রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ১২:৩৮ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার:
কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের তৃণমূল প্রতিনিধি সভা মঞ্চ থেকে ঘোষণা দিয়ে নামিয়ে দেয়া হয়েছে গেল নির্বাচনে বিজয়ী বিদ্রোহীদের।
সভার প্রধান বক্তা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক (চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত) হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি এমন ঘোষণা দেন।
বিদ্রোহীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, তিরস্কার করার আগে মঞ্চ থেকে নেমে যাবেন, এটি আমি অনুরোধ করি। কারণ, এতো মানুষের সামনে কাউকে নামিয়ে দিলে মানসম্মানে আঘাত হানবে। কাউকে অপমান করার ইচ্ছা বা অধিকার আমার নাই।
আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি বলেন, আমি কাউকে অপমান করতে চাই না। আশা করি, আমি বলার পরে যারা মঞ্চে আছেন তারা নেমে যাবেন।
ঘোষণাকালে মঞ্চে বেশ কয়েকজন চেয়ারম্যান উপস্থিত ছিলেন, যারা গত নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে দল থেকে বহিষ্কৃত হন।
বুধবার (৯ মার্চ) পর্যটন শহরের মোটেল উপলের জারা কনভেনশন হলেতৃণমূল প্রতিনিধি সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব উল আলম হানিফ এমপি।
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে স্বাধীনতা অর্জন হয়েছে। আর দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি এসেছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। লড়াই সংগ্রামের মধ্য দিয়ে শত প্রতিকূলতা পেরিয়ে তিনি দেশকে অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। আওয়ামী লীগের হাত ধরেই দেশের সব অর্জন।’
জিয়াউর রহমান পাকিস্তানের এজেন্ট ছিলেন দাবি করে মাহাবুব উল আলম হানিফ আরো বলেন, জিয়াউর রহমান নামে মুক্তিযোদ্ধা, মনে ছিলেন পাকিস্তানি। তিনি কোথাও যুদ্ধ করেছেন বলে প্রমাণ নেই। সিলেট অঞ্চলে যুদ্ধ করার বিএনপি যে ইতিহাস বলে, তার প্রমাণ নেই। বরং বিভিন্ন দালিলিক তথ্যে প্রমাণ মিলেছে জিয়াউর রহমান ছিলেন পাকিস্তানের এজেন্ট।
তিনি আরো বলেন, জিয়াউর রহমান ছিলেন রাজাকারের দোসর। সে কারণে ক্ষমতায় গিয়ে রাজাকার ও স্বাধীনতা বিরোধীদের পুর্বাসন করেছিলেন। শীর্ষ রাজাকারদের বানিয়েছিলেন এমপি-মন্ত্রী।
জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে তৃণমূল প্রতিনিধি সভায় হানিফ বলেন, বাংলাদেশের অস্তিত্বের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সম্পর্ক। এ সম্পর্ক চিরকালের। ইচ্ছা করলেই কেউ তা মুছে ফেলতে পারবে না। আওয়ামী লীগকে যারা নিশ্চিহ্ন করার ষড়যন্ত্র করেছিল বরং তারাই নিশ্চিহ্ন হয়েছে। জনগণ তাদেরকেই ইতিহাসের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, কারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ভূলুণ্ঠিত করতে চায়, কারা স্বাধীনতাবিরোধীদের গাড়িতে পতাকা তুলে দিয়েছে, এখনও কারা স্বাধীনতা বিরোধীদের পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে যাচ্ছে তা দেশবাসী জানে।
হানিফ আরও বলেন, আজকের বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ। আমাদেরকে একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে টিকে থাকতে হবে। আর এ লক্ষ্যে আমাদের বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আত্ম-মর্যাদার সঙ্গে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। পাশাপাশি, একটি বিজয়ী জাতি হিসেবে বিশ্বের দরবারে আমাদের মাথা উঁচু করে চলতে হবে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে পৃথিবীর সেরা মিথ্যাবাদি উল্লেখ করেন হানিফ।
তিনি বলেন, মির্জা ফখরুল পৃথিবীর সকল মিথ্যাচারকে ছাড়িয়ে গিয়ে ইতিহাসে রেকর্ড গড়েছেন।
যার ভেতরে কোনো মানবতা নেই তিনি কিভাবে মানবতার মা হন? বিএনপির আমলে ২৬ হাজার নেতাকর্মীকে হত্যাসহ নানাভাবে নির্যাতন চালিয়েছেন। তিনি মানবতার মা হতে পারে না। তিনি খুনির মা হতে পারেন। অথচ মির্জা ফখরুল ইসলাম তাকে ‘মানবতার মা’ উপাধি দিয়েছেন।
সভায় সাংগঠনিক রিপোর্ট পেশ করেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান।
এর আগে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন এবং বেলুন উড়িয়ে তৃণমূল পচরতিনিধি সভার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।
সাংগঠনিক কার্যক্রমে আরও গতিশীলতা আনতে এবং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে ‘তৃণমূল প্রতিনিধি সভা’র আয়োজন করেছে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগ।
অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস,এম কামাল হোসেন, অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক ওয়াসিকা আয়েশা খান এমপি, উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ চৌধুরী, সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি, জাফর আলম এমপি, আশেক উল্লাহ রফিক এমপি, শাহিন আক্তার এমপি, কানিজ ফাতেমা আহমেদ মোস্তাক এমপি, সাবেক এমপি আবদুর রহমান বদিসহসহ কেন্দ্র ও জেলা নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।