রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৫৮ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
চকরিয়ায় বিশেষ অভিযানে ইউপি সদস্যসহ গ্রেফতার ৯ মানহানিকর সংবাদ প্রচার করায় জেলা ছাত্র দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফাহিমুর রহমানের বিবৃতি পোকার আক্রমণে বিবর্ণ মহেশখালীর প্যারাবন মহেশখালীর ঘটিভাঙ্গা-সোনাদিয়া সড়কের উপর অবৈধ ভাবে তৈরি করা হচ্ছে ব্যক্তিগত কাঠের রাস্তা শেখ হাসিনার পতনের ঘটনায় প্রশাসনিক নিরবতাকে কাজে লাগিয়ে খাস জমি দখল করে প্রতিযোগিতা মূলকভাবে নির্মাণ হচ্ছে অনুমোদনহীন বহুতল ভবন। যেন দেখার কেউ নাই হোটেল বেলাভূমি ও হোটেল ক্লাসিক সহ কটেজ জোনে অভিযান পরিচালনা করায়, কক্সবাজার জেলা পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা সংস্থা ডিবি পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার সাবেক মুখ্য সচিব নাসের ও সচিব মেজবাহ গ্রেফতার মহেশখালীতে অজ্ঞাত যুবকের লাশ উদ্ধার পর্যটন নগরী কক্সবাজারের হোটেল বেলাভূমি ও হোটেল ক্লাসিক এখন পতিতা, মরণ নেশা ইয়াবা ও মাদকের স্বর্গরাজ্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে রোগী কল্যাণ সমিতি পুনর্গঠন

চকরিয়ায় উদঘাটনের পথে ব্যবসায়ী লতিফউল্লাহ হত্যার আসল রহস্য

এম.জিয়াবুল হক,চকরিয়া ::

সপ্তাহের ব্যবধানে সন্দেহভাজন দুই আসামি গ্রেফতারের মধ্যদিয়ে অবশেষে রহস্যের জট খুলতে যাচ্ছে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার আলোচিত ব্যবসায়ী লতিফ উল্লাহ হত্যা মামলার।

গত ৩ জানুয়ারী রাতে মোবাইলে মালামাল কেনার অজুহাতে বাসা থেকে ঢেকে নিয়ে চকরিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় সড়কে অবস্থিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হানা দেয় দুর্বৃত্তরা। ওইসময় নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে লতিফ উল্লাহকে হত্যা করে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।

পরে স্থানীয় লোকজন লতিফকে উদ্ধার করে চকরিয়া উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত ব্যবসায়ী লতিফ উল্লাহ (৩৬) চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার আধুনগর ইউনিয়নের সুফিপাড়া এলাকার মৃত ইলিয়াছ সওদাগরের ছেলে।

হত্যাকা-ের পর চকরিয়া উপজেলা সদরে ব্যবসায়ীসহ সর্বসাধারণ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার দাবিতে মানববন্ধন বিক্ষোভ কর্মসুচি পালন করে। একইসঙ্গে ঘাতকদের অবিলম্বে গ্রেফতারে পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়ে দেওয়া হয় স্বারকলিপি।

এরই মধ্যে গত ৭ জানুয়ারী চকরিয়া থানা পুলিশ মামলার সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে নয়ন নামে একজনকে গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গেছে তার কাছ থেকে। গ্রেফতার নয়ন চকরিয়া পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডের নামার চিরিঙ্গা এলাকার মুজিবুর রহমানের ছেলে। তাঁর বিরুদ্ধে ছিনতাই, লুটপাট, মারামারিসহ এলাকায় বেসুমার সন্ত্রাসী কর্মকা-ে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।

এরই মধ্যে সর্বশেষ শনিবার ১৫ জানুয়ারী চট্টগ্রামের পটিয়ায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিপ্তরের অভিযানে ইয়াবাসহ গ্রেফতার হয়েছেন লতিফ হত্যা মামলার অন্যতম আসামি মিজানুর রহমান (৪২)। যেখানে র‌্যাব ও পুলিশ হন্য হয়ে খুঁজলেও তাকে তারা ধরতে পারেনি। অথচ ৫০০ পিস ইয়াবা পাচারের সময় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের হাতেই ধরা পড়ে মিজান। মাদক উদ্ধারের ঘটনায় মিজানের রিুদ্ধে মামলা হয়েছে পটিয়া থানায়।

প্রযুক্তির সহযোগিতায় মাদক মামলায় কারাগারে যাওয়ার পর পুলিশ মিজানকে লতিফ হত্যা মামলার আসামী হিসেবে সনাক্ত করতে সক্ষম হয়। গ্রেপ্তারকৃত মিজানুর রহমান ঝিালকাঠি জেলার সদর উপজেলার বালকদিয়া বিনয়কাঠি ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত জলিল আকনের ছেলে।

চকরিয়া থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ব্যবসায়ী লতিফ উল্লাহ হত্যার পর থেকে একটি মোবাইল নাম্বারের সূত্র ধরে র‌্যাব ও পুলিশের একাধিক টিম হত্যাকা-ে জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে বিভিন্ন জায়গায় অভিযানও চালায়।

কিন্তু তার আগে ১৪ জানুয়ারী ব্যবসায়ী লতিফ উল্লাহ হত্যাকা-ের অন্যতম আসামী মিজানুর রহমানকে ৫০০ পিস ইয়াবা সহ গ্রেপ্তার করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের একটি টিম। তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দিয়ে পটিয়া থানায় সোপর্দ করা হয়। পরে পুলিশ নিশ্চিত হয় ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার হওয়া মিজানই ব্যবসায়ী লতিফ হত্যা মামলার অন্যতম আসামী।

চকরিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মুহাম্মদ জুয়েল ইসলাম বলেন, ‘ব্যবসায়ী লতিফ হত্যাকা-ে জড়িত থাকার অভিযোগে এর আগে নয়ন নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গেছে তার কাছ থেকে।

মিজানের মোবাইল নম্বরে লতিফ উল্লাহর বিকাশ এজেন্ট নম্বর থেকে ৩০ হাজার টাকার লেনদেন হয়। এরপর ওই এলাকার বিভিন্ন সিসি টিভির ফুটেজেও মিজানের ব্যবহৃত দুইটি মোবাইল সেটের কল রেকর্ডের সূত্র ধরে হত্যাকাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত আসামী মিজানুর রহমানকে গ্রেপ্তারে পুলিশসহ বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা মাঠে নামে। মোবাইলে পটিয়া থানায় সর্বশেষ লোকেশন নিশ্চিত হয় পুলিশ।’

তিনি আরও বলেন,‘পরে পটিয়া থানা পুলিশ আদালতের মাধ্যমে তাকে চট্টগ্রাম জেলা কারাগারে প্রেরণও করে। কিন্তু পুলিশের মোবাইল ট্র্যাকিংয়ে বারবার পটিয়া থানা এলাকায় তার লোকেশন দেখা যায়। পরে পটিয়া থানা পুলিশের মাধ্যমে আমরা নিশ্চিত হই মোবাইলটি মাদক মামলায় গ্রেপ্তারকৃত মিজানের।এরপর ১৫ জানুয়ারী ব্যবসায়ী লতিফ হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত মিজানকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত হন চকরিয়া থানা পুলিশ।’

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ওসমান গণি বলেন, ‘ব্যবসায়ী লতিফ উল্লাহ হত্যা মামলায় মিজানুর রহমানকে গ্রেপ্তার দেখানো হচ্ছে। তাকে খুব শীঘ্রই চকরিয়া আদালতে এনে রিমা- চাওয়া হবে। রিমা-ের পর ব্যবসায়ী লতিফ হত্যার আসল রহস্য উদঘাটন হবার সম্ভাবনা রয়েছে’।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *