সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫, ০৬:২৮ অপরাহ্ন

নির্বাচনী হাওয়া কক্সবাজার-৪ : দলীয় মনোনয়ন চাইবেন আওয়ামীলীগের আধাডজন নেতা!

মনোনয়ন প্রত্যাশীদের জনপ্রিয়তায় শীর্ষে বদি

মুহাম্মদ তাহের নঈম :
কক্সবাজার-৪ উখিয়া-টেকনাফ আসনটি সরকার গঠনের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আসন হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে দীর্ঘদিন ধরে । স্বাধীনতা পরবর্তী সময় থেকে অদ্যাবধি যে দল এই আসনে বিজয়ী হয়েছে, সে দলই ততবার সরকার গঠন করেছে। তাই  এই আসনটি অত্র এলাকারা রাজনৈতিক বোদ্ধা এবং সাধারন জনতার কাছে লক্ষী আসন বলে ও প্রসিদ্ধ রয়েছে । যে কারনে এই আসনে মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে জনপ্রিয়তা যাচাই করে প্রকৃত জনপ্রিয় ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেওয়াটা অত্যধিক গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন সাধারণ ভোটাররা । সেই দিক বিবেচনা করে উখিয়া-টেকনাফে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনয়নের জন্য এতদ্বাঞ্চলের মাটি ও মানুষের নেতা, গরীবের বন্ধুখ্যাত বর্তমান সংসদ সদস্য জনাব আলহাজ্ব আব্দুর রহমান বদি-ই একমাত্র যোগ্য এবং অপ্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বলে তৃণমূলের সকল মানুষের ধারনা। সরকারি দল আওয়ামীলীগের সকল মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে বদির জনপ্রিয়তায় শীর্ষে রয়েছেন।   ইতোমধ্যে দলের নীতিনির্ধারকেদের কাছে এই বার্তা পৌঁছে গেছে বলে বদির ঘনিষ্ঠ জনরা দাবি করেছেন।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কক্সবাজার-৪ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী হয়েছেন জেলা উপজেলা পর্যায়ের শীর্ষ  ৬/৭জন নেতা। অন্যদিকে জামায়াতের প্রার্থিতা নিয়ে প্রতিযোগিতা নেই। তাদের প্রার্থী চুড়ান্ত হয়েছে।  বিএনপি আপাতত প্রার্থী নিয়ে ভাবছেনা। তারা সরকার পতনের একদফার আন্দোলনে ব্যাস্ত বলে জানান জেলা নেতৃবৃন্দ। মিয়ানমার সীমান্তে অবস্থিত  উখিয়া-টেকনাফ দুই উপজেলা নিয়ে কক্সবাজার-৪ আসন। এ দু’টি উপজেলাই সারা বিশ্বে এখন রোহিঙ্গাদের আশ্রয়শিবির হিসেবে অধিক পরিচিত । ভৌগোলিক পরিমণ্ডলে ও আসনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ায় উখিয়া-টেকনাফ ইউরোপ আমেরিকার দেশগুলোর কাছে আলাদা কদর থাকলেও মাদকের কারণে আছে সারাদেশে ব্যাপক বদনামও। মিয়ানমার সীমান্ত দিয়ে এই অঞ্চলে ইয়াবা এবং আইসসহ আসে বিভিন্ন মাদক এবং স্বর্ণের চালান। এটি ‘মাদকের স্বর্গরাজ্য’ বলেই অনেকের কাছেই রয়েছে কু খ্যাতি। এমনকি অনেক জনপ্রতিনিধিও ইয়াবা কারবারের সঙ্গে জড়িত বলে জনশ্রুতি রয়েছে। তবে সাধারণ মানুষ চায়, এসব বদনাম মুছে দিতে উখিয়া-টেকনাফে ক্লিনইমেজের কেউ নির্বাচিত হোক এই আসনে। সাম্প্রতিক কালে উখিয়া-টেকনাফ আসন নিয়ে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক তৎপরতার পাশাপাশি বাড়ছে মনোনয়ন প্রত্যাশীর সংখ্যা ও। ক্ষমতাসীনদল আওয়ামী লীগে প্রায় আধা ডজন নেতা একজোট হয়ে উখিয়া-টেকনাফের এই আসনে  বিএনপি এবং জামায়াতের প্রাথীরা আন্দোলনের পাশাপাশি ঘর ঘোচাতে ও তৎপর রয়েছেন । অপরদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগে দুই উপজেলার বেশ কয়েকজন বাঘা নেতা বদি’র বিকল্প হিসাবে মাঠে সষে বেড়াচ্ছেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ১৯৮৬-১৯৮৮ সালে এই আসনে এমপি নির্বাচিত হন হ্নীলার মরহুম আলহাজ্ব আব্দুল গফুর চৌধুরী। এরপর চতুর্থ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ১৯৮৮-১৯৯০ সালে এমপি নির্বাচিত হন প্রবীণ রাজনীতিক বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আব্দুল গণি। তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। বর্তমানে তার পুত্র ব্যবসায়ী সাইফুদ্দিন খালেদও আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তিনিও এবার নৌকা প্রতীকের মনোনয়নপ্রত্যাশী।
১৯৯১-১৯৯৬ সাল পর্যন্ত এখানে বিএনপির এমপি ছিলেন সাবেক হুইপ আলহাজ্ব শাহজাহান চৌধুরী। ১৯৯৬-২০০১ সালে আওয়ামী লীগের এমপি ছিলেন মরহুম অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী। তার পুত্র টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক তারুণ্যের প্রতীক মাহাবুব মোর্শেদ  এবার নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী।
অপরদিকে টেকনাফ উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব  মো: নুরুল বশর দলীয় বিবেচনায় শক্ত অবস্থানে রয়েছেন। তিনিও মনোনয়ন পেতে দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন।
অন্যদিকে উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি কবি আদিল চৌধুরী এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি রাজা শাহ আলম জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী ও মনোনয়ন চাইবেন বলে জানা গেছে। বদিভক্ত কতিপয় নেতা প্রতিবেদক কে জানান,
উখিয়া-টেকনাফের এই আসনে সাবেক এমপি বদি’র বিকল্প চিন্তা করা মানে আসনটি বিএনপি জামায়াতের হাতে তুলে দেওয়া। তাদের মতে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনয়নের জন্য এতদ্বাঞ্চলের মাটি ও মানুষের জনদরদী নেতা সাবেক সংসদ সদস্য  আলহাজ্ব আব্দুর রহমান বদি-ই একমাত্র যোগ্য। যে ভাবেই হোক বদি উখিয়া-টেকনাফের আম জনতার মনে স্থান করে নিয়েছেন। আবার দুই উপজেলার অধিকাংশ ক্ষমতাসীন দলের নেতা আব্দুররহমান বদি’র মনোনয়নের বিপক্ষে নিজেদের জাহির করার চেষ্টায় আছেন। সাধারণ ভোটারদের মতে,বদির মনোনয়ন ঠেকানো সম্ভব হলে ও তার জনপ্রিয়তা ঠেকানো কঠিন। আওয়ামীলীগের একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশীরা জানান,মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যোগ্য বিবেচনায় যাকে মনোনয়ন দেবেন, আমরা সবাই তার পক্ষে কাজ করবো। তবে জনবিচ্ছিন্ন কোন ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেওয়া হলে এ আসনটি হারানোর সম্ভাবনা একেবারেই উড়িয়ে দেয়া যায়না।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *