নিজস্ব প্রতিবেদক :
কক্সবাজারের চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলার বনের গাছগুলো গিলে খাচ্ছে অবৈধভাবে গড়ে উঠা করাতকলগুলো। এতে সহযোগিতা করছেন বন বিভাগের কিছু অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারীরা। এভাবে চলতে থাকলে উজাড় হয়ে যাবে সংরক্ষিত বন বাগান। বন বিভাগের অনুমোদন ছাড়াই চলছে এগুলো। এসব করাতকলে উজাড় হচ্ছে বনের গাছ। অন্যদিকে সরকার হারাচ্ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, রেঞ্জ অফিস ও বিট অফিসের নাকের ডগায় মালিকরা করাতকল স্থাপন করে দিনরাত চোরাই কাঠ চেরাই করছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, সংশ্লিষ্ঠ কর্মকর্তা, বিট কর্মকর্তা ও ফরেস্ট গার্ডদের সহযোগিতায় দিনের পর দিন এসব করাতকল চালু রয়েছে। এসব করাতকল ও অতিরিক্ত গাছ চুরির কারণে প্রতিবছর সরকারের কোটি কোটি টাকার বাগান ধংস হয়ে যাচ্ছে। করাতকলের বিরুদ্ধে অভিযান না থাকায় অনুমোদনহীন এসব অবৈধ করাতকলের মাধ্যমে বেপরোয়াভাবে চলছে বৃক্ষ নিধন।
বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বন বিভাগের আইনে বনাঞ্চলের ১০ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে করাতকল স্থাপন করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ হলেও অবাধে চলছে এগুলো। সংরক্ষিত সামাজিক বনায়নের ভিতর, বনঘেঁষে, এমনকি বন কর্মকর্তাদের কার্যালয়ের কাছেই স্থাপন করা হয়েছে অবৈধ করাতকল। সেখানে গাছ চোর ও কাঠ ব্যবসায়ীরা অবৈধভাবে চেরাচ্ছে বনের গাছ। ফলে উজাড় হচ্ছে বন। এতে সংকটে পড়ছে বন্যপ্রাণী।
এব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের সাথে যোগাযোগ করা হলেও কেউ মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
জানাগেছে, চকরিয়া ও পেকুয়ায় শতাধিক অবৈধভাবে গড়ে উঠা করাতকল গুলোতে কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগ, লামা বনবিভাগ, চট্টগ্রাম দক্ষিন বনবিভাগের আওতাধীন বিট ও রেঞ্জের অধীনে সংরক্ষিত বন বাগান ও সমাজিক বনায়ন থেকে চোরাপথে রাতের আঁধারে চুপিসারে গাছ কেটে বন বিভাগের অসাধু কর্তাদের সাথে যোগসাজশে বনের গাছ কর্তন করে করাতকলে চিরাই করে দেশের বিভিন্ন এলাকায় নৌ-যোগ ও সড়ক পথে পাচার করে আসছে।
এ অবৈধ করাতকল গুলোর মধ্যে রয়েছে, চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী বাজার, ডুলহাজারা বাজার, চকরিয়া পৌরসভার মৌলভীরকুম বাজার, বাঁশঘাট, শিকলঘাট,কাকারা,সুরাজপুর-মানিকপ, বরইতলী একতাবাজার, পঁহরচাদা, বদরখালী বাজার, কোনাখালী, বিশেষ করে পেকুয়া বাজার।
অবৈধভাবে গড়ে উঠা করাতকল গুলোতে সন্ত্রাসী কায়দায় উল্লেখিত সব বন বিভাগ থেকে চোরাই পথে সরকারী সংরক্ষিত রিজার্ভ বনবিভাগের মুল্যবান সেগুন, গর্জন, মেহেগুনি, সাপালিশ, কড়ই, জামসহ বিভিন্ন প্রজাতির বন-বাগানের ছোট চারা গাছ থেকে শুরু করে শতবছরের মাদার ট্রি গাছ কর্তন করে স’ মিলে চিরাই করে ফিশিংবোট নির্মাণ করে।
এসব গাছ কুতুবদিয়া বদরখালী চ্যানেল দিয়ে সমুদ্র পথে পাচার করে। এভাবে চলতে থাকলে অচিরেই সরকারী সংরক্ষিত রির্জাভ বন ভূমির বাগান উজাড় হয়ে যাবে। এতে জরুরীভাবে সংশ্লিষ্ঠ প্রশাসনের প্রতি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকার সচেতন মহল।
Related