বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:৪২ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
কক্সবাজারের রামুতে সীমান্ত দিয়ে অবৈধ পথে আসা বার্মিজ গরু চোরাচালানে রামু থানা পুলিশের ঘুষ লেনদেনের একটি ভিডিও প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। যেটি ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ২৪ এপ্রিল সোমবার দুপুর সাড়ে ৪টার দিকে রামু উপজেলার কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের উখিয়ারঘোনা মুড়াপাড়া মূল সড়কের মোড়ে দাড়িয়ে মায়ানমারের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত দিয়ে আসা গরু চোরাচালানের প্রতি গাড়ি থেকেই ঘুষ নিতে দেখা যায় রামু থানা পুলিশের কয়েকজন সদস্যকে। পেশাদারী দায়িত্বপালনকালে স্থানীয় সংবাদকর্মীদের মোবাইলে ঘুষ গ্রহনের এ দৃশ্য ধরা পড়ে।
ভিডিওতে দেখা যায় গরুর গাড়িতে থাকা এক ব্যক্তি গাড়ি থেকে নেমে রামু থানা পুলিশের একজন কনস্টেবলকে টাকা দিচ্ছেন। তার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন রামু থানার উপ-পরিদর্শক(এস.আই) আবু হাসনাত মোহাম্মদ মাজেদুল হক। ভিডিওতে দেখা যায়, মাজেদুল গরুর গাড়িগুলোকে দ্রুত চলে যাওয়ার জন্য বলছেন। ঘটনাস্থলে উপ-পরিদর্শক মাজেদুল হকের সাথে আরও কয়েকজন কনেস্টবল তার সাথে ছিলেন।
ঐসময় মায়ানমারের গরু চোরাচালানের গাড়িতে থাকা চোরচালানকারীদের নিকট থেকে টাকা ঘুষ নেওয়ার একটি দৃশ্য গোপন ক্যামেরায় ভিডিও করেন সাংবাদিকরা। পরে সাংবাদিকের উপস্থিতি টের পেয়ে সটকে পড়েন পুলিশ সদস্যরা। একইদিন শতাধিকের অধিক মিনি পিকাপযোগে মায়ানমারের চোরাচালানের গরু রামু উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় ঢুকতে দেখা গেছে।
দিনদুপুরে রামু থানা পুলিশের এমন ঘুষ লেনদেনের বিষয়ে জানতে চাইলে রামু থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ারুল হোসাইন মুঠোফোনে জানান, ভিডিও দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মাজেদুলের ডিউটি ছিলো। এখানে পেশাদারিত্বের সাথে কারো দায় আমি নিবো না। যদি এরকম হয়ে থাকে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গরু চোরাচালান রোধে পুলিশের যেখানে শক্ত ব্যবস্থা নেওয়া উচিৎ সেখানে দিনদুপুরে সড়কে দাঁড়িয়ে ঘুষ লেনদেনের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছেন রামু উপজেলা সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সভাপতি মাস্টার আলম। তিনি বলেন, যেখানে কিছুদিন আগেই গরু চোরাচালানের ঘটনায় একজন নিহত হয়েছে সেখানে পুলিশের উল্টো ঘুষ নেওয়া হতাশাজনক। সরকারের উচিৎ অনতিবিলম্বে গরু চোরাচালান বন্ধ করা।
এব্যাপারে রামু থানার উপ-পরিদর্শক(এস.আই) আবু হাসনাত মোহাম্মদ মাজেদুল হক ঘুষ গ্রহনের বিষয়টি এড়িয়ে যান।
উল্লখ্য যে বিগত ৬ মাস ধরে নাইক্ষ্যংছড়ি পয়েন্টের মায়ানমার সীমান্ত দিয়ে দৈনিক হাজার হাজার গরু পাচার হচ্ছে রামু উপজেলাসহ সারাদেশে। কয়েকদিন আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সীমান্তবর্তী কচ্ছপিয়া ইউনিয়ন পরিষদ থেকে গরুর জন্য দেওয়া একটি প্রত্যয়ন পত্র ভাইরাল হয়। এর আগে ৯ এপ্রিল রামু উপজেলার কাউয়ারখোপে বিজিবির সাথে গরু চোরাচালানকারীদের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয় এক গরু চোরাচালানকারী। এ ছাড়াও গরু চোরাচালানকে ঘিরে পথে পথে ডাকাতি, লুট, চিনতাই ও চাঁদাবাজীর ঘটনায় রামুর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারন করেছে।