বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০১:৪৭ অপরাহ্ন
আপন কন্ঠ রিপোর্ট
কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুশকুল ইউনিয়নের কাউয়ার পাড়া এলাকার বহু মামলার আলোচিত শীর্ষ সন্ত্রাসী ও খুরুশকুল-মাঝিরঘাট এলাকা কেন্দ্রীক দুর্ধর্ষ মামুন বাহিনীর প্রধান ‘ডজন’ মামলার আসামী মোঃ মামুন(৩২) প্রঃ মামুইন্না আবারও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। পুলিশ একাধিক বার অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠালেও জামিনে ফিরে এসে এলাকায় আবারো বেপরোয়া হয়ে উঠে মামুন। সে এলাকার মৃত নুরুল আলম বহদ্ধারের ছেলে। প্রশাসনের যথাযথ নজরদারী না থাকায় দিন দিন আরো বেপরোয়া হয়ে সন্ত্রাসী মামুন প্রকাশ্যে সন্ত্রাসীমুলক কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা ও এলাকার সুশীল সমাজ।
অনুসন্ধানে জানা যায়,মামুনের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছ থেকে হ্যান্ডকাপসহ আসামী ছিনতাই, হত্যা,অস্ত্র,চাঁদাবাজি,মাদক,অপহরণ, ধর্ষণ মামলা সহ প্রায় দুই ডজন মামলা রয়েছে।বর্তমানে মামলা গুলো আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। দায়েরকৃত মামলাগুলো পর্যালোচনা দেখা গেছে, প্রায় মামলার কাগজে ১নং আসামী হিসেবে দেখা যায় মামুন গ্রুপের প্রধান প্রঃ মামুইন্নাকে।
অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, মামুন বাহিনী নামে তার একটা নিজস্ব সন্ত্রাসী বাহিনী থাকলেও কক্সবাজার শহর ও পর্যটন এলাকায় তার নিয়ন্ত্রনে রয়েছে একাধিক কিশোর গ্যাং। তারা পর্যটন এলাকাসহ শহরের বিভিন্ন এলাকায় ছিনতাই, ধর্ষণ, চাঁদাবাজিসহ নানা ধরনের অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে অনেকটা প্রকাশ্যে সন্ত্রাসী মামুন ও তার বাহিনীরা বেপরোয়াভাবে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালালেও তার রক্ত চক্ষুর ভয়ে মুখ খোলার সাহস পায়না কেউ।
সন্ত্রাসী মামুনের উল্লেখযোগ্য মামলাসমুহ পর্যালোচনা করে জানা যায়, বিগত (১৬মার্চ) ২০১৯ইং সালে অনুমান সন্ধ্যা ৬টার সময় সাবেক কক্সবাজার সদর মডেল থানার এস,আই আরিফ উল্লাহ গ্রেফতারী পরোয়ানাভূক্ত পালতক আসামী সন্ত্রাসী মামুনের আপন ভাই পারভেজ(২৮) ও শহিদুল্লাহ কে খুরুশকুল কাউয়ার পাড়া এলাকাস্থ বঙ্গবন্ধু বাজার নুরুল আলম বহদ্দারের মার্কেটের সামনে থেকে গ্রেফাতার করে থানায় নিয়ে যাওয়ার সময়, মামুন ও মামুন গ্রুপের সক্রিয় সন্ত্রাসী বাহিনীসহ সাবাই মিলে সাবেক কক্সবাজার সদর মডেল থানার এএসআই মোঃ আশিক হায়দার, এএসআই তপন কুমার দাশ, এএসআই হারুন অর রশিদ, বিঃআন/৪১ মোঃ আকমল হোসেনদেরকে এলোপাতাড়ি মারধর কওে পুলিশের ১টি লাল রঙ্গের এপাচি আরটিআর ১৫০ সিসি মোটর সাইকেল ও হ্যান্ডকাপ সহ গ্রেফতার হওয়া আসামীদের ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
পরে কক্সবাজার সদর মডেল থানার সাবেক এসআই মোঃ আারিফ উল্লাহ বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নাম্বার জি,আর ২৮০।উক্ত মামলায় মামুন গ্রুপের প্রধান মামুন গ্রেফতার হয়ে দীর্ঘ দিন হাজতবাস করলেও জেল হাজত থেকে জামিনে বের হয়ে আবারো পুনরায় সন্ত্রাসী কার্যকলাপে নিয়োজিত থাকে।
সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে বেপরোয়া হওয়ায় (১জুন) ২০২১ইং সালে সাবেক কক্সবাজার জেলা ডিবি পুলিশের অফিসার ইনচার্জ শেখ মোহাম্মদ আলী নাদিমের নেতৃত্বে বিশেষ অভিযান চালিয়ে মামুন গ্রুপের প্রধান প্রঃ মামুইন্না ও তার আপন ভাই কায়সার কে গ্রেফতার করা হয়।
এদিকে শুধু মামুনের পরিবারে মামুন একাই সন্ত্রাসী নয় তাদের পরিবার সকলের বিরুদ্ধে রয়েছে ডজন ডজন মামলা।
খোঁজ নিয়ে আরো জানা যায়, র্যাবের অভিযানে অস্ত্রসহ আটক হয় সন্ত্রাসী মামুনের আপন ভাই পারভেজ। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে খুরুশকুল ডেইল পাড়া এলাকার মনিরুল হকের পুত্রকে গলা টিপিয়ে পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করেন সন্ত্রাসী মামুনের ভাই অপর ভাই শাহেদ। সাহেদ উক্ত হত্যা মামলায় বর্তমানে জেল হাজতে রয়েছে। শুধু হত্যাকান্ড নয়। কক্সবাজার থেকে মাদক পাচারকালে চট্টগ্রামে ইয়াবাসহ গ্রেফতার হয় সন্ত্রাসী মামুনের আরও এক ভাই রাশেদ।
এদিকে সন্ত্রাসী মামুনের পরিবারের সকল সদস্যদের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মামুনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা, অপহরন, ধর্ষণসহ ১৪টি মামলা রয়েছে, তার ভাই কায়সারের বিরুদ্ধে ১৫টি মামলা, শাহেদ বিরুদ্ধে মাদক মামলাসহ ১৩টি মামলা,পারভেজের বিরুদ্ধে ২১টি মামলা, শওকত আলমের বিরুদ্ধে ৫টি মামলা ও রাশেদর বিরুদ্ধে ৭টি মামলা বর্তমানে আদলতে বিচারাধীন রয়েছে।
এদিকে গত মঙ্গলবারও (০১ মার্চ) কক্সবাজার সদর উপজেলা রাস্তার পাড়া এ
এলাকায় চায়না বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কন্ট্রাক্টর সরওয়ার কাছে ২০লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে। এসময় ২০লক্ষ টাকা চাঁদা না দেওয়ায় কন্ট্রাক্টর সরওয়ার ও চায়না বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কর্মরত লোকদের উপর হামলা চালিয়ে ৪জনকে গুরুতর আহত করা হয়, পরে তাদেরকে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান ভুক্তভোগীরা।
জেলা পুলিশের একজন পদস্থ কর্মকর্তা জানান, পর্যটন জেলা কক্সবাজারের পুরো এলাকার অপরাধীদের সনাক্তকরনের কাজ চলছে। কোন অপরাধীর স্থান কক্সবাজারে হবেনা। সন্ত্রাসী মামুনসহ তার পরিবারের অপরাপর সন্ত্রাসী সদস্যদের ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। অচিরেই এই সন্ত্রাসী পরিবারের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে বলে জানান তিনি।