মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ০৩:১০ অপরাহ্ন

মিনা প্রাঙ্গণে অবস্থান করছেন লাখ লাখ হাজি

পবিত্র হজ পালন করতে সৌদি আরবের মক্কায় সমবেত হয়েছেন বিশ্বের লাখ লাখ মুসলিম। তাঁরা আজ বুধবার ইহরাম বেঁধে সারা দিন মিনায় অবস্থান করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার থেকেই অনেকে মিনায় যাওয়া শুরু করেছেন। এর মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে হজের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম।

আগামীকাল বৃহস্পতিবার হজের মূল কার্যক্রম হিসেবে হজযাত্রীরা আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করবেন। হজের অংশ হিসেবে হজযাত্রীরা ৮ থেকে ১২ জিলহজ মিনা, আরাফাত, মুজদালিফা ও মক্কায় অবস্থান করবেন। এরপর সাঈ, তাওয়াফ ও দমে শোকর আদায়ের মাধ্যমে পাঁচ দিনব্যাপী হজের কার্যক্রম শেষ হবে।

সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এবছর বিভিন্ন দেশের প্রায় ১৫ লাখ মুসলিম হজ পালন করছেন।

গত বছর ৫১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপামাত্রায় এক হাজার তিন শয়ের বেশি হাজি মারা গেছেন যাদের অধিকাংশই অনুমোদন ছাড়াই সেখানে গিয়েছিলেন। তাই এবার অনুমোদন ছাড়া মিনা ও আরাফাতের ময়দানে প্রবেশে কঠোরতা আরোপ করা হয়েছে।এবছরের মক্কার তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি বা এর বেশি হওয়ায় বিশেষ সতর্কবার্তা দিয়েছে সৌদি আরবের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এজন্য হজযাত্রীদের ছাতা ছাড়া সরাসরি সূর্যের তাপের নিচে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।

তা ছাড়া সকাল ১০টা বিকাল ৪টা পর্যন্ত তাবুতে অবস্থান করতে বলা হয়েছে। হজের স্থানে চলাচলের সময় সবাইকে ছাতা ব্যবহার, নিয়মিত পানি পান ও তাপ শোষণ কমাতে হালকা রঙের পোশাক পরতে বলা হয়েছে।নিয়ম অনুযায়ী, গতকাল (সৌদি সময় অনুযায়ী ৭ জিলহজ) সন্ধ্যার পর মক্কার পবিত্র মসজিদুল হারাম বা নিজ আবাসন থেকে হজের নিয়ত করে প্রায় ৯ কিলোমিটার দূরে মিনার উদ্দেশে রওনা হন হজযাত্রীরা। তাঁদের পরনে সেলাইবিহীন দুই টুকরা সাদা কাপড়। ৮ জিলহজ জোহরের নামাজের আগে মিনায় পৌঁছা সুন্নত।

সেখান পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় ও রাতযাপন করাও সুন্নত। তাই হাজিদের সবার জন্য আলাদা তাঁবু স্থাপন করা হয়েছে। সেখানে তাঁরা তালবিয়া, জিকির, তিলাওয়াত ও দোয়ায় মগ্ন থেকে সারা দিন অবস্থান করবেন।আগামীকাল বৃহস্পতিবার ফজরের নামাজ পড়ে প্রায় ১৪ কিলোমিটার দূরে আরাফাতের ময়দানে যাবেন হজযাত্রীরা। সেখানে সূর্যাস্ত পর্যন্ত হাজিদের ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখর হবে পুরো ময়দান। এখানে অবস্থান করে তিলাওয়াত, জিকির, নামাজ, খুতবা শোনাসহ ইবাদত-বন্দেগির মধ্য দিয়ে হজের মূল কার্যক্রম সম্পন্ন হবে। আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করা হজের আবশ্যিক বিধান। তাই বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন হজযাত্রীদের কিছু সময়ের জন্য হলেও আরাফাতের ময়দানে নেওয়া হয়।

আরাফাতের ময়দান থেকে সূর্যাস্তের পর মাগরিবের নামাজ আদায় না করে আট কিলোমিটার দূরে মুজদালিফার দিকে যাবেন হজযাত্রীরা। সেখানে পৌঁছে মাগরিব ও এশার নামাজ এক আজানে ভিন্ন ইকামতে আদায় করবেন। এখানে খোলা আকাশের নিচে রাত যাপন করবেন তাঁরা। এরপর মিনার জামারায় (প্রতীকী) শয়তানকে নিক্ষেপের জন্য পাথর সংগ্রহ করবেন।

পরদিন হাজিরা মিনায় বড় শয়তানের উদ্দেশে পাথর নিক্ষেপ করবেন, কোরবানি দেবেন এবং মাথা মুণ্ডন বা ন্যাড়া করবেন। এরপর মক্কায় গিয়ে কাবাঘর তাওয়াফ ও সাফা-মারওয়ায় সাঈ করবেন। তাওয়াফ ও সাঈ শেষে আবার মিনায় ফিরে দুই দিন (১১-১২ জিলহজ) অবস্থান করবেন। সেখানে প্রতিদিন তিনটি শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করবেন তাঁরা। প্রতিটি শয়তানকে সাতটি করে পাথর মারতে হয়।

এ বছর বাংলাদেশ থেকে হজ করতে সৌদি আরব গেছেন ৮৭ হাজার ১৫৭ জন। গত ২৯ এপ্রিল থেকে ৩১ মে পর্যন্ত বিমান বাংলাদেশ, সৌদি এয়ারলাইনস ও ফ্লাইনাস এয়ারলাইনসের ২২৪টি ফ্লাইটে তাঁরা সৌদি আরবে যান। হজযাত্রীদের ফিরতি ফ্লাইট আগামী ১০ জুন থেকে শুরু হয়ে ১০ জুলাই পর্যন্ত চলবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *