রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:৪৩ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
চকরিয়ায় বিশেষ অভিযানে ইউপি সদস্যসহ গ্রেফতার ৯ মানহানিকর সংবাদ প্রচার করায় জেলা ছাত্র দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফাহিমুর রহমানের বিবৃতি পোকার আক্রমণে বিবর্ণ মহেশখালীর প্যারাবন মহেশখালীর ঘটিভাঙ্গা-সোনাদিয়া সড়কের উপর অবৈধ ভাবে তৈরি করা হচ্ছে ব্যক্তিগত কাঠের রাস্তা শেখ হাসিনার পতনের ঘটনায় প্রশাসনিক নিরবতাকে কাজে লাগিয়ে খাস জমি দখল করে প্রতিযোগিতা মূলকভাবে নির্মাণ হচ্ছে অনুমোদনহীন বহুতল ভবন। যেন দেখার কেউ নাই হোটেল বেলাভূমি ও হোটেল ক্লাসিক সহ কটেজ জোনে অভিযান পরিচালনা করায়, কক্সবাজার জেলা পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা সংস্থা ডিবি পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার সাবেক মুখ্য সচিব নাসের ও সচিব মেজবাহ গ্রেফতার মহেশখালীতে অজ্ঞাত যুবকের লাশ উদ্ধার পর্যটন নগরী কক্সবাজারের হোটেল বেলাভূমি ও হোটেল ক্লাসিক এখন পতিতা, মরণ নেশা ইয়াবা ও মাদকের স্বর্গরাজ্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে রোগী কল্যাণ সমিতি পুনর্গঠন

দশটি অস্ত্রসহ পুলিশ পরিচয়ে নারীকে ধর্ষন মামলার তিন আসামী গ্রেপ্তার (ভিডিও)

মোবারক উদ্দিন নয়ন, স্টাফ রিপোর্টার:

পুলিশ পরিচয়ে কক্সবাজার আদালত পাড়া থেকে নারীকে তুলে নিয়ে ধর্ষনের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার প্রধান আসামী সহ তিনজনকে দশটি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। তবে ওই মামলার দুই নম্বর আসামী পুলিশ পরিচয়দানকারী মো.রাসেল থেকে গেছে অধরা।

শুক্রবার রাতে নবগঠিত ঈদগাঁও উপজেলার ইদগাঁও ইউনিয়নের নাপিতখালী থেকে ১ টি বিদেশী পিস্তল ও ৯ টি দেশীয় তৈরি বন্দুকসহ ওই তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ধৃতরা হলেন, ঈদগাওয়ের রমজান আলী মেম্বারের ছেলে বর্তমানে ফকিরাবাজার এলাকায় বসবাসকারী ফিরোজ আহমদ (৪৭) প্রকাশ মোস্তাক ডাকাত লোদা মিয়ার ছেলে নুরুল ইসলাম এবং ঈদগাঁও ইসলামপুর ইউনিয়নের ফকিরা বাজার এলাকার মৃত আব্দুল গণির ছেলে মো. শরীফ প্রকাশ শরীফ কোম্পানি। ধৃত ফিরোজ ও শরীফ উপজেলার শীর্ষ সন্ত্রাসী ও প্রায় ডজন মামলার পালাতক আসামী বলে জানিয়েছে র‌্যাব।

তাদের বিরুদ্ধে, বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাংচুর, চাঁদাবাজি, সস্ত্রাসী, পাহাড় কাটা, সরকারি পাহাড় দখল, বনের গাছ কেটে বিক্রি, পরিবেশ ধ্বংস, হত্যা, অপহরণ, ডাকাতি, মাদক ব্যবসা এবং হত্যা চেষ্টা ও ধর্ষন সহ বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগ রয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেছেন র‌্যাব-১৫ এর প্রধান লেফটেন্যান্ট কর্নেল খাইরুল ইসলাম।

তিনি বলেন, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের শীর্ষ ডাকাত মোস্তাক এবং হত্যা চেষ্টাসহ বিভিন্ন অপরাধের মূলহোতা মো: শরিফ। তারা এলাকার আতংকের নাম। তারা দীর্ঘদিন এলাকায় সন্ত্রাসের রাম রাজত্ব কায়েম করে অপরাধ চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বললে নির্যাতনসহ বিভিন্নভাবে হয়রানি করে। সর্বশেষ ১৪ মার্চ কক্সবাজার আদালত চত্ত্বর থেকে ফিরোজ ও শরিফের নেতৃত্বে এক নারীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করার অভিযোগে মামলা হয়।

আমি সন্ত্রাসী বাহিনী তৈরি করে শরিফ:

নিজের অপরাধ জগত প্রসার ঘটাতে অপরাধী শরিফ অত্যান্ত সুকৌশলে রাজনৈতিক অবস্থান পরিবর্তন করে নিজের ফায়দা লুটে আসছে। এমনকি জেলার বিশিষ্ট রাজনৈতিক নেতাদের সাথে সুসম্পর্ক তৈরি করে অপরাধ নির্বিঘ্নে করারও প্রচেষ্টা ছিল তার। সম্প্রতি তার একটি অডিওতে এসব তথ্য বেরিয়ে পড়ে। তার বিরুদ্ধে ২০১৪ সালে নৌকার নির্বাচনি অফিস জ্বালিয়ে বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার ছবি ভাংচুরের অভিযোগ রয়েছে শরিফের বিরুদ্ধে। এছাড়া শরিফের অপকর্মের বিরুদ্ধে কথা বলায় প্রকাশ্য দিবালোকে ইদ্রিস নামে এক যুবককে প্রকাশ্যে অপহরণ করে তার হাত কেটে নেয়। উল্টো ইদ্রিসের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে শরিফ।

সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয়, কক্সবাজারে একজন গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তিকে হত্যার জন্য পরিকল্পনা করেছে শরিফ ও তার গ্যাং। যার তথ্য প্রমাণ র‌্যাবের হাতে এসেছে। একটি অডিওতে শরিফ নিজেও স্বীকার করেছেন এলাকায় তিনি একটি সন্ত্রাসী বাহিনী গঠন করেছেন। যে বাহিনী দিয়ে এলাকা নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন তিনি। একই সাথে সমাজের বিশিষ্টজনের সাথে তার সম্পর্ক থাকার কথাও অডিওতে বলেছেন শরিফ। তদন্তকালে এসব তথ্য উঠে আসে বলে জানান র‌্যাব প্রধান।

সোনালি এন্ডারপ্রাইজ নামে সিন্ডিকেট তৈরি করে চাঁদাবাজি, সস্ত্রাসী, পাহাড় কাটা, সরকারি পাহাড় দখল, বনের গাছ কেটে বিক্রি, পরিবেশ ধ্বংস, হত্যা, অপহরণ, ডাকাতি, মাদক ব্যবসা, বালি উত্তোলনসহ সরকার বিরোধী বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে শরিফ ও ফিরোজ। তার বিরুদ্ধে পরিবেশ ধ্বংস, বনবিভাগের জমি বিক্রি, পাহাড় কাটা, চাঁদাবাজি হত্যাচেষ্টাসহ ৯টি মামলা ররয়েছে।

মোস্তাক ডাকাত নাম পাল্টিয়ে ফিরোজ নাম ধারণ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব প্রধান বলেন, র‌্যাবের তদন্তকালে ফিরোজ প্রাকশ মোস্তাক ডাকাত সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর তথ্য এসেছে। ফিরোজ ছিল এক সময়ের চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের কুখ্যাত ডাকাত। তার বিরুদ্ধে হত্যা, ডাকাতি, অপহরণ, মানবপাচারসহ দুই ডজনের বেশি মামলা রয়েছে। কুখ্যাত এ ডাকাত একটি মামলায় সাজা পেয়েছে। পরে জামিনে এসে ফিরোজ নাম ধারণ করে আবারো অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে।

মোস্তাক ডাকাত গোমাতলীতে হাফেজ মিয়ার ঘোনা দখল বেদখল নিয়ে একাধিক হত্যার সাথে জড়িত। ১৯৯৭ সালে খুটাখালীতে ডাকাতি করতে গিয়ে জনগণের হাতে ধরা পড়েন। সম্প্রতি সাগর পথে মালয়েশিয়া মানব পাচার করে ফিরোজ আবারো সামনে আসেন। এলাকায় চাঁদাবাজি, মাদক বিক্রির জন্য যুবক, বাচ্চা এবং মেয়েদের নিয়ে বিভিন্ন গ্রুপ তৈরি করেছেন। ফিরোজের একটি অডিও র‌্যাবের হাতে আসে। যে অডিওতে সে নিজেও স্বীকার করেছেন তার বিরুদ্ধে দুই ডজনের মামলা রয়েছে। এবং একটি মামলায় সে সাজা পেয়েছে।

১৪ মার্চ কক্সবাজার শহরে এক নারীকে তুলে নিয়ে গণধর্ষনের পর নারীকে নিজের স্ত্রী দাবি করে ভূঁয়া ও ভিত্তিহীন কাবিননামা তৈরি নারীর সাথে নিজের বৈবাহিক অবস্থান নিশ্চিত করতে চেষ্টা করেন। পরে র‌্যাবের তদন্তে নারী তার স্ত্রী নয় সেটি বেরিয়ে আসে। পরে ধর্ষিতাকে প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে ফোন করেন ফিরোজ।

এ অবস্থায় এসব অপরাধীদের ধরতে অভিযান শুরু করে র‌্যাব। শুক্রবার (২৫মার্চ) গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব জানতে পারে শরিফ ও ফিরোজ তার বাহিনী নিয়ে নাপিতখালী এলাকায় তাদের আস্তানায় অবস্থান করছে। উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান পরিচালনা করে র‌্যাবের একটি টিম। র‌্যাবের উপিস্থি টের পেয়ে তার অনেক সহযোগি পালিয়ে গেলেও র‌্যাবের হাতে ধরা পড়ে শরিফ ও ফিরোজ। এ সময় তাদের কাছ থেকে দশটি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।

র‌্যাব আশা করছে শীর্ষ দুই অপরাধীকে গ্রেফতারের পর ঈদগাঁওতে হত্যা, অপহরণ, ঘুম, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, দখলবাজি,পরিবেশ ধ্বংস, মাদক ব্যবসা, চুরি, পাহাড় কাটা, বন ধ্বংসের মতো সরকার বিরোধী কর্মকান্ড কমে আসবে।

অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে পৃথক মামলা দায়ের করা হবে বলে জানান র‌্যাব প্রধান খাইরুল ইসলাম।

https://youtu.be/ucdsWOA26bM


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *