রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ১২:২৯ পূর্বাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক:
রাশিয়ার ভেতরের লোকজনই প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে বিষ প্রয়োগ বা অন্য কোনোভাবে হত্যার ষড়যন্ত্র করছে বলে দাবি করেছে ইউক্রেনের একটি গোয়েন্দা সংস্থা। শুধু তাই নয়, পুতিনকে সরিয়ে কাকে বসানো হবে, সে বিষয়টিও ভেবে রেখেছে তারা।
ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড ডেইলি মিররের এক প্রতিবেদনে এমনটাই দাবি করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান ডিরেক্টরেটের এক সংক্ষিপ্ত বিবরণে তুলে ধরা হয় যে, রাশিয়ার সরকারি সংস্থা ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিসের (এফএসবি) পরিচালক ওলেকসান্দ্র বোর্তনিকভকে ভ্লাদিমির পুতিনের স্থলাভিষিক্ত করার জন্য পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান অধিদপ্তরের মতে, ‘রুশ অভিজাতদের’ একটি ‘প্রভাবশালী’ দল পুতিনকে উৎখাত করতে পরিকল্পনা করেছে। যত দ্রুত সম্ভব পুতিনকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়া এবং পশ্চিমাদের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক ফিরিয়ে আনাই এই দলের লক্ষ্য।
ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন শুরুর পর পশ্চিমারা রাশিয়ার ওপর যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, সেটা নিয়ে এই দলটি হতাশা প্রকাশ করেছে। তারা এই অবস্থা থেকে বের হতে চাইছে বলে উল্লেখ করেছে গোয়েন্দা বিভাগ।
ইউক্রেনের গোয়েন্দা সংস্থার দাবি, এফএসবি’র পরিচালক ওলেকসান্দ্র বোর্তনিকভকে ইতোমধ্যেই পুতিনের উত্তরসূরি হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে।
গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান ডিরেক্টরেট জানায়, ‘এটা জানা গেছে যে, বোর্তনিকভ ও রাশিয়ান অভিজাতদের আরও কিছু প্রভাবশালী প্রতিনিধি পুতিনকে ক্ষমতা থেকে সরানোর জন্য বিভিন্ন বিকল্প বিবেচনা করছেন’।
বিষক্রিয়া, আকস্মিক রোগ বা অন্য কোনো পন্থায় পুতিনকে সরাতে চাইছে ওই দলটি।
তবে পুতিনের স্থলাভিষিক্ত হওয়ার জন্য বোর্তনিকভকে সামনে নিয়ে আসার বিষয়টি একেবারেই বিস্ময়কর। কেননা তারা দুজনেই লেনিনগ্রাদে কেজিবিতে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ইউক্রেন যুদ্ধে পুতিনের পক্ষেই বোর্তনিকভ কাজ করছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউক্রেনে ২৫ দিনের যুদ্ধে প্রায় ১৫ হাজার সেনা হারিয়েছে রাশিয়া। এর জন্য পুতিন আটজন জেনারেলকে তিরস্কার করেছেন এবং বরখাস্ত করেছেন।
এমন পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের গোয়েন্দারা বলছেন, অভিজাত ষড়যন্ত্রকারীরা ৭০ বছর বয়সী বোর্তনিকভকে বেছে নিয়েছেন। কারণ তারা বিশ্বাস করেন যে, তিনি পশ্চিমের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের নেতৃত্ব দিতে পারবেন।
প্রসঙ্গত, ইউক্রেনে রুশ সেনারা সামরিক অভিযান শুরু করে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি। সেই আগ্রাসন ঠেকাতে ২৬ দিন ধরে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে ইউক্রেনের সেনারা। এই যুদ্ধে বেসামরিক মানুষরাও অংশ নিয়েছেন। তবে রুশ হামলায় কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে পুরো ইউক্রেন। দেশটির অনেক অঞ্চল এখন রাশিয়ার দখলে। এই যুদ্ধ ঠেকাতে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে বেশ কয়েকবার ‘শান্তি আলোচনা’ হয়েছে। কিন্তু সেই আলোচনা ইউক্রেনে শান্তি ফেরাতে পারেনি। এমন পরিস্থিতিতে চলমান যুদ্ধ নিয়ে সরাসরি আলোচনায় বসার জন্য শনিবার (১৯ মার্চ) রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতি আহ্বান জানান ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তবে তার সেই আহ্বানে সাড়া দেননি পুতিন।
ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে যখন রুশ হামলা চলছে, তখনই ডেইলি মেইলের প্রতিবেদনে বলা হয়, ভ্লাদিমির পুতিন শান্তি আলোচনার জন্য ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে সশরীরে সাক্ষাৎ করতে ‘অবশেষে’ সম্মত হয়েছেন।
তবে এই শান্তি আলোচনা ঠিক কবে ও কোথায় বসতে পারে, সে বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু জানা যায়নি।