রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫, ১০:৩৯ পূর্বাহ্ন

প্রত্যাশা আইনজীবীদের জামিননামা দাখিল: আজই মুক্তি পাবেন ফখরুল-আব্বাস

পুলিশের ওপর হামলার পরিকল্পনা ও উসকানি দেওয়ার অভিযোগে পল্টন থানায় করা মামলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের জামিননামা দাখিল করেছেন তাদের আইনজীবী। আজই তারা কারামুক্ত হবেন বলে তাদের প্রত্যাশা আইনজীবীদের।

সোমবার (৯ জানুয়ারি) দুপুরে ঢাকা সিএমএম আদালতের জুডিসিয়াল মুন্সিখানায় তাদের হাইকোর্টের দেওয়া জামিনের আদেশ আসে। এরপর তাদের আইনজীবী জামিননামা দাখিল করেন।

মির্জা ফখরুলের আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহ বলেন, হাইকোর্টের দেওয়া জামিনের আদেশ জুডিসিয়াল মুন্সিখানায় আসার পর আমরা জামিননামা দাখিল করেছি। আশা করছি, আজই কারামুক্তি পাবেন তারা।

মির্জা আব্বাসের আইনজীবী মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, হাইকোর্টের দেওয়া জামিনের আদেশ জুডিসিয়াল মুন্সিখানায় আসার পর আমরা জামিননামা দাখিল করেছি। দুদকের একটি মামলায় তাকে আদালতে হাজির করার জন্য হাজতি পরোয়ানা দিয়েছিলেন। আমরা তা প্রত্যাহারের আবেদন করলে আদালত মঞ্জুর করেন।

গত ৮ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের বেঞ্চ তাদের ছয় মাসের জামিন দিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ বহাল রাখেন।

একই সঙ্গে হাইকোর্টে জামিন প্রশ্নে জারি করা রুল আগামী ৩০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে বলা হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষের করা জামিন বাতিলের আবেদনটিও নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন আদালত।
গত ৩ জানুয়ারি হাইকোর্টের বিচারপতি মো. সেলিম ও বিচারপতি মো. রিয়াজ উদ্দিন খানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসকে ছয় মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দেন। একই সঙ্গে কেন তাদের স্থায়ী জামিন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে চার সপ্তাহের রুলও জারি করেন আদালত।

এরপর তাদের জামিন স্থগিত চেয়ে বুধবার (৪ জানুয়ারি) সকালে আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। সেই আবেদনের শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেনের চেম্বার আদালত বুধবার (৪ জানুয়ারি) বিষয়টি শুনানির জন্য নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন। আর আপিল বিভাগে শুনানি শেষ না হওয়া পর্যন্ত আসামিপক্ষকে নিম্ন আদালতে জামিননামা দাখিল না করতে বলা হয়।

গত ৮ ডিসেম্বর দিনগত রাতে নিজ বাসা থেকে ফখরুল ও আব্বাসকে আটক করে ডিবি পুলিশ। পরদিন (৯ ডিসেম্বর) পুলিশের ওপর হামলার পরিকল্পনা ও উসকানি দেওয়ার অভিযোগে পল্টন থানায় করা মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে হাজির করে। এসময় মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত গ্রেফতার বিএনপি নেতাদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক তরিকুল ইসলাম।

অন্যদিকে, আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জামিন আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিম জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। সেদিন থেকে কারাগারেই রয়েছেন গত ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির সমাবেশ ও স্থান নির্ধারণ নিয়ে উৎকণ্ঠা-উত্তেজনার মধ্যে ৭ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে জমায়েত হওয়া বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষে একজনের মৃত্যু ও শতাধিক আহত হয়।

বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে হাতবোমা ছোড়া হয়েছে অভিযোগ তুলে তখন ওই কার্যালয়ের ভেতরে অভিযান চালায় পুলিশ, গ্রেফতার করা হয় কেন্দ্রীয় কয়েকজন নেতাসহ কয়েকশ নেতাকর্মীকে।

পরদিন রাতে বাড়ি থেকে মির্জা ফখরুলকে গ্রেফতার করা হয়, একই রাতে গ্রেফতার করা হয় মির্জা আব্বাসকেও। ৯ ডিসেম্বর পুলিশের ওপর হামলা ও উসকানি দেওয়ার মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। তাদের পক্ষে জামিন আবেদন হলেও তা নাকচ করে কারাগারে পাঠানো হয়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *