মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ০২:৩৫ অপরাহ্ন

বিধানের বিশ্বস্ত ক্যাশিয়ার সরওয়ার ও আব্বাস

এলএ শাখার উমেদার বিধানের সম্পদের পাহাড়

নিজস্ব প্রতিবেদক:
কক্সবাজার ভূমি অধিগ্রহণ শাখায় সকল সার্ভেয়ার নিয়ন্ত্রণ করেন বিধান কান্তি রুদ্র। সে সার্ভেয়ারসহ বড় বড় কর্মকর্তাদের কমিশনের টাকা গ্রহন করেন। তার সাথে আরও দুই জন কাজ করে তারা হলেন বিধানের সহকারী ক্যাশিয়ার পেকুয়ার দালাল সরওয়ার ও মহেশখালী দালাল আব্বাস। বিধানের কমিশনের কোটি কোটি টাকার গ্রহন করেছেন বিশ্বস্ত ক্যাশিয়ার সরওয়ার ও আব্বাস। তারা টাকা জমা রাখার বিশ্বস্ত স্থান শহরের জিয়া কমপ্লেক্স এর নিচে একটি টেইলার্সে।

অনুসন্ধানে প্রতিবেদকে কাছে যে , ঘুষ ও কমিশনের টাকা নিয়ে কক্সবাজার শহরে বিধান কান্তি রুদ্র নিজ নামে জেলগেইট সংলগ্ন বিকাশ বিল্ডিং পাশে ০.১০০০ একর, যার দলিল নং- ৯৬২/২৩, হক টাওয়ারের পিচনে ০.০৬০০ একর যার, দলিল নং- ২৬৯০/২৩ এবং পিবি আই অফিস পাশে যার দলিল নং- ৭৫০৩। আরও নামে বেনামে বিভিন্ন জায়গা রয়েছে।

অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, তার নিজ নামে ৩টির নতুন টি আর এক্স নোহা গাড়ি ও কলাতলীতে ৩টি ফ্ল্যাট রয়েছে। তার একাদিক বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে শেয়ার রয়েছে।

সে মুন্সি থেকে কক্সবাজার এলএ শাখার বড় উমেদার, তার যে এত ক্ষমতা সবার নজরে কখন পাস হবে জমি অধিগ্রহণের চেক। তার আগেই নিয়ে যাবেন গোপনীয় চেক বইয়ের এডবাইজার জমির মালিকের বাড়ি নিয়ে হাতিয়ে নেন কমিশনের ৩৪ লাখ টাকা।

প্রতিবেদকের হাতে একটি ভিডিও এসেছে। ভিডিওতে দেখা যায়-কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ শাখা-১ (অনিয়োগপ্রাপ্ত) উমেদার বিধান রুদ্র ও তার সহযোগীরা এলএ শাখার একটি সরকারি চেক, নথিসহ কমিশনের টাকার জন্য বৈঠক করতে দেখা যায়। যেখানে সরকারি নথি পর্যালোচনা করতেও দেখা যায়। যা থেকে প্রতিয়মান হয় যে তিনি কমিশনের টাকার জন্য গোপনে এ কাজ করেছেন।

সম্প্রতি ভিডিওতে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন ভুক্তভোগীরা তাকে উদ্দেশ্যে নানা রকম অভিযোগ তোলেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পেকুয়া স্টেশনে জমি অধিগ্রহণের টাকা উত্তোলন করতে গেলে অনেক হয়রানির শিকার হয়। পরে সরওয়ার ও বিধান মিলে একটি চুক্তির মাধ্যমে ৯ লক্ষ ৪১ হাজার একটি চেক উঠে। পরে কর্তাদের জন্য ১ লক্ষ টাকা কেটে নেন। ৮ লক্ষ ৪১ হাজার টাকার চেক জমা হয়। পরে ৮ লক্ষ ৪১ হাজার থেকে কমিশন বাবদ ৫০℅ অর্থাং ৪ লক্ষ ২০ হাজার টাকা সরওয়ার ও বিধান কান্তি রুদ্র নিয়ে নেন। বাকি জমি অধিগ্রহণের টাকা তুলার জন্য গেলে বিভিন্ন অজুহাতে ঐ টাকা গুলো পাবে না বলে হুমকি দেন তারা।

নাহিদুল ইসলাম বলেন, আদালতের নিষেধাজ্ঞা তাকার শর্তেও বিধান ও সার্ভেয়ার শওকত চাকমাসহ মিলে গত ৩ মার্চ অবৈধ ভাবে চেক দিয়ে দেন।

প্রতিবেদকের পেইজবুক পোস্ট কমেন্টে তিনি আরও বলেন, – নুর নাহারের চেক বাসায় নিয়ে গোপনীয় চেক এডভাইজারসহ দেখাচ্ছে কমিশনের টাকায় জন্য বিধান, অফিসের এত গোপনীয় চেক এডভাইজার বই একজন উমমেদার কিভাবে পাবলিকের বাসায় নিয়ে যায়। বিধান ছেলেটা অফিসের কথা বলে ৩৪ লাখ টাকা নিয়েছে।

ইলিয়াসমিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক মোস্তাক জানান-রেলের জমি অধিগ্রহণ বাবদ চেক পাস করে দিবে বলে ১০ লাখ টাকা নিয়েছেন বিধান। নেয়ার সময় বলেছিলেন এটা বড় কর্তাদের দিতে হবে। অন্য অজুহাত দেখিয়ে একটি টেইলার্স থেকে আরও ২১ লাখ টাকা নেন। যে মামলায় আপত্তি ছিল।

১৯০০ খতিয়ানের রোয়েদাদ নং-৬৭,৬৮,৭৯,৭০,৭১,৭৯,৮১,৮৩,৮৪,৮৫ এবং ৮৬। খতিয়ান দাগ নং ১৩৪৬৪,১৩৪৬৫,১৩৪৬৬,১৩৪৬৭,১৩৪৬৮,১৩৪৭৮,১৩৪৮৯,১৩৪৯০,১৩৪৯২,১৩৪৯৩ এবং ১৩৪৯৫ দাগের মোট ১৮কোটি টাকার চেকের কমিশন বাবদ ১ কোটি ৯৫ লাখ টাকা গ্রহণ করেন বিধানের নেতৃত্বে একটি চক্র। সব মামলায় আপত্তি ছিল।

এলও মামলা নং-৪১৬১৭ এ মামলার ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে ১৮ লাখ কমিশন নেন। বিমানবন্দর অধিগ্রহণের ৫৮নং রোয়েদার ভুক্তভোগীদের থেকে ১৬ লাখ টাকা হাতিয়েছেন। অধিগ্রহণকৃত ১৯০০ খতিয়ানের রোয়েদাদ নং-৬৭,৬৮,৭৯,৭০,৭১,৭৯,৮১,৮৩,৮৪,৮৫ এবং ৮৬। খতিয়ান দাগ নং ১৩৪৬৪,১৩৪৬৫,১৩৪৬৬,১৩৪৬৭,১৩৪৬৮,১৩৪৭৮,১৩৪৮৯,১৩৪৯০,১৩৪৯২,১৩৪৯৩ এবং ১৩৪৯৫ দাগের মোট ১৮কোটি টাকার চেকের কমিশন বাবদ ১ কোটি ৯৫ লাখ টাকা গ্রহণ করেন বিধানের নেতৃত্বে একটি চক্র। মামলায় আপত্তি ছিল।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ঘুষকাণ্ডে জড়িত এ উমেদার বিধান রুদ্র এলএ শাখারকৃত দুর্নীতি অপরাধ কর্মের দায় এড়াতে এবং অপরাধ ঢাকতে আইনজীবী সহকারী সমিতির কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে ওই সমিতিরির একজন নিয়মিত সদস্য হিসেবে কার্ড সংগ্রহ করেছে বলেও জানাগেছে৷

অতচ, এলএ শাখার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানাগেছে দীর্ঘ বছর ধরে এলএ শাখায় কর্মকালীন সময়ে একদিনের জন্য ও আইনজীবী সহকারী সমিতির অধীনে কিংবা কোন আইনজীবির অধীনে আইন সংশ্লিষ্ট কোন মামলা মোকাদ্দামায় কারো মোয়াক্কেলের বিষয়ের কার্যধারায় তার কোন ধরনের সংশ্লিষ্টটার অস্তিত্ব ছিলনা বলে দাবী করেন৷

এ ব্যাপারে সচেতন স্থানীয় মহল অবিলম্বে তার অপরাধের বিষয়ে তদন্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতাই এনে তার অবৈধ উপায়ে অর্জিত অর্থ ও সম্পদের উৎসের ঘটনায় অনুসন্ধানপূর্বক আইননানুগ কার্যক্রম পদক্ষেপ গ্রহন করার জন্য দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)সহ সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করা হচ্ছে৷

উমেদার বিধানের অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, নামে বেনামে ৪থেকে ৫টির মত নতুন টি আর এক্স নোহা গাড়ি রয়েছে, শহরের মেইন রোডের আলগণি হোটেলের পশ্চিম পার্শে অবস্থি ফ্রোটের দোকান, শহরের বাইপাস সড়কের বিকাশ বিল্ডিং এলাকায় বিপুল অংকের টাকায় ক্রয়কৃত জমি রয়েছে৷ এবং শহরের বিভিন্ন স্থানে নামে বেনামে জমিখরিদ করেছে মর্মে জানতে পেরেছি৷

ভূমি অর্ধিগ্রহণ শাখার ক্যাশিয়ার আলোচিত এ উমেদার বিধান রুদ্রকে বাঁচানোর জন্য সার্ভেয়ারগণ এবং চিন্বিত দালাল চক্রের সক্রিয় সদস্যরা মরিয়া হয়ে কাজ করে যাচ্ছে৷ এবং তাদের লেলিয়ে দেয়া সহযোগীরা সংবাদপত্রের প্রতিনিধিদেরকে প্রাণে মারার হুমকি দিয়ে বেড়াচ্ছে৷

বক্তব্যের জন্য তাকে মুঠোফোনে যোগাযোগের করা হলে বিধান রুদ্র অভিযোগ অস্বীকার করে হুমকি দিয়ে প্রতিবেদককে বলেন,এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন, আপনি নিউজ করে দেন।

এ ব্যাপারে অতিরিক্ত জেলা প্রাশসক (রাজস্ব) নিজাম উদ্দিন আহমেদ জানান, এলএ শাখায় উমেদার বিধান নামক এখন কেউ নেই। তবে এলএ শাখার কর্মকর্তারা দালালে যোগসাজশে মিলে কোন ঘুষ লেন করে থাকলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো.সালাহ্উদ্দীন বলেন, দালাল ও এলএ শাখার কোন কর্মকর্তা ঘুষ ও কমিশন লেনদের প্রমান পেলে তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *