রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ১২:৪২ পূর্বাহ্ন
প্রেস বিজ্ঞপ্তি
সৌদি আরবে ভিসা দেয়ার নামে নিরীহ লোকজনের কাছ থেকে বিপুল টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন প্রতারক শাহাব উদ্দিন। এলাকা ছেড়ে অন্যত্র বসবাস করার কারণে থানায় এবং ইউনিয়ন পরিষদের লিখিত অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার পাচ্ছে না ভুক্তভোগীরা।
প্রতারক শাহাব উদ্দিন রামু উপজেলার জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের পূর্বপাড়া এলাকার শের আলীর ছেলে। তবে কয়েকবছর ধরে তিনি কক্সবাজার শহরের ঝিলংজা ইউনিয়নের নুনিয়াছড়া এলাকায় বসবাস করে আসছেন।
শাহাব উদ্দিনের কাছে প্রতারনার শিকার হয়েছেন- রামুর দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের উমখালী মোক্তার বাপেরপাড়া এলাকার মৃত মো. হোছনের ছেলে সৌদি প্রবাসী আবদুর রহিম। প্রতিকার চেয়ে তিনি সম্প্রতি জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়ন পরিষদে লিখিত অভিযোগ দেন। কিন্তু বিবাদী শাহাব উদ্দিন সেখানে হাজির না হওয়ায় পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল শামসুদ্দিন আহমেদ প্রিন্স আবদুর রহিমের কাছ থেকে নেয়া বাংলাদেশী মুদ্রায় ৬ লাখ ৯০ হাজার টাকা ফেরত দেয়ার জন্য বিবাদীকে নির্দেশ দিয়ে শালিসি রোয়েদাদ প্রদান করেন। পরে পাওয়া টাকা ফেরত চেয়ে আবদুর রহিম গত ১৪ মার্চ রামু থানায় লিখিত অভিযোগ দেন।
থানায় দায়েরকৃত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে বাদি আবদুর রহিম ও বিবাদী শাহাব উদ্দিন উভয়ে দীর্ঘদিন সৌদি আরবে একসাথে থাকার সুবাদে সুসম্পর্ক গড়ে উঠে। একসময় আবদুর রহিমের নতুন ভিসার প্রয়োজন হলে শাহাব উদ্দিন ভিসা দেয়ার আশ^াস দিয়ে একাধিক স্বাক্ষীর উপস্থিতিতে রহিমের কাছ থেকে দু’দফায় ৩০ হাজার রিয়াল দিরহাম গ্রহণ করে। যা বাংলাদেশী মুদ্রায় ৬ লাখ ৯০ হাজার টাকা।
পরবর্তীতে শাহাব উদ্দিন আজ দেবে, কাল দেবে মর্মে ভিসা প্রদানে গড়িমসি শুরু করে। এতে আবদুর রহিম অর্থনৈতিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। এক পর্যায়ে শাহাব উদ্দিন ভিসা না দিয়ে গোপনে বাংলাদেশে চলে আসেন। পরে নিরুপায় হয়ে আবদুর রহিম অনেক কস্টে টাকা জোগাড় করে ভিসা ক্রয় করেন।
পরে আবদুর রহিম দেশে এসে শাহাব উদ্দিনের কাছে দেয়া ভিসার টাকা ফেরত চাইলে আজ দেবে, কাল দেবে বলে সময় ক্ষেপন করতে থাকে। এতে নিরুপায় হয়ে আবদুর রহিম সম্প্রতি জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়ন পরিষদে লিখিত অভিযোগ দেন। বিবাদী শাহাব উদ্দিন সেখানে হাজির না হওয়ায় পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল শামসুদ্দিন আহমেদ প্রিন্স গত ২৭ ফেব্রæয়ারি আবদুর রহিমের কাছ থেকে নেয়া বাংলাদেশী মুদ্রায় ৬ লাখ ৯০ হাজার টাকা ফেরত দেয়ার জন্য বিবাদী শাহাব উদ্দিনকে নির্দেশ দিয়ে শালিসি রোয়েদাদ প্রদান করেন।
এরই প্রেক্ষিতে পাওনা টাকা ফেরত চেয়ে আবদুর রহিম গত ১৪ মার্চ রামু থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। তদন্তকারি কর্মকর্তা রামু থানার এএসআই জাহাঙ্গীর বিষয়টি তদন্তের জন্য শাহাব উদ্দিন বারবার তাগাদা দেয়া সত্বেও তিনি থানায় যেতে গড়িমসি করে আসছেন।
আবদুর রহিমের স্ত্রী জোসনা আকতার জানিয়েছেন- গত ১২ মার্চ স্বামী তার পাওনা টাকা ফেরত চাইলে শাহাব উদ্দিন তাদের কাছ থেকে টাকা নেয়ার বিষয় অস্বীকার করে এবং কখনো টাকা দাবি করলে উল্টো তাদের মারধর, হত্যা এবং মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করার হুমকী দেয়। তিনি প্রবাসে স্বামীর কষ্টার্জিত টাকা ফেরত পেতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধি সহ সংশ্লিষ্ট সকলের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
প্রতারনার শিকার আবদুর রহিম জানিয়েছেন- শাহাব উদ্দিনের বিরুদ্ধে মানবপাচার সহ ভিসা দেয়ার নামে এ ধরনের প্রতারনার অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। এমনকি তিনি প্রতারনার অভিযোগে সৌদি সরকারের তালিকাভুক্ত প্রতারক হন। পরে সৌদি সরকার তাকে তলব করলে তিনি ওমান হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন। তিনি আরো জানান- শাহাব উদ্দিন একজন মুখোশধারী প্রতারক। তিনি অসংখ্য প্রবাসীদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে দেশে চলে এসেছে এবং এখনো মানুষের পাওনা টাকা না দিয়ে প্রতারনা করে যাচ্ছেন। এমনকি রমরমা প্রতারনার কারণে তিনি রামুর জোয়ারিয়ানালাস্থ নিজগ্রাম ছেড়ে কক্সবাজার শহরে বসবাস শুরু করেছেন।