সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫, ০৩:০২ অপরাহ্ন

শান্তিপূর্ণ নির্বাচন উপহার দিতে পুলিশ নির্ঘুম রাত কাটিয়েছে

কক্সবাজারে সকল উপজেলা পরিষদ নির্বাচন সম্পন্ন পুলিশ প্রশাসনের ভুমিকা প্রশংসনীয়

আব্দুল আলীম নোবেল:
সারাদেশের ৪৯৫ টি উপজেলার মধ্যে ২৪ সালে এই বারে ৪৬১ টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে প্রথম ধাপে ১৩৯ টি আর দ্বিতীয় ধাপে ১৫৬টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। তৃতীয় ধাপে ৮৭ টি উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় কক্সবাজার জেলার, চকরিয়া, পেকুয়া, কুতুবদিয়া, মহেশখালি, রামু, ঈদগাঁহ কক্সবাজার সদর, উখিয়া ও টেকনাফ ৯টি উপজেলায় উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচন চলাকালীন সময়ে বড় ধরণের তেমন কোন অঘটন ছাড়াই নির্বাচন সম্পন্ন করতে পেরেছে পুলিশ প্রশাসন।
সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে পেরে পুলিশ প্রশাসনও সন্তুষ্ট বলে জানাগেছে।
কক্সবাজার ২-( মহেশখালী-কুতুবদিয়া ) আসনের সাংসদ আশেক উল্লাহ রফিক বলেন
 সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ন নির্বাচন উপহার দেয়ায় পুলিশ বাহিনীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ শান্তিপূর্ণ নির্বাচন উপহার দিতে পুলিশ নির্ঘুম রাত কাটিয়েছে। সুষ্ঠু নিরপেক্ষ অংশগ্রহণ মূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে জেলা পুলিশের ভুমিকা প্রশংসনীয় ছিল। একই সাথে অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও জোরালোভাবে কাজ করেছে, তবে এইবারে প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকা ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ তিনি কোন দলীয় প্রতীক না দিয়ে সকলের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে ছেয়েছেন সেটি মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়ন হয়েছে। বিরোধী দল সাধারণ মানুষকে নির্বাচন অংশগ্রহণ না করতে নানা ধরনের ভয়ভিতি দেখিয়েছিল এরপরও সাধারণ মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে নির্বাচন অংশগ্রহণ করেছেন। তিনি শুধু আইন শৃঙ্খলা বাহিনী নয় মাঠ প্রশাসন যেমন, জেলা প্রশাসন, নির্বাচন কমিশন সহ আরো অনেকই উপজেলা পরিষদ নির্বাচন সম্পন্ন করতে তাদেরই ভূমিকা কোনভাবে কমতি ছিল না, তাদের ভূমিকাও সন্তোষজনক ছিল।
কক্সবাজার প্রথম ধাপে, গত ৮মে
কক্সবাজার সদর উপজেলা, মহেশখালী ও কুতুবদিয়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আর দ্বিতীয় ধাপে গত ২১মে সদ্য গঠিত দেশের সর্বশেষ উপজেলা ৫৯৫ তম উপজেলা ঈদগাঁও, চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে, গতকাল ২৯ মে তৃতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত হয়েছে টেকনাফ উপজেলা পরিষদ, উখিয়া ও রামু উপজেলা পরিষদ। ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে ৮৭ উপজেলায় ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে।
নির্বাচন হলো সিদ্ধান্ত গ্রহণের এমন একটি আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে জনগণ প্রশাসনিক কাজের জন্য একজন প্রতিনিধিকে বেছে নেয়। সপ্তদশ শতক থেকে আধুনিক প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্রে নির্বাচন একটি আবশ্যিক প্রক্রিয়া হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আর এই নির্বাচন সম্পন্ন করতে রাষ্ট্রের বিশাল সংখ্যক লোকবল দরকার পড়ে জেলা প্রশাসন, নির্বাচন কমিশনসহ
অনন্য প্রশাসনের পাশাপাশি তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখেন পুলিশ প্রশাসন।
এইবারে প্রতি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ১ হাজার ১৮ জন পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করেছেন।
কারণ দুরঅতীতের নির্বাচনের চিত্র দেখলে দেখা যায়, নানা অপ্রীতিকর ঘটনার খুনখারাপির মত অহরহ
ঘটনা ঘটেছিল। এতে একটি ভীতিকর মনোভাব সাধারণ ভোটারের মাঝে কাজ করে এতেই পুলিশের কি ভুমিকা থাকে সবার চোখ সেই দিকে থাকে।
 চলমান নির্বাচনে তেমন বড় ধরনের বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে কক্সবাজারে। এতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় ভোটাররা। যদিও
নির্বাচনকালীন পুলিশ নির্বাচন কমিশনের আওতাধীনে কাজ করেছেন।
এই বিষয়ে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, প্রশাসন ও অর্থ (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত)
 মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন,
সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে পুলিশ সুপার মাহফুজুল ইসলামের নেতৃত্বে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ক্রাইম এন্ড অপস্, (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত) মো শাকিল আহমেদ,
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক জসিম উদ্দিন চৌধুরী এবং আরো অনেক পুলিশ কর্মকর্তাসহ
 জেলা পুলিশের সকল থানার অফিসার ইনচার্জ ও পুলিশ সদস্যের চেষ্টার কোন কমতি ছিলনা।
তিনি আরো বলেন,
এইরকম নির্বাচনের সময়
কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতেই পারে তবে যে কোন ঘটনা তাৎক্ষণিকভাবে মোকাবেলায় সবসময় প্রস্তুত ছিল পুলিশ।
 সর্বশেষ ২৯ মে অনুষ্ঠিত হওয়া টেকনাফ, উখিয়া ও রামু উপজেলার সফলতার সহিত নির্বাচন সম্পন্ন করা সম্ভব হয়েছে তবে সকলের সহযোগিতা পেয়েছি।
সদ্য অনুষ্ঠিত হওয়া সদর উপজেলা পরিষদের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল আবছার বলেন, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে তবে সকল প্রশাসনের পাশাপাশি পুলিশের ভুমিকা সন্তোষজনক।
সারাদেশে
গত ৮ মে প্রথম ধাপে ১৩৯টি উপজেলা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।  ২৯ মে তৃতীয় ধাপে ১১১টির মধ্যে বৈরি আবহাওয়ার কারণে ৮৭ টি নির্বাচন সম্পন্ন করতে পেরেছে নির্বাচন কমিশন।
এছাড়া ৫ জুন সর্বশেষ চতুর্থ ধাপে আর বাকি ৭৯টি উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে।
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে দেশের ১৫৬টি উপজেলায় ভোটগ্রহণ চলেছে। তবে ভোটারদের উপস্থিত কম ছিল।
 কিছু কিছু উপজেলায়
 ইলেক্ট্রনিক ভোটিং (ইভিএম) পদ্ধতিতে
ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে কক্সবাজার জেলায় ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে।
অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো কোনো প্রার্থী না দেওয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে ভোটের লড়াই তেমন জমেনি, যাদের বেশিরভাগই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের।
বর্তমানে বাংলাদেশের ৮টি বিভাগের অন্তর্গত ৬৪টি জেলায় মোট ৪৯৫ টি উপজেলা রয়েছে। সর্বশেষ গঠিত উপজেলাগুলি হলো – মাদারীপুরের ডাসার ৪৯৩তম উপজেলা, সুনামগঞ্জের মধ্যনগর ৪৯৪তম উপজেলা ও কক্সবাজারের ঈদগাঁও ৪৯৫তম উপজেলা।
যদিও
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছিলেন(প্রথম আলো) নির্বাচনকালীন পুলিশ নির্বাচন কমিশনের আওতাধীন থাকবে।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণে পুলিশ থাকবে। আমি আশা করি, নির্বাচন কমিশন যেমন চাইবে পুলিশ তেমনই জনগণকে সেবা দিবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *