রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫, ০৪:৩৬ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক:
র্দীঘ দিন পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন। বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীদের মধ্যে উৎসাহউদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে। মেয়াদোত্তীর্ণ কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন ১৩ ডিসেম্বর ঘোষণা দেয়ার পর থেকেই দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন পদ প্রত্যাশী নেতারা। কেন্দ্রে গিয়ে ও তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন অনেকে। তৎপরতা দেখা যাচ্ছে দলের অনেক হাইবিড নেতাকর্মীদেরও। বেশ কয়েকবার তারিখ পরিবর্তনের পর সম্মেলনের সর্বশেষ তারিখ নির্ধারণ হওয়ার পর থেকেই পদপ্রত্যাশীরা তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করে যাচ্ছেন। আবার কেউ ফেসবুকেও প্রচারণা চালাচ্ছেন। প্রত্যাশিত পদ পেতে জেলা ও কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে ও যোগাযোগে ব্যস্ত। জোরে শোরে চলছে তদবীর ও।
তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, যাঁরা ত্যাগী, পরীক্ষিত, তাঁদেরই কমিটিতে আসা উচিত। দলের ভেতরে কাউয়া ও হাইব্রিডদের কমিটিতে আসা উচিত নয় এমনটি মত দিয়েছেন অনেকে।
দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে কে আসছেন, তা নিয়ে চলছে নানা গুঞ্জন জেলার তৃনমূল পর্যায়ে নেতা-কর্মীদের মাঝে তুমুল আলোচনা চলছে জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বের হাল ধরতে কারা আসছেন?
তবে তৃণমূলের নেতা–কর্মীরা চাইছেন, যারা ত্যাগী ও সৎ এবং দলের জন্য নিবেদিত, তাদের যেন মূল্যায়ন করা হয়। জেলা আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সভাপতি-সম্পাদক পদে বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের নেতা ছাড়াও উপজেলা ও শহর আওয়ামী লীগের সাবেক কয়েকজন নেতার নাম আলোচনায় আছে। তারা এবারের কমিটিতে চমকের প্রত্যাশায় আছেন। আর কেন্দ্র থেকে তাদের জানানো হয়েছে, বিতর্কিত কাউকে এবার পদ দেওয়া হবে না।
তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সভাপতি হিসেবে জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান নাম বেশি শোনা যাচ্ছে। তা ছাড়া এই পদে আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক এড. সিরাজুল মোস্তফা এবং এড. ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী র পক্ষে ও জনমত রয়েছে। সভাপতি পদে সালাহ উদ্দিন সিআইপির নাম ও মাঠ র্পযায়ে আলোচনায় রয়েছে। অপরদিকে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন ও কাউন্সিলে আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের সংগঠক ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক ও আহবায়ক বর্তমানে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট রনজিত দাশকে সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দেখতে চান। গ্রহণযোগ্যতা, সাংগঠনিক দক্ষতা, ত্যাগ, অভিজ্ঞতা সবকিছু মিলিয়ে এগিয়ে আছেন সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশী আইনজীবী রনজিত দাশ। তিনি বর্তমানে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তিনি জেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক, সাধারণ সম্পাদক, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় সদস্যসহ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকসহ বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। কেন্দ্রীয় নীতিনির্ধারক পর্যায়ের একাধিক নেতাদের পছন্দের তালিকায়ও তিনি রয়েছেন বলে জানা গেছে।
অপরদিকে সাবেক কাউন্সিলর ও ভারপ্রাপ্ত মেয়র যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান চৌধুরীর নাম ও রয়েছে শীর্ষে। এ ছাড়া কক্সবাজারের সাহসী ত্যাগী নেতা, সাবেক কাউন্সিলর আব্দুল খালেকের নাম ও তৃনমূলে রয়েছে।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা আওয়ামীগের সদস্য জানান, বর্তমান কমিটির উপর তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা নাখোশ। নেতৃবৃন্দ দলীয় কর্মকান্ডের চেয়ে ব্যক্তিগত বিষয়ে বেশীরভাগ সময় পার করেছেন। এ অবস্থার কারণে দল গোছাতে হলে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদে নতুন নেতৃত্ব আসুক-এমনটাই কামনা করেছেন দলীয় নেতাকর্মীরা।
উল্লেখ্য- আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন ২৪ ডিসেম্বর। এর আগেই ১২ ডিসেম্বরের মধ্যে তৃণমূলের মেয়াদোত্তীর্ণ সব কমিটির সম্মেলনের কাজ শেষ করার নির্দেশনা দিয়েছেন দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া জাতীয় সম্মেলনের আগেই মেয়াদোত্তীর্ণ সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সম্মেলন করারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগের একাধিক নীতিনির্ধারকের সঙ্গে আলাপ করে আরও জানা গেছে, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে গত জাতীয় সম্মেলনের আগের ৩৩টি জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। বাকি ছিল ৪৫ জেলার সম্মেলন। বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটির নেতারা দায়িত্ব নেওয়ার পর এ পর্যন্ত ২৩টির মতো জেলার সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে আরও অন্তত ১৪টি জেলার সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। বাকি আটটি জেলায় এখনো সম্মেলনের তারিখ চূড়ান্ত হয়নি। মেয়াদোত্তীর্ণ রয়েছে আরও প্রায় ৭০-৮০টি উপজেলা শাখা।
২০১৯ সালের ২১ ডিসেম্বর রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে ২১তম জাতীয় কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। ২০১৬ সালে ২০তম এবং ২০১২ সালে দলটির ১৯তম কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। চলবে…