রেজা বলেন, গত তিনদিন ধরে কক্সবাজারে প্রচুর পর্যটক এসেছে। জাহাজ ও হোটেল মালিকদের ভাল ব্যবসা হচ্ছে। তবে ট্যুর অপারেটররা বলতে গেলে অসহায়। তেমন ব্যবসা করতে পারছে না।
তিনি দুঃখের সঙ্গে বলেন, স্পট সেলের জন্য অনেক জাহাজ ও আবাসিক হোটেলে রুম ব্লক করে রাখা হয়েছে। ট্যুর অপারেটররা সুবিধা পাচ্ছে না। সীমাবদ্ধতার মাঝেও সর্বোচ্চ আন্তরিকতার সাথে পর্যটকদের সেবা দিয়ে যাচ্ছে তারা। এরকম মৌসুম পেলে পর্যটন খাতসমূহ ঘুরে দাঁড়াতে পারবে।
কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের পুলিশ সুপার জিল্লুর রহমান জানান, এবার কক্সবাজারে প্রচুর পর্যটক অবস্থান করছেন। তাদের নিরাপদ ভ্রমণ নিশ্চিত করতে টুরিস্ট পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে পর্যটন কেন্দ্র ও সড়ক মহাসড়কগুলোতে টহল জোরদারের পাশাপাশি সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালন করছে টুরিস্ট পুলিশ সদস্যরা।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, ছুটি পেলেই দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ কক্সবাজার ভ্রমণে আসেন। এবারও লাখো পর্যটকের সমাগম হয়েছে এখানে। পর্যটকদের নিরাপত্তায় জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে একাধিক ভ্রাম্যমাণ আদালত কাজ করছেন।
এদিকে, জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ মুরাদ ইসলাম জানান, পর্যটকদের যাতে কোন ধরনের হয়রানির শিকার না হয় সেজন্য শুক্রবার হোটেল ও রেস্টুরেন্টে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।
এ সময় সী পার্ল ১ও ২ হোটেল থেকে ২ জন পর্যটকদের টাকা হোটেলের কাছ থেকে ফেরত দেয়া হয়।
দুইটি হোটেলকে অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ার জন্য জরিমানা করেছে প্রশাসন। একইসাথে পর্যটকদের কোন ধরনের অভিযোগ থাকলে জেলা প্রশাসনের তথ্য ও অভিযোগ কেন্দ্রে জানানোর জন্য মাইকিং করা হয়। জেলা প্রশাসনের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *