বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:১০ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
স্ত্রী-সন্তানসহ বেসিক ব্যাংকের বাচ্চুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা খাগড়াছড়িতে অস্ত্রসহ ইউপিডিএফ কর্মী আটক চিকিৎসককে মারধর, দ্বিতীয় দিনের মতো কক্সবাজার সদর হাসপাতালে কর্মবিরতি মাদক কারবারির ভবন জব্দ করল দুদক ঢাকাসহ চার বিভাগে অতিভারী বর্ষণ, চট্টগ্রামে ভূমিধসের শঙ্কা ভারতে পালানোর সময় সাবেক এমপি ফজলে করিম চৌধুরী আটক ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবীতে কক্সবাজার সার্ভে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের স্মারকলিপি প্রদান উখিয়ায় রোহিঙ্গা শিবিরে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত দুই কক্সবাজারে চিকিৎসককে মারধর: সরকারিতে সেবা বন্ধ হলেও চালু আছে বেসরকারি হাসপাতালে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কমিটি বাতিল

উখিয়ায় উজার হচ্ছে বন, টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন বন কর্মকর্তারা

নিজস্ব প্রতিবেদক:

কক্সবাজারের উখিয়ার ইনানী রেঞ্জের আওতাধীন সংরক্ষিত বনের জায়গা দখল করে অবাধে নির্মাণ করা হচ্ছে ঘর-বাড়ি। এতে উজাড় হচ্ছে বনাঞ্চল, বিপন্ন হচ্ছে পরিবেশ। এমন চিত্র দেখা গেছে জালিয়াপালং ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে।

সংরক্ষিত বনভূমিতে বাড়ি নির্মাণে সহযোগিতা করার অভিযোগ উঠেছে বন বিভাগের কিছু কর্মকর্তা ও হেডম্যানদের বিরদ্ধে। অনিয়মের তথ্যের ভিত্তিতে অনুসন্ধানে নেমে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য।

গত ৩০ জানুয়ারি অনুসন্ধানে গিয়ে দেখা মিলে ইনানী রেঞ্জের ছোয়ানখালী বিট অফিসের দক্ষিণ পূর্বপাশে সংরক্ষিত বনভূমি উজাড় করে বাড়ি নির্মাণের দৃশ্য। গত পাঁচ বছরে এসব গ্রামে নতুন নতুন বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে বলে জানা যায়। তাদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে বন বিভাগের লোকজনের সঙ্গে যোগসাজশে ঘর তোলার সুযোগ করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ছোয়ানখালী এলাকায় দিনদুপুরে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালি উত্তোলনের দৃশ্যও চোখে পড়ে। তবে কে বা কারা এসব বালি উত্তোলন করছে সে বিষয়ে কেউ মুখ খুলেনি।

বিষয়টি ইনানী রেঞ্জ কর্মকর্তাকে জানালে বিট কর্মকর্তাকে পাঠিয়েছেন বলে জানায়। ছোয়ানখালী এলাকায় আধাপাকা দেয়ালের ঘর নির্মাণ করেছে ছলিম উল্লাহ নামের এক ব্যক্তি। ছলিম উল্লাহর মতো অনেকে আধা পাকা,মাটির ঘর নির্মাণ করেছে বনভূমি উজাড় করে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জানায়,বনভূমি রক্ষার দায়িত্ব যাদের দেওয়া হয় তারাই বনের জায়গা বিক্রিতে জড়িত। তার মধ্যে যেকোনো বনভূমি দখল ও বাড়ি নির্মাণ করতে গেলে হেডম্যান হাবিব উল্লাহ কে ম্যানেজ করতে হয় বলে জানায় তারা। তাকে যারা ম্যানেজ করবেনা তাদের বিরুদ্ধে এ্যাকশনে যায় বলে জানায়।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, পাহাড়ে সংরক্ষিত বনভূমিতে ঘর করতে হলে প্রথমে মিয়া(বিট কর্মকর্তা),তারপর হেডম্যান সহ প্রভাবশালীদের কে ম্যানেজ করতে হয়। বিল্ডিং করতে ৫০হাজার টাকা ও মাটির ঘর করতে ৪-৫হাজার টাকা পর্যন্ত দিতে হয়। এসব অর্থ প্রদানের পর ঘর নির্মাণ করতে হয় বলে জানায় তারা।

একই অভিযোগ জালিয়াপালং বিটের আওতাধীন বিভিন্ন সংরক্ষিত বনভূমি নিয়েও। ৩১ জানুয়ারি সরেজমিনে দেখা মিলে পাহাড় কেটে বনভূমি দখল করে শতাধিক ঘরবাড়ি নির্মাণ করার দৃশ্য। জুম্মাপাড়া কামাল সওদাগরের দোকানের পূর্বপাশে বার্মাইয়া পাড়া এলাকায় সামাজিক বনায়নের জায়গায় এসব ঘর নির্মাণ করতে গিয়ে কেটে ফেলা হয়েছে অসংখ্য বনের গাছ। যেখানে পরিবেশ রক্ষার উদ্যোগ নিয়ে গাছ রোপণ করে বাগান করা হয়েছে সেখানে সামাজিক বনায়নে চলছে পরিবেশ ধ্বংসের কর্মযজ্ঞ।

বন উজাড় করে ঘরবাড়ি নির্মাণের বিষয়ে জানতে চাইলে জালিয়াপালং বিট কর্মকর্তা জানায়,সামাজিক বনায়নের গাছ কেটে ঘর নির্মাণের বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে আছে। খুব তাড়াতাড়ি অভিযান হবে বলে জানায় তিনি। স্থাপনা নির্মাণ নিয়ে সংবাদ প্রকাশের এক সপ্তাহ পরেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি কেনো সে বিষয়ে জানতে চাইলে খুব শীঘ্রই সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান বনবিভাগের এ কর্মকর্তা।

ছোয়ানখালী বিটের সংরক্ষিত বনভূমিতে স্থাপনা নির্মাণ ও জালিয়াপালং বিটের বাগান উজাড় করে ঘর নির্মাণ এবং সংবাদে প্রকাশিত মিয়াজী পাড়া টাওয়ারের পশ্চিমে খালেকের অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের বিষয়ে জানতে চাইলে ইনানী রেঞ্জ কর্মকর্তা বলেন, “ছোয়ানখালীর বিষয়ে বিট কর্মকর্তাকে সব এলাকা ঘুরে জানাতে নির্দেশ দিয়েছি। আর জালিয়াপালংয়ের বনভূমি উজাড় ও স্থাপনা নির্মাণের বিষয়ে আপনাদের মাধ্যমে জানলাম। আমি খোঁজ নিচ্ছি,কারো গাফেলতি থাকলে তাদের ব্যাপারেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”