বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০১:০০ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :

সেন্টমার্টিনে মিয়ানমারের দুই সেনা ও ৩১ রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক:
এবার প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে মিয়ানমারের দুই বিজিপি ও ৩১ রোহিঙ্গা বহনকারী একটি নৌকা অনুপ্রবেশ করেছে। মূলত মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মি ও সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষে টিকতে না পেরে তারা এপারে অনুপ্রবেশ করেছেন। এদিকে টেকনাফ সীমান্তে মর্টারশেল ও ভারী গোলার বিকট শব্দ পাওয়া গেছে।
গতকাল শুক্রবার ভোরে ৩৩ জন যাত্রীবোঝাই একটি ট্রলার সেন্টমার্টিন দ্বীপের উত্তর গোলারচরে ভিড়েছে। এতে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) দুই সশস্ত্র সদস্য ও ৩১ জন রোহিঙ্গা রয়েছেন। এরমধ্যে ১০ জন নারী, ১০ জন পুরুষ, ১১ জন শিশু ও ২ জন মিয়ানমার বিজিপির কর্মকর্তা।
দ্বীপে মিয়ানমারের যাত্রীবাহী একটি নৌকা ভিড়েছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আদনান চৌধুরী। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাসহ মিয়ানমারের বিজিপি সেন্টমার্টিনে আশ্রয় নিয়েছে। জানতে পেরেছি, তারা বৃষ্টিতে নৌকার ইঞ্জিন নষ্ট হওয়ায় এখানে নোঙর করেছে। বিষয়টি নিয়ে আমাদের বিজিবি ও কোস্টগার্ড কাজ করছে।
সেন্টমার্টিন দ্বীপের বাসিন্দা মো. আমিন বলেন, ভোরে বৃষ্টির মধ্য সৈকতে যাত্রীবাহী নৌকা তীরে ভিড়েছে। সেখানে শিশুসহ রোহিঙ্গা নারী রয়েছে। এছাড়া অস্ত্রসহ দুই বিজিপি সদস্যও আছে।
স্থানীয়দের মতে, কয়েকদিন ধরে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডুতে জান্তা বাহিনী ও বিদ্রোহীদের মধ্যে যুদ্ধের তীব্রতা বেড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সেখাকার বাসিন্দারা অন্য কোথাও আশ্রয় নিচ্ছেন। এর অংশ হিসেবে রোহিঙ্গা বহনকারী নৌকাটি মংডু শহর হতে মিয়ানমার নৌবাহিনীর জাহাজে করে সিটওয়ে শহরে যাত্রা করে। মাঝপথে নৌকাটি জালের সঙ্গে আটকে ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায়। পরে বৃষ্টি ও ঝড়ের কবলে পড়ে সেন্টমাটিনের উত্তর পশ্চিম বিচে আশ্রয় নেয়। স্থানীয়রা দেখতে পেয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বিষয়টি অবহিত করে। পরে তাদের একটি হোটেলে নেওয়া হয়।
এ বিষয়ে সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, মিয়ানমারের একটি নৌকা ঝড়ো হাওয়ার কবলে পড়ে এখানে প্রবেশ করেছে। নৌকায় রোহিঙ্গার পাশাপাশি দুইজন বিজিপি সদস্যও রয়েছে। তারা এখন বিজিবি ও কোস্ট গার্ডের হেফাজতে রয়েছে।
তবে সেন্টমার্টিনে অনুপ্রবেশের বিষয়ে টেকনাফের বিজিবি ও কোস্ট গার্ডের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এদিকে গতকাল দুপুরে কক্সবাজারে টেকনাফ সীমান্তে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মি ও সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষে মর্টার শেল ও ভারী গোলার বিকট শব্দ পাওয়া গেছে। এদিকে সীমান্তের মানুষের আতঙ্ক আরও বেড়েছে।
এখনও সীমান্তে গোলার বিকট শব্দ বন্ধ হয়নি বলে জানিয়েছেন টেকনাফ পৌরসভার প্যানেল মেয়র মুজিবুর রহমান। তিনি বলেন, কয়েক মাস ধরে চলমান মিয়ানমারের যুদ্ধ এখনো চলছে। ফলে এপারে বিকট শব্দ ভেসে আসছে। এর কারণে সীমান্তে বসবাসকারী মানুষের মাঝে ভয়-ভীতি কমেনি।
এদিকে মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আরাকান আর্মির সঙ্গে দেশটির সেনাবাহিনীর তুমুল সংঘর্ষে টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং থেকে শাহপরীর দ্বীপ পর্যন্ত ৫৪ কিলোমিটার নাফ নদীতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি ও বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের সদস্যরা টহল বৃদ্ধি করেছে।
তবে সীমান্ত অনুপ্রবেশ ঠেকানার পাশাপাশি যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিজিবি সদস্যরা প্রস্তুত রয়েছেন বলে জানিয়েছেন টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মহিউদ্দিন আহমেদ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *