রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:০৫ পূর্বাহ্ন
খোরশেদ আলম:
দ্বাদশ নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই ভোটারদের কাছে কাছে ছুটছেন প্রার্থীরা,অন্য দিকে নির্বাচনীর মাঠে প্রশাসন যখন ব্যস্ত ঠিক সে মুহুর্তে ইয়াবা ও তেল পাচারকারীরা সক্রিয় হয়ে উঠছে।
বিভিন্ন সূত্র জানা যায়, আগে ইয়াবা চোরাচালানের মূল রোড় ছিল মিয়ানমারের টেকনাফ সীমান্ত। এই রোড়ে বিজিবি’র বেশি টহল থাকার কারণে চোরাকারবারিরা রোড় পরিবর্তন করেছে।স্থল ও সাগর পথে উপকূলীয় এলাকা দিয়ে ঢুকছে ইয়াবা ট্যাবলেট।কক্সবাজারে সাগর পথে সদর চৌফলদন্ডী ঘাট,৬নং ঘাট,উত্তর নুনিয়া ছড়া ঘাট,কস্তুরা ঘাট,মহেশখালীর সোনাদিয়া ও ঘটিভাঙ্গায় ইয়াবার চালান আসে। এসব ইয়াবা নৌপথে ও সড়ক পথে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে চালান করে ইয়াবা কারবারীরা।সাগর পথে মাছের ও লবণের ট্রলারে এবং সড়ক পথে লবণভর্তি ট্রাক ও কাভার্ডভ্যানে এসব ইয়াবা চালান করা হয় বলে জানায় যায়।
গতকাল সরেজমিনে দেখা যায়,কক্সবাজার সদর চৌফলদন্ডী ব্রীজ ঘাটে গিয়ে দেখা মিলে একটি পুড়িয়ে যাওয়া বোটে আহত হয় ৪ জন।তারা মায়ানমারের উদ্দেশ্যে তেল পাচার করার জন্য বোট ভর্তি তেলের ট্যাংকি বিস্ফোরণে বুধবার রাতে মারাত্মক দূর্ঘটনা হয়।পরে স্হানীয় লোকজনও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আহতদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন,পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক ৩জনের অবস্থা আশংকা জনক হওয়া চট্টগ্রামে রেফার করেন।তবে স্হানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান প্রতিনিয়ত অভিনব কায়দায় চৌফলদন্ডী ও ঈদগাহ থেকে লবণ টেলারে কিংবা ফিশিং বোটে তেল মায়ানমারে নিয়ে যায়।সেখান থেকে ফেরার পথে ইয়াবাসহ নানান পণ্য পাচার করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে।তিনি আরও জানান,বিগত ৯ই ফেব্রুয়ারি ২০২১ইং,সালেও চৌফলদন্ডী ব্রীজের কাছাকাছি একটি বােট থেকে সাত বস্তায় ১৪ লাখ ইয়াবা উদ্ধার করে।
ঈদগাহ ইসলামপুরের আব্দুল হাকিম জানান,প্রতিনিয়ত লবণ ট্রলার ভর্তি করে বিভিন্ন কৌশলে ইয়াবা চালান আসে,এটি বিভিন্ন পন্থায় গ্রাম থেকে শহরের বিক্রি করছে।আমাদের ইসলামপুর ও চৌফলদন্ডীতে মাদকাসক্তরা এ সমস্ত কাজের সাথে জড়িত।
স্থল পথের সূত্রে জানা যায়, চোরাকারবারিরা অভিনব পন্থায় ইয়াবা ট্যাবলেট নিয়ে আসছে। বেশি আসছে কাঁচা তরকারির মধ্যে ইয়াবা। বড় বড় লাউ ও মিষ্টি কুমড়ার মধ্যে কেটে তারা ইয়াবা ট্যাবলেট নিয়ে আসছে। এ ছাড়াও বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা মিয়ানমার থেকে অনেক বাঁশ আমদানি করে থাকে। সেই বাঁশ ফুটো করে চোরাকারবারিরা ইয়াবা ট্যাবলেট আনছে।
আমরা কক্সবাজারবাসী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নাজিম উদ্দীন বলেন,সীমান্তে যেকোনো মূল্যে ইয়াবাসহ সব ধরনের মাদকের চোরাচালান কক্সবাজার হয়ে দেশের প্রতিটি জায়গায় যাচ্ছে এক দিকে চোরাচালান কারবারিরা সরকারের কোটি কোটি রাজস্ব ফাঁকি অন্যদিকে মাদক দিয়ে যুব সমাজকে ধংশের পথে পেলে দিচ্ছে।নির্বাচনের মাঠে যখন প্রশাসন কড়া নজরদারি অন্যদিকে মাদক ও তেল পাচারকারীরা সে সুযোগে সক্রিয় হচ্ছে।আমি প্রশাসন ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মাদকবিরোধী অভিযান ও ধর পাকড়ের জোর দিতে হবে।
কক্সবাজার সদ্য পদোন্নতি প্রাপ্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম বলেন, মাদক ব্যবসায়ীরা সীমান্তের বিভিন্ন অলিগলি, ছোট সড়কগুলোকে নিরাপদ রুট হিসাবে বেছে নিয়েছে। এ কারণে এসব সড়ক চিহ্নিত করে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রেখেছে। এছাড়াও পাচারের পেছনে কারা জড়িত তা তৃণমূল পর্যায়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তাঁর মতে, পাচারকারী সিন্ডিকেট পুলিশের অবস্থান লক্ষ্য করে বার বার পাচারের রুট পরিবর্তনের কারণে ইয়াবা পাচারকারীদের ধরা সম্ভব হচ্ছে না। তবে পুলিশ বাহিনীকে মাদক পাচার প্রতিরোধে সর্তক অবস্থানে থাকার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।