রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৫৩ পূর্বাহ্ন
সরওয়ার আলম শাহীন::
উখিয়া প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের কাজে ধীরগতি, দায়িত্বপ্রাপ্ত এনজিও সংস্থা সুশিলনের সাথে সমন্বয়হীনতা, তৈরিকৃত মাস্টাররোলে মাত্রাতিরিক্ত ভুল, কাজ করা শ্রমিকদের মোবাইল নাম্বারের স্থলে ভুল মোবাইল নাম্বার দেওয়াসহ একাধিক ভুলের কারণে কর্মসৃজন প্রকল্পের অধীনে কাজ করেও বেতন পাচ্ছে না ৫ হাজার ১৫৯ জন শ্রমিক। এমন অভিযোগ করেছেন দীর্ঘদিন কাজ করে টাকা না পেয়ে হতাশায় ভোগা একাধিক শ্রমিকরা।
সূত্রে জানা যায়, ২০২১-২০২২ সালের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে উখিয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস উপজেলার ৫ ইউনিয়নের ৪৫টি গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কারের উদ্যোগ নেয় । প্রকল্প বাস্তবায়ন করার জন্য জালিয়াপালং ইউনিয়নে ৮২৬ জন, পালংখালী ইউনিয়নে ১ হাজার ৬১৬ জন, রত্নাপালং ইউনিয়নে ৪৬৫ জন, হলদিয়াপালং ইউনিয়নে ১হাজার ১৯৩ জন ও রাজাপালং ইউনিয়নে ১ হাজার ৫৯ জন শ্রমিক দৈনিক জনপ্রতি ৪ শ’ টাকা মজুরিতে ৫ ইউনিয়নে মোট ৫ হাজার ১৫৯ শ্রমিক নিয়োগ করা হয়। প্রকল্পের মোট ব্যায় ধরা হয় ১২ কোটি টাকা। শ্রমিকদের ৪০০ টাকা মজুরি মোবাইল ব্যাংকিং নগদের মাধ্যমে শ্রমিকদের নিজ নিজ মোবাইলে প্রেরণের কথা থাকলেও শ্রমিকরা একটি টাকাও পায়নি। অথচ কর্মসৃজন প্রকল্পের জন্য নির্ধারিত ৫৮ দিনের মধ্যে ৩২ দিন কাজ শেষ করেছে শ্রমিকরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শ্রমিক জানান, তারা ৫৮ দিনের মধ্যে ইতিমধ্যে ৩২ দিনের কাজ সম্পন্ন করেছে। কিন্তু এক টাকা পায়নি এ পর্যন্ত। শ্রমিকরা আরও জানায়, এ ব্যাপারে তারা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিসে যোগাযোগ করলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
অনুসন্ধানে জানা যায়, এনজিও সংস্থা সুশীলন ছাড়াও কর্মসুজন প্রকল্পের কাজের তদারকিতে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আল মামুন ও উপসহকারী প্রকৌশলী মেহেদী হাসান কর্মসৃজন প্রকল্পের স্থানসমূহ পরিদর্শনের কথা থাকলেও এ ব্যাপারে তাঁরা ছিলেন উদাসীন। ফলে সরকারের মহৎ এ প্রকল্প প্রতিবারের মতো উখিয়া উপজেলায় ভেস্তে যেতে বসেছে। জনগণের মাঝে সৃষ্টি হচ্ছে বিরূপ ধারনার।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী জানান, এনজিও সংস্থা সুশীলনের অনিয়ম দুর্নীতির কারণে কর্মসৃজন প্রকল্পে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য মজুরি পাচ্ছে না।
তিনি আরো জানান, কর্মসৃজন প্রকল্পের তদারকির দায়িত্ব প্রাপ্ত এনজিও সংস্থা সুশীলন লুটপাটের নতুন তরিকা শেখাচ্ছে সবাইকে। তারা যে তালিকা করেছে সেই তালিকার মোবাইল নাম্বারের সাথে কাজ করা শ্রমিকদের মোবাইল নাম্বারের কোন মিল নেই। তালিকায় যে মোবাইল নাম্বারগুলো দেওয়া হয়েছে তার মধ্যে এমন মোবাইল নাম্বারও রয়েছে যারা বিদেশে অবস্থান করছে, কেউ উত্তরবঙ্গে -কেউবা জেলে। তারা এমনটি কেন করেছে তা জানিনা, তবে নয়ছয় এবং দুর্নীতি এবং অনিয়মের মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার জন্য করেছে বলে আমার ধারণা।
এ ব্যাপারে উখিয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আল মামুনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ভাই আপনাকে আমি সমস্ত তথ্য জানাচ্ছি বলে মোবাইল সংযোগ কেটে দেন। পরে আবার কল করে তথ্য লাগবেনা, আপনার বক্তব্য জানার জন্য কল করেছি জানালে তিনি বক্তব্য একটু পরে জানাচ্ছি বলে আবারো মোবাইল সংযোগ কেটে দেন।