বুধবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ১২:৪২ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :

বাঁকখালীর প্যারাবন ধ্বংসের ঘটনায় ৪২ জনের বিরুদ্ধে আরও এক মামলা

বিশেষ প্রতিবেদক:
কক্সবাজার শহরের কস্তুরাঘাটস্থ বাঁকখালী নদী দখল ও প্যারাবন কেটে স্থাপনা নির্মাণকারী ২২ জনের নাম উল্লেখ করে ৪২ জনের বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা দায়ের করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। গত মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারী) রাতে পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সাইফুল ইসলাম বাদি হয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন। এর আগে গত ২ ডিসেম্বর ৭ জনের নাম উল্লেখ করে আরও একটি মামলা দায়ের করেছিল পরিবেশ অধিদপ্তর।

বাঁকখালী নদী দখল ও প্যারাবন কর্তন করায় এজাহারে ২২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তারা হলেন যথাক্রমে ইউছুফ, আশিক, কপিল উদ্দিন, মিজানুর রহমান, জসিম উদ্দিন, কামাল মাঝি, রূকন উদ্দিন, নুরুল আবছার, নুরুল হুদা, নুরুল আমিন, মোস্তফা কামাল, জাহেদুল ইসলাম শিবলু, আমীর আলী, ওমর ফারুক, শরিফুল আলম চৌধুরী, মাহমুদুল করিম, মো. সোহেল, জসিম উদ্দিন, জিয়া মো. কলিমুল্লাহ, খোরশেদ আলম চৌধুরী, ফিরোজ আহমেদ ও দেলোয়ার হোসেন। এছাড়া অজ্ঞাত আসামী করা হয়েছে আরও ১৫ থেকে ২০ জন।
অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট প্যারাবন কর্তন এবং জলাশয় ভরাট করে দখল ও স্থাপনা নির্মাণ করে বাংলাদেশ পরিবেশ আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

এদিকে পরিবেশ অধিদপ্তরের পর পর দুটি মামলা দায়েরের পরও থেমে নেই বাঁকখালী নদী দখল করে ভরাট, স্থাপনা নির্মাণ, প্যারাবন ধ্বংস, জোয়ার-ভাটায় বাঁধ দেয়া ও জলাশয় ভরাট কার্যক্রম। আজ বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারী) বাঁকখালী নদীর কস্তুরাঘাট অংশে গিয়ে নদী দখল, ভরাট ও স্থাপনা নির্মাণের ভয়াবহ চিত্র দেখা যায়। গত চার মাস ধরে নদী দখল ও ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণ করা হলেও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ না করার কারণে দখলদাররা বেপরোয়া গতিতে অপরাধ অব্যাহত রেখেছে বলে মনে করেন পরিবেশ বিষয়ক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘এনভায়রনমেন্ট পিপল’ এর প্রধান নির্বাহী রাশেদুল মজিদ। তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘নদী দখল এবং প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকায় জোয়ার-ভাটায় বাঁধ দিয়ে জলাশয় ভরাট ও প্যারাবন ধ্বংসের কর্মকান্ড গত চার মাস ধরে অব্যাহত থাকলেও জেলা প্রশাসন ও ভূমি প্রশাসন আজ পর্যন্ত কোন উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেনি। এতে দখলদাররা অপরাধ কর্মকান্ডে উৎসাহিত হচ্ছে।’ বাঁকখালী নদী ও প্যারাবন রক্ষায় দ্রুত উচ্ছেদের দাবি জানান তিনি।

এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের উপপরিচালক শেখ মোঃ নাজমুল হুদা বলেন, ‘গত চার মাস ধরে বাঁকখালীতে নদী ও জলাশয় ভরাট, স্থাপনা নির্মাণ এবং প্যারাবন নিধন অব্যাহত রয়েছে। আমরা দুটি মামলা দায়ের করেছি। কিন্তু উচ্ছেদের জন্য ম্যাজিষ্ট্রেট দরকার। আমরা জেলা প্রশাসনের কাছে ম্যাজিষ্ট্রেট চেয়েছি। ম্যাজিষ্ট্রেট পাওয়া গেলেই উচ্ছেদ করা হবে।’

উল্লেখ্য, কক্সবাজার শহরের কস্তুরাঘাটের বাঁকখালী নদী ও নদীর প্যারাবন রক্ষায় ১৩ দফা দাবি বাস্তবায়নে মানববন্ধন, স্মারকলিপি প্রদানসহ বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করে আসছে পরিবেশ বিষয়ক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘এনভায়রনমেন্ট পিপল’।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *