শনিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:০৫ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :

র‌্যাবের অভিযানে রোহিঙ্গা মাঝি আতাউল্লাহ হত্যার সাথে জড়িত এক সন্ত্রাসী আটক

রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর সাবেক হেড মাঝি আতাউল্লাহকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনার সাথে জড়িত রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গ্রুপ আরসা’র সদস্য আহসান উল্লাহকে র‌্যাব-১৫ গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃত সন্ত্রাসী আহসান উল্লাহ ব্লক-এ/৮, ১৯নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের কাদের হোসেনের পুত্র।

জানা গেছে, কক্সবাজারের উখিয়ায় পালংখালী ইউনিয়নের ঘোনারপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১৯ এ আতাউল্লাহ নামের এক রোহিঙ্গা নেতাকে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গ্রুপ আরসার সদস্যরা নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করে। নিহত আতাউল্লাহ রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১৯ এর এ ব্লকের সাবেক হেড মাঝি এবং ব্লক-এ/১ এর সাব মাঝি হিসেবে দায়িত্বরত ছিল। এই ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে নিহতের ছেলে বাদী হয়ে ৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৭/৮ জনকে আসামী করে উখিয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন, যার মামলা নং ৭৫/৬৯৫ তাং ২৬/১১/২০২৩ খ্রিঃ।

র‌্যাব-১৫ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (ল’ এন্ড মিডিয়া) ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আবু সালাম চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ২৭ নভেম্বর রাতে নির্ভরযোগ্য তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব-১৫, কক্সবাজার এর একটি চৌকস আভিযানিক দল কক্সবাজার জেলার সদর থানাধীন দক্ষিণ পাহাড়তলী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মামলা দায়েরের ২৪ ঘন্টার মধ্যে হত্যাকান্ডের অন্যতম সদস্য ও এজাহারনামীয় আসামী আহসান উল্লাহ (৩০) কে আটক করে।

তিনি আরও জানান, গ্রেফতারকৃত আহসান উল্লাহ’কে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, বছর খানেক আগে আতাউল্লাহকে সরিয়ে দিয়ে সোনা মিয়া নামক এক রোহিঙ্গাকে ক্যাম্প-১৯ এর এ ব্লকের হেড মাঝি এবং আতাউল্লাহকে ব্লক-এ/১ এর সাব মাঝি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। পরবর্তী হেড মাঝি সোনা মিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে একটি গোলাগুলির ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় বর্তমানে কারাগারারে রয়েছে। হেড মাঝি সোনা মিয়া গ্রেফতার হওয়ার পর ক্যাম্প-১৯, ব্লক-এ এর হেড মাঝি হওয়ার জন্য আতাউল্লাহ’সহ আরো অনেকেই প্রতিদ্বন্দ্বীতা শুরু করে। এ নিয়ে আতাউল্লাহ’র সাথে কয়েক জনের শত্রুতা তৈরী হয়, যারা আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) সাথে সু-সম্পর্ক রক্ষা করে চলে।
তাছাড়া গত দুই মাসে এপিবিএন পুলিশ কর্তৃক আরসার দুইজন অন্যতম সন্ত্রাসী হাতকাটা ফয়সাল এবং খাইরুল আমিন গ্রেফতার হওয়ায় আরসা সদস্যরা সন্দেহ পোষণ করছিল যে, আতাউল্লাহ এপিবিএন পুলিশকে আরসা সম্পর্কে তথ্য সরবরাহ করছে এবং সেই তথ্যের ভিত্তিতে এই দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়। এই ক্ষোভে আতাউল্লাহ’র প্রতিদ্বন্দ্বীরা আরসার সাথে যোগসাজশে তাকে হত্যা করার জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করে। পরিকল্পনা মোতাবেক গ্রেফতারকৃত আসামী রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১৯ এর এ/৮ ব্লকের ভলান্টিয়ার মাঝি আহসান উল্লাহ মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আতাউল্লাহ’কে ভাসানচরে যেতে আগ্রহী রোহিঙ্গা সদস্যের সাথে আলোচনা করার জন্য ক্যাম্প-১৯ এর এ/৯ ব্লকের মোহাম্মদ ইয়াছিনের পান-সিগারেটের দোকানের সামনে আসার জন্য বলে। আতাউল্লাহ দোকানের সামনে পৌঁছা মাত্রই পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ৮/৯ জন আরসার সদস্য দেশীয় ধারালো রামদা ও ছোরা দিয়ে আতাউল্লাহকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করে।

আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) এর সদস্য গ্রেফতারকৃত আহসান উল্লাহর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *