শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ১১:৫১ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার:
কক্সবাজার শহরের আদালত পাড়া থেকে তুলে নিয়ে গণধর্ষণের ঘটনায় মামলা রেকর্ড হয়েছে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ধারায় এ মামলা রেকর্ড হয় বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মনিরুল গিয়াস।
থানা সূত্রে জানা যায়, ধর্ষিতা এক নারীর অভিযোগের ভিত্তিতে এ মামলা রেকর্ড হয়। মামলা নং ৫৬/১৭৭। মামলাটি তদন্তের জন্য ইনস্পেক্টর নাছির উদ্দিন মজুমদারকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
আসামীরা হলেন, ইসলামপুর ফকিরা বাজারের রমজান আলী মেম্বারের ছেলে ফিরোজ (৪৮), পোকখালী গোমাতলী এলাকার লেদা মিয়ার ছেলে রাশেল উদ্দিন (৩৭), নাপিতখালী গ্রামের মৃত ওসমান গনির ছেলে মোঃ শরিফ (৪৬) এবং লেদা মিয়ার ছেলে নুরুল ইসলাম (৪৮)।
মামলার বাদী বলেন, এক সময়ের মোস্তাক ডাকাত এখন ফিরোজ নাম ধারণ করেছে। তার বিরুদ্ধে দুই ডজনেরও বেশি মামলা রয়েছে। এখন থানায় দালালি করেন তিনি। তার সাথে রয়েছে এক সময়ের বিএনপি নেতা বর্তমানে আওয়ামী লীগ নেতা শরিফ নিজের অপরাধ সম্রাজ্য বৃদ্ধি করেছে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে। প্রবাসি হত্যা, ইদ্রিসের হাত কাটা, বনের জমি দখল, পরিবেশ ধ্বংসসহ অসংখ্য অপরাধের অভিযোগ রয়েছে শরিফের বিরুদ্ধে। এখন তাদের সাথে যুক্ত হয়েছে ইয়াবা ব্যবসায়ী রাশেল। আমি চাই অপরাধীদের কঠিন শাস্তি। মামলা রেকর্ড হয়েছে জেনে ভাল লাগছে কিন্তু অপরাধীদের যেন গ্রেফতার করা হয়। সরকারি দলের কিছু অসৎ নেতাদের ছত্রছায়ায় তারা বারবার অপরাধ করে পার পেয়ে যাচ্ছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, আসামী ফিরোজ আহমদ ও মো. শরীফ বিভিন্ন সময় ধর্ষিতাকে উত্ত্যক্ত আসছিলো। তাদের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ধর্ষণ ও হত্যার হুমকি দিতো প্রতিনিয়ত। সর্বশেষ গত সোমবার (১৪ মার্চ) বেলা ২ টার দিকে কক্সবাজার আদলত পাড়ার মসজিদ মার্কেটস্থ অ্যাডভোকেট একরামুল হুদার চেম্বার থেকে বের হলে আসামীরা আমাকে ঘিরে ফেলে। এক পর্যায়ে অভিযুক্ত ফিরোজ ও শরীফ টানাহেঁছড়া করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। বাঁধা দিলে অজ্ঞাত পরিচয়ে আরো কয়েকজন এসে আমার হাত-পা ও মুখ চেপে ধরে জোর করে একটি নোহা গাড়ীতে তুলে ফেলে।
এসময় পথচারীরা এগিয়ে এলে গাড়ি নিয়ে কক্সবাজার কক্সবাজার শহরের বাহারছড়া ল্যাবরেটরি স্কুল সংলগ্ন ফিরোজের আত্মীয় জনৈক ফজল কাদেরের সেমিপাকা টিনশেড বাসায় নিয়ে একটি রুমে আটকিয়ে রাখে। সেখানে ফিরোজ ও শরীফ ধারালো অস্ত্রের মুখে ভয় দেখিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এ সময় তার গলায় থাকা ১২ আনা ওজনের স্বর্ণের চেইন এবং সাথে থাকা টাকা নিয়ে ছিনিয়ে নেয়। তাদের ধর্ষণের পর অভিযুক্ত নুরুল ইসলামও ধর্ষণে যুক্ত হন। এক পর্যায়ে ক্লান্ত ও হতভম্ব হয়ে ফ্লোরে ঢলো পড়েন ধর্ষিতা। এমন সময় ঘরে প্রবেশ করে রাসেল উদ্দিন। নিজেকে পুলিশ অফিসার পরিচয় দিয়ে বিষয়টি কাউকে জানালে এবং বেশী বাড়াবাড়ি করলে মানবপাচার মামলায় চালান করে দিবে বলে হুমকি দেয়। একপর্যায়ে রাসেল উদ্দিনও তাকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করে। দলবদ্ধ ধর্ষণের ফলে তার গোপনাঙ্গ দিয়ে রক্তপাত শুরু হলে তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন। এরপর রাসেল ও শরীফ তাকে টানা হেছড়া করে গেইটের বাইরে এনে ধাক্কা দিয়ে গেইট বন্ধ করে দেয়। ধর্ষিতাকে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখে এক ব্যক্তি তাৎক্ষণিক জাতীয় জরুরী সেবা নাম্বার ‘৯৯৯’ এ কল দিলে আসামীরা পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে।