বুধবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ০১:৫৯ পূর্বাহ্ন
কক্সবাজার ৭১ রিপোর্ট:
কক্সবাজারে স্বামী-সন্তানকে জিম্মি করে গণধর্ষণের ঘটনায় পর্যটক গৃহবধূ ও তার স্বামীকে আদালতে তোলা হয়েছে।
গতকাল বিকাল ৪টার দিকে দম্পতিকে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। তারপর ২২ ধারায় তাদের জবানবন্দি নেন বিচারক হামীমুন তানজিন। বর্তমানে পর্যটক দম্পতি ট্যুরিস্ট পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ট্যুরিস্ট পুলিশের কক্সবাজার জোনের এসপি মোঃ জিল্লুর রহমান।
তিনি বলেন, ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পর্যটক দম্পতিকে আদালতে তোলা হয়েছে। বিচারকের নিকট তারা ঘটনার বর্ণনা দেন। এর আগে তাদেরকে আমাদের মতো করে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি।
এদিকে, গণধর্ষণের ঘটনায় চারজনের নাম উল্লেখসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার রাতে সদর থানায় মামলা রয়েছে। মামলায় হোটেল ম্যানেজার রিয়াজ উদ্দিন ছোটনকে আটক করে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। তিনি ছাড়া আর কোন আসামি গ্রেফতার হয়নি। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ট্যুরিস্ট পুলিশের পরিদর্শক রুহুল আমিন জানান, মামলার নিয়ম অনুযায়ী ভুক্তভোগীকে আদালতে নেয়া হয়। এসময় তিনি জবানবন্দি দেন। এর আগে বেলা ২টার দিকে ওই নারী ও তার স্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।
তবে, ঘটনার পেছনে অনেক রহস্য লুকানো বলে জানাচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দারা। যা সঠিক তদন্তে বেরিয়ে আসবে।
মামলার অন্যতম আসামি আশিকুল ইসলাম আশিক, ইসরাফিল হুদা জয়, মেহেদি হাসান বাবু প্রকাশ গুণ্ডাইয়া বাবু আত্মগোপনে চলে গেছেন। তাদের সিন্ডিকেটে রাসেল উদ্দিন নামের একজনের সম্পৃক্ততার কথা শোনা যাচ্ছে। যিনি স্থানীয় একটি দৈনিকের সহসম্পাদকের পরিচয় দেন।
এদিকে, গৃহবধূ ধর্ষণের ঘটনায় অনেক অসঙ্গতি ও ‘রহস্য’ পাওয়া যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুহাম্মদ মহিউদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, স্ত্রীর বক্তব্যের সঙ্গে স্বামীর বক্তব্যের মিল নেই। পাশাপাশি গত কয়েক মাসের মধ্যে কক্সবাজার বেশ কয়েকবার এসেছেন। সুতরাং তাকে প্রাথমিক দৃষ্টিতে পর্যটক বলা যাচ্ছে না। কারণ এই মহিলা বারংবার কক্সবাজার আসার পেছনে অন্য রহস্য লুকিয়ে আছে।
এছাড়া ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ জানান, তিনি সাহায্যের জন্য পুলিশের জাতীয় সেবা ৯৯৯- নম্বরে ফোন দেন। পুলিশ তাকে জিম্মিদশা থেকে উদ্ধার না করে থানায় সাধারণ ডায়েরি করার পরামর্শ দেয়।
এরপর র্যাবকে ফোন করে জানালে র্যাব ১৫-এর একটি টিম এসে তাকে উদ্ধার করে। তার স্বামী ও সন্তানকে উদ্ধার করা হয় পর্যটন গলফ মাঠ এলাকা থেকে।
ধর্ষণের শিকার নারীকে উদ্ধারে এগিয়ে না আসা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কক্সবাজার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান বলেন, ধর্ষণের সময় কিংবা ওইদিনে তারা ৯৯৯ নম্বরে ফোন আসে নি। আমি থানার অফিসারদের সঙ্গেও কথা বলেছি, তারাও জানিয়েছেন ৯৯৯-এ নারী ও তার স্বামী কেউ ফোন করে নি।
ঘটনার সময় দায়িত্বরত থানার ডিউটি অফিসারও জানিয়েছেন, এমন ঘটনায় ৯৯৯ থেকে থানায় কোনো কল আসেনি। তা ছাড়া ৯৯৯-এ যে কেউ ফোন করলে সেটি রেকর্ড থাকে।
তিনি বলেন, আমি নিজে ভুক্তভোগী নারীর সঙ্গে কথা বলেছি ও তার স্বামীর সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বলেছেন ৯৯৯-এ ফোন করেন নি। তার স্বামী বলেছেন, তিনি একটি সাইনবোর্ডে র্যাবের নম্বর দেখে সেখানে ফোন করেন।
৯৯৯ পুলিশের একটি জাতীয় সেবা উল্লেখ করে তাৎক্ষণিক বিপদগ্রস্তরা সহায়তার জন্য এ নম্বরে যে কেউ কল করলে ফোন পাওয়া মাত্র তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশের একটি টিম সব সময় প্রস্তুত রাখা হয় জানান এসপি মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান।