মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫, ০৯:২৩ অপরাহ্ন

‘সব কিছুর দাম বেড়েছে, শুধু চামড়ার দাম কমেছে’

৭১ অনলাইন ডেস্ক:

কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে সাভারের চামড়াশিল্প নগরীর ট্যানারিগুলোতে আসতে শুরু করেছে কোরবানির পশুর চামড়া। রাজধানী ও আশপাশ এলাকা থেকে আসছে এই কাঁচা চামড়া। এ ছাড়া চামড়াপাচার প্রতিরোধে ও দ্রুত সময়ে ট্যানারি চামড়ার ট্রাক ঢুকতে পুলিশের একাধিক দল কাজ করছে।

ঈদের দিন রবিবার (১০ জুলাই) দুপুর থেকে ট্যানারিগুলোতে চামড়া আসা শুরু হয়।

বিকেলে ট্যানারির সার্বিক পরিস্থিতি পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন চেয়ারম্যান মাহ‌ফুজা আখতার।সরেজমিনে চামড়াশিল্প নগরী ঘুরে দেখা যায়, ট্রাকে করে চামড়া আনতে শুরু করেছে মৌসুমি ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন মাদরাসার কর্মকর্তারা। সারি সারি চামড়া বোঝাই ট্রাক ঢুকে পড়ছে ট্যানারিগুলোতে। এরপরই শ্রমিকরা আকারভেদে বাছাইয়ের পর তাতে মাখানো হচ্ছে লবণ। প্রাথমিক সংরক্ষণের পর তা তুলে দেওয়া হবে ড্রামে। এর পরই পর্যায়ক্রমে চলবে চূড়ান্ত সংরক্ষণের কাজ। আগামী দুইদিন ট্যানারিগুলোতে লবণবিহীন কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করা হবে। এরপর সারা দেশে থেকে প্রায় মাসজুড়েই লবণ মাখা চামড়া সংগ্রহ করবে বলে ধারণা দিয়েছেন ট্যানারি মালিকরা।

তবে এবারও সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে চামড়া না কেনার অভিযোগ মৌসুমি ব্যবসায়ীদের। তাদের দাবি, সরকার যে মূল্য ধরেছে চামড়ার, সে দাম দিচ্ছেন না ট্যানারি মালিকরা।

জামালুল কুরআন মাদরাসার শিক্ষক আব্দুল জলিল হোসেন বলেন, ‘দেশের সব কিছুর দাম বেড়েছে শুধু প্রতিবছর কমেছে চামড়ার দাম। এ শিল্পটি রক্ষায় সরকারের এখনই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। ’

মৌসুমি ব্যবসায়ী লিটন বলেন, ‘বর্গফুটে চামড়া কেনার কথা থাকলেও ট্যানারি মালিকরা পিস প্রতি দাম দিচ্ছে। যাতে করে লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে। ’

অন্যদিকে ট্যানারি মালিকরা বলছেন, সংরক্ষণের জন্য লবণ ও কেমিক্যাল দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের।

বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও সাভারে সালমা ট্যানারি মালিক মো. সাখাওয়াত উল্যাহ বলেন, ‘যে হারে কাচামাল, লবণ আর রাসায়নিকের দাম বাড়ছে তাতে করে খরচ কমানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তা ছাড়া কর্মীদের মজুরি তো আছেই। ’

তিনি দাবি করছেন, সরকারের বেঁধে দেওয়া দামেই ট্যানারিগুলো চামড়া ক্রয় করছে। এবার কোরবানি ঘিরে সব মিলিয়ে প্রায় এক কোটি পশুর চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, ঈদ মৌসুমে তরল বর্জ্য উৎপাদনের পরিমাণ কমাতে ট্যানারিগুলোতে ওয়াটার মিটার ও ফ্লো মিটার স্থাপন করেছে সিইটিপি কর্তৃপক্ষ। চলতি মাস থেকে পানির বিলও দিতে হবে কারখানাগুলোকে। এর ফলে কোনো কারখানা তার চাহিদার চেয়ে বেশি পানি ব্যবহার করলে কিংবা নির্ধারিত পরিমাপের চেয়ে বেশি তরল বর্জ্য নির্গমন করলে তা চিহ্নিত করা যাবে। যেহেতু পানির দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে, তাই ট্যানারি কারখানাগুলো খরচ কমাতে প্রয়োজনের বেশি পানি খরচ করবে না।

সাভার মডেল থানার ট্যানারি ফাঁড়ি ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক রাসেল মোল্লা বলেন, ট্রাকের শৃঙ্খলা ও চামড়া পাচার রোধসহ বিক্রেতা সরকার নির্ধারিত দামে চামড়ার দাম পেতে শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে সঙ্গে সমন্বয় করে নজরদারি করছে পুলিশ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *