মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫, ০৯:১০ অপরাহ্ন

হাসিনার পরিকল্পনা ও নির্দেশে জুলাই গণহত্যা

পতিত শেখ হাসিনাই জুলাই হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা। তার সরাসরি পরিকল্পনা এবং নির্দেশে ওই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। শেখ হাসিনা জুলাই বিক্ষোভের নেতাদের হত্যা করে তাদের লাশ গুম করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। বাংলাদেশের ইতিহাসে এই নারকীয় হত্যাকাণ্ডে অন্তত ১৪০০ মানুষ নিহত হয়। নিহতদের মধ্যে শতকরা ১৩ ভাগ শিশু। জুলাই বিপ্লবে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা তদন্তে জাতিসংঘ গঠিত ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে এসব ভয়াবহ তথ্য উঠে এসেছে।

বুধবার বাংলাদেশ সময় আড়াইটায় জেনেভায় জাতিসংঘ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে হত্যাকাণ্ডসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে শেখ হাসিনার সরাসরি জড়িত থাকার প্রমাণ তুলে ধরে বলা হয়, একজন পদস্থ কর্মকর্তা সাক্ষ্য দিয়ে বলেছেন, ১৯ জুলাই নিরাপত্তা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের এক বৈঠকে নির্দেশ দিয়ে বলেন, বিক্ষোভের মূল হোতা এবং যারা সমস্যা তৈরি করছে, তাদের হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলো। ৪ আগস্ট সকালে এবং সন্ধ্যায় নিরাপত্তা বাহিনীর শীর্ষ কর্তাব্যক্তিদের নিয়ে জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের দুটি বৈঠক করেন। বৈঠকে যেকোনো মূল্যে বলপ্রয়োগের মাধ্যমে ৫ আগস্টের ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি পণ্ড করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

প্রতিবেদনে জুলাই বিক্ষোভের সময়ে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড এবং চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাকে মানবতাবিরোধী অপরাধ বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছে।

জুলাই বিক্ষোভ দমনে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযান পরিচালনায় রাজনৈতিক নেতৃত্বের ভূমিকার কথা তুলে ধরে প্রতিবেদনে বলা হয়, একজন শীর্ষ কর্মকর্তা তার দেওয়া সাক্ষ্যে বলেন, বিক্ষোভ দমনে যাবতীয় নির্দেশ আসত রাজনৈতিক নেতাদের কাছ থেকে। ১৮ জুলাই অনুষ্ঠিত কোর কমিটির এক বৈঠকে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বিক্ষোভ দমনে প্রাণঘাতী শক্তি প্রয়োগের নির্দেশ দেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিক্ষোভকারীদের দমন এবং গণগ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, সেনাবাহিনী এবং ডিজিএফআইসহ অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থার পদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।

শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ দমন এবং নির্বিচারে আটকের উদ্দেশ্যে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করা হয়েছিল বলে জাতিসংঘের এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *