সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫, ০২:৩৩ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
বিএনপির দুপক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ ছাত্রদল কর্মীর মৃত্যু মহেশখালীতে প্রয়াত সাংবাদিক শফিকুল্লাহ খাঁনের ৪র্থ মৃত্যুবার্ষিকীতে স্মরণসভা নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে বিজিবি’র অভিযানে ১ লক্ষ ২০ হাজার ইয়াবাসহ আটক ১ !! উখিয়ায় দিনদুপুরে চাঞ্চল্যকর চুরি: সহকারী শিক্ষকের ঘর থেকে ৪.৫ লক্ষ টাকা ও ৩৩ লক্ষ টাকার স্বর্ণালংকার লুট টেকনাফে বাকপ্রতিবন্ধী আলমগীরকে গুলি করে হত্যা, মূলহোতা নুরুল আলম ডাকাত গ্রেফতার আলীকদম সেনা জোনের অভিযানে জেএসএস (মূল)-এর ৯ সন্ত্রাসী আটক, অস্ত্র ও সরঞ্জাম উদ্ধার পাহাড়ি ঝর্ণার সৌন্দর্য দেখতে গিয়ে প্রাণ হারালো তরুণ মেহরাব: দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে প্রয়োজন কঠোর পর্যটন নীতিমালা উখিয়ায় পুলিশের ‘ডেভিল হান্ট’ অভিযান : আওয়ামী লীগের ১০ নেতা-কর্মী গ্রেফতার চকরিয়ায় আ. লীগের ঝটিকা মিছিল, সাঁড়াশি অভিযানে গ্রেফতার ৫৫ রোহিঙ্গাদের জন্য সুইডেনের ২.১ মিলিয়ন ডলার অনুদান ঘোষণা

রাজেশ আছে রাজার হালে

লোক দিয়ে টাকা তুলে গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়ীর আইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক

রামু থানার ওসি, নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ওসি, গর্জনীয় পুলিশ ফাঁড়ীর আইসি এই তিন জনের সমন্বয়ে রামু-নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার চোরাই পথে আসা গরু, মাদক, সোনা ও সুপারি কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন বাজার সয়লাব হয়ে গেছে। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার জাইল্যা ছড়ি, লেমুছড়ি, ফুল তলি, ভাইল্লুইক্ষা হাইয়া, বাম হাতির ছড়া সীমান্ত চোরাইপথে মায়নামার থেকে গরু, মাদক, সোনা ও সুপারি আসা জিনিস নাইক্ষ্যংছড়ি হতে গর্জনিয়া বাজার হয়ে কক্সবাজার জেলার, ঈদগাঁও বাজার, খরুলিয়া বাজার, খলঘর বাজার সহ বিভিন্ন বাজার ও পয়েন্টে জমা হয়ে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পাচার হচ্ছে। আর বাংলাদেশ থেকে গর্জনিয়া বাজার হয়ে সার, রড, সিমেন্ট, আপেল-কমলা, তেল ও ঔষুধ সহ সহ নিত্যপন্য সামগ্রী চলে যাচ্ছে মায়নামারে। এদিকে চোরাইপণ্য ছাড়া আইনশৃংখলার প্রতি তেমন নজর নেই বলে অভিযোগ এলকাবাসীর। তাই চুরি ডাকাতি সহ সার্বিক আইনশৃখলা অবনতির দিকে বলেও জানান তারা।

বিশেষ করে গর্জনীয় পুলিশ ফাঁড়ীর আইসি এসআই রাজেশ বড়ুয়া আছে রাজার হালে এমনটি অভিযোগ স্থানীয়দের। উক্ত এসআই রাজেশ ক্যাশিয়ার হিসাবে স্থানিয় তিতারপাড়া এলকার সোহেলকে ব্যবহার করে। আবার প্রত্যেক ওয়ার্ডে ঙ্গ জন করে লোক আছে যারা গর্জনীয়ার আম পাশের এলাকার কোন পথ দিয়ে কতটি গরু আসতেছে, মাদক আনছে কে, সুপারি বা সিগারেট আনছে কে তা নজরদারী করে তারা হিসাব দেয় সোহেলকে। সোহেল তাদের হিসাব মতে চোরাকারবারীদের সাথে যোগাযোগ করে টাকা আদায় করে রাজেশকে দিয়ে দেয়। এছাড়া বিএনপি সমর্থিত জনৈক সাজ্জাদ সার্বিক দেখভালের দায়িত্ব। সাজ্জাদের লোকজন নিয়ন্ত্রণ করে সার , রড, সিমেন্ট, আপেল কমলা , তেল সহ নিত্যপণ্য তার কাছ তেকে নিয়েই মায়নামারে পাছার করতে হয় পাছারকারীদের। নইলে কোন পণ্যই মায়নামারে পাচার করতে দেয়না তাদের জানা মতে। আর এ সবই মাসিক হিসাবে টাকা দিতে হয় এসআই রাজেশকে। আর এতেই রাজেশ আছে রাজাল হালে বলেন এলাকার সচেতন মানুষ।

গর্জনিয়া এলকার আবু তাহের বলেন, এসআই রাজেশ চারদিকে লোক লাগিয়ে দিয়ে অফিসে বসে থাকে আর ঘুমায়। নিয়মিত টাকা তার কাছে পৌছে যাচ্ছে। ডাকাত শাহিনের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে সে এখন সত্যিই রাজার হালতে দিন কাটাচ্ছে।

বাজারের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী জানান, কয়েকজন লোক ছাড়া বাজারের কোন মালই সাজ্জাদের কথা ছাড়া চোরই কারবারীরা নেয়না। এসব পুলিশের নির্দেশে হচ্ছে। চুরি ডাকাতি বা অপরাধীর বিষয়ে তার কোন মাথা ব্যাথা নেই। সে আছে চোরাই মাল থেকে টাকা আদায়ে। শুনেছি এই টাকা রামুর ওসিকে দিতে হয়।

রামুর কাউয়ার কুপের শিক্ষক নজির আহমদ বলেন, রামু থানায় ওসি হিসাবে ইমন কান্তি আসার পর থেকে আইন শৃংখলা অবনতি হচ্ছে। কোন অপরাধিকে সে আটক করছেনা। এলাকায় চুরি ডাকাতি ও মাদকে ভরে গেছে এখন। লোক দেখানো কিছু ছিচকে অপরাধি ধরে নিজেকে হয়তো অনেক কিছু মনে করছে। অথচ রামু হয়েই চোরাই পথে গরু, মাদক, সিগারেট, স্বর্ন সহ অনেক কিছু পার হচ্ছে। পুলিশ এদের কাছ থেকে মাসিক মাসোহারা আদায় করে বলে শুনেছি।

একই এলাকার কবির আহমদ বলেন, সাবেক এসপি রহমত উল্লাহর ক্যাশিয়ার ইমন কান্তি এখনো নানা অপরাধে নিয়োজিত। বিশেষ করে মাদকের সাথে তার সম্পর্ক বেশী।

গর্জনিয়ার আনোয়ার বলেন, পুলিশ কেন ডাকাত শাহিনকে আটক করছেনা তা কি কেউ জানার সুযোগ আছে? ছোট্ট গর্জনিয়া বাজারের ডাক কেন ২৫ কোটি টাকা হয় পুলিশ কি তা জানেনা? এসআই রাজেশকে এখান থেকে সরিয়ে একজন দেশ প্রেমিক পুলিশ অফিসারকে এখানে পাঠালে হয়তো দেখা যাবে কি হচ্ছে গর্জনিয়া।

উল্লেখ যে, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের দোসর এমপি কমলের সন্ত্রাসী বাহিনীর প্রধান যুবলীগ নেতা শাহীনুর রহমান শাহীন ওরফে ডাকাত শাহীনের নিয়ন্ত্রণে চলে সীমান্ত চোরাচালান । তাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ সীমান্ত এলাকার লোকজন। তার বাহিনীর ভয়ে কেউ মুখ খোলার সাহস পাচ্ছে না। ফলে বান্দরবানের নাইক্ষংছড়ি ও কক্সবাজারের রামু উপজেলায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছে ডাকাত শাহীন বাহিনী।

রামু উপজেলার দুই বিচ্ছিন্ন ইউনিয়ন গর্জনিয়া ও কচ্ছপিয়াসহ পার্বত্য বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিন অবৈধভাবে আসছে শত শত মিয়ানমারের গরু – মহিষ। যাচ্ছে চাল, ডাল, তেল, ওষুধ ও বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রী। সীমান্ত লাগোয়া এই জনপদ এখন ইয়াবা, আইস, অস্ত্র ও স্বর্ণ চোরাচালানের নিরাপদ রুট।

আইন প্রয়োগকারী সংস্থার দেওয়া তথ্যানুযায়ী দেশের শীর্ষ সন্ত্রাসী, অস্ত্র কারিগর, অস্ত্র প্রশিক্ষকসহ অপরাধী চক্রের বিচরণ ক্ষেত্র এসব পাহাড়ি জনপদ। শুধু তাই নয়, রোহিঙ্গা বিদ্রোহী ও আরাকান আর্মির সঙ্গে সখ্যতা গড়ে পুরো সীমান্ত এলাকাকে অশান্ত করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে তারা। এসবের নেতৃত্ব দিচ্ছে রামু কচ্ছপিয়ার সন্ত্রাসী জামসেদ ও গর্জনিয়ার ডাকাত সর্দার শাহীন।

এ বিষয়ে , গর্জনিয়া পুলিশ ফাঁড়ির আইসি এসআই রাজেশ বড়ুয়া বলেন, আমি ডাকাত শাহিনকে চিনিনা। গর্জনীয়ার সাথে মায়নামারের কোন সীমান্ত নাই তাই এদিকে কোন চোরাছালান হয়না। আর আমি কারো কাছে টাকা নিইনা।

ডাকাত শাহিনের অপরাধকর্মের আর চোরাচালান ব্যাপারে জানতে চাইলে নাইক্ষ্যংছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ মাসরুরুল হক অনেকটা ইতস্তত বোধ করেন। চলমান মামলা থাকার পরও ডাকাত শাহিনকে কেন আটক করা হচ্ছে না এমন প্রশ্ন করা হলে ওসি এর কোন সদুত্বর দিতে পারেননি। তবে অপরাধীদের আটকের ব্যাপারে পুলিশ তৎপর রয়েছে বলে জানান। আর চোরাচালান বিষয়ে সীমান্ত রক্ষিরাই ভাল জানবে।

এ বিষয়ে, রামু থানার অফিসার ইনচার্জ ইমন কান্তি বলেন, ডাকাত শাহিনের ২০ টি মামলা আছে কয়েকটির ওয়ারেন্ট আছে। তাকে আটকের জন্য বেশ কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। খবর পেলেই অভিযান চালাবো। তাকে আটকের জন্য পুলিশ সর্বাত্বক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। যে কোন সময় তাকে আটক করা হবে। আর চোরাকারবারিদের থেকে টাকা আদায়ের প্রশ্নই আসেনা।

এ বিষয়ে জেলা পুলিম সুপারের মিডিয়া উইং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ট্রাফিক জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, শাহিন বিষয়ে পুলিশ অবগত আছে। মামলা থাকলেও যতটুকু জানি সব মামলায় জামিন আছে। তারপরও এলাকার আইন শৃংখলার সার্থে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে আটক করা হবে। চোরকারবারীদের নিকট থেকে পুলিশের কেউ টাকা নিয়েছে এমন তথ্য পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *