বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৫৪ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
১০ম গ্রেডে বেতনের দাবীতে কক্সবাজার সার্ভে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের স্মারকলিপি প্রদান উখিয়ায় রোহিঙ্গা শিবিরে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত দুই কক্সবাজারে চিকিৎসককে মারধর: সরকারিতে সেবা বন্ধ হলেও চালু আছে বেসরকারি হাসপাতালে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কমিটি বাতিল কক্সবাজারের পুলিশ এখন থেকে ইনসাফের সাথে কাজ করবে- পুলিশ সুপার মোঃ রহমতুল্লাহ সরকার পরির্তনের ফলে টেকনাফ এর শাহপরীরদ্বীপে ভূমিদস্যুদের কবল থেকে চিংড়ি ঘের ও চাষাবাদের জমি অপদখল রক্ষা পেতে যৌথ বাহিনী বরাবরে আবেদন করেছেন ক্ষতিগ্রস্তরা ডিসি নিয়োগ নিয়ে সচিবালয়ে হট্টগোল, বাতিল হতে পারে দুই প্রজ্ঞাপন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের অদক্ষ চালকের ভুলে শিশুর মৃত্যু রাজধানী থেকে তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী গ্রেপ্তার আমরা রাষ্ট্রীয় সফরে আসিনি, সরকারের কাছে নিরাপত্তা চাইনি: হাসনাত আবদুল্লাহ

কক্সবাজারের সাংবাদিকতার দিকপাল মোহাম্মদ নুরুল ইসলামের দ্বিতীয় মৃত্যুবাষির্কী আজ

কক্সবাজারের সাংবাদিকতার দিকপাল, কক্সবাজার প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও কক্সবাজার প্রথম সংবাদপত্র দৈনিক কক্সবাজার এর সম্পাদক মোহাম্মদ নুরুল ইসলামের দ্বিতীয় মৃত্যুবাষির্কী বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর)।

২০২১ সালে ৭ সেপ্টেম্বর রাত ৮টা ৪০ মিনিটে চট্টগ্রামের পার্কভিউ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেছিলেন তিনি। সম্পাদক মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম একজন সংগঠক ছিলেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম কক্সবাজারের পেকুয়া মগনামার আশরাফ মিয়া ও খুইল্ল্যা বিবির জ্যেষ্ঠ সন্তান।

১৯৩০ সালের ৬ জুন তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৫৩ সালে কুতুবদিয়া বড়ঘোপ হাই স্কুল থেকে ম্যাট্রিক, ১৯৫৬ সালে সাতকানিয়া কলেজ থেকে এইচএসসি, ১৯৬১ সালে চট্টগ্রাম নৈশ কলেজ (সিটি কলেজ) থেকে বিএ পাস করেন।

১৯৬১ সালে দৈনিক আজাদীর চট্টগ্রাম অফিসে স্টাফ রিপোর্টার হিসাবে তাঁর সাংবাদিকতার জীবনের সূচনা হয়। তখন তিনি স্নাতক এর ছাত্র ছিলেন। ১৯৭২ সালে তিনি বাংলার বাণী’র জেলা প্রতিনিধি, ১৯৭৩-৭৪ সালে আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এনা’র জেলা প্রতিনিধি ছিলেন।

১৯৭৮ সালের ২০ জুলাই সাপ্তাহিক কক্সবাজার নামে কক্সবাজারে প্রথম সাপ্তাহিক পত্রিকা প্রকাশ করেন, ১৯৮০ সালের ১লা মে সাপ্তাহিক স্বদেশবাণী এবং ১৯৯১ সাল থেকে কক্সবাজার এর শীর্ষ নিয়মিত পৈত্রিকা দৈনিক কক্সবাজার প্রকাশ করেন। যে পত্রিকা এখনও নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে।

১৯৭৪ সালে তিনি বিনোদন ম্যাগাজিন প্রিয়তমা নামে একটি সাময়িকীও প্রকাশ করেন। ১৯৭৫ সালে কক্সবাজার প্রেসক্লাব গঠন ও ক্লাবের আহবায়ক ও প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মনোনীত হন মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম। তিনি আট বার কক্সবাজার প্রেসক্লাবের সভাপতি নির্বাচিত হন।

মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন ও ৫৪-এর যুক্তফ্রন্ট আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৫৪ সালে চট্টগ্রাম কলেজের ছাত্র হিসাবে নূরুল আমিনের জনসভা বানচাল-প্রচেষ্টার অভিযোগে চট্টগ্রামের লালদীঘির প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে অন্যান্যদের সাথে তিনি আটক হন এবং ৪ ঘন্টা পর মুক্তি লাভ করেন।

রাজনৈতিক জীবনে তিনি ১৯৬৩ সাল এ এনডিএফ-এর কক্সবাজার জেলা আহবায়ক, ১৯৬৪ সালে মহকুমা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ কৃষকলীগ-এর জেলা সভাপতি ও পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় সদস্য মনোনীত হন।

১৯৭৪ সালে বাকশালে যোগদান ও কেন্দ্রীয় পলিটব্যুরোর সদস্য মনোনীত হন। তিনি দীর্ঘ দিন জেলা আওয়ামীলীগ এর সহ সভাপতি এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগ এর উপদেষ্টা ছিলেন।

সাংবাদিকতা ও রাজনীতে অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ২০০৮-এ ভাষা সৈনিক অধ্যক্ষ আবুল কাশেম সাহিত্য একাডেমী পদক, সাংবাদিকতায় ১৯৯৬ কক্সবাজার ইনিস্টিটিউট ও পাবলিক লাইব্রেরী পদক, ১৯৯৬ এপেক্স ক্লাব সম্মাননা, কক্সবাজার প্রেসক্লাব রজত জয়ন্তীর সৌজন্য পুরস্কার, প্রথম আলো সম্মাননা ’০৯, পরিবেশ পুরস্কার কক্সবাজার প্রেস ক্লাব ২০০৬ এবং ৭১ এ মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য স্বাধীনতা উৎসব ’০৮ উদযাপন পরিষদ কক্সবাজার সম্মাননা, ২০০৯ সালে কক্সবাজার সাংবাদিক সংসদ (সিএসএস) এর উদ্যোগে কৃতি সাংবাদিক সম্মাননায় ভূষিত হন।

এছাড়াও তিনি কক্সবাজার মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা ১৯৯৭ ও কক্সবাজার প্রেসক্লাব সংবর্ধনা (২০০০) লাভ করেন।

তিনি মগনামা ইউনিয়নের দীর্ঘদিনের চেয়ারম্যান ছিলেন। তিন ভাই, চার বোনের মধ্যে দ্বিতীয় তিনি। মরহুমের ছোট ভাই অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম স্বাধীনতার পর কক্সবাজার জেলা গভর্নর, কেন্দ্রিয় আওয়ামী লীগের সদস্য এবং কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

তাঁর দ্বিতীয় মৃত্যুবাষির্কী উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কক্সবাজার প্রেসক্লাবে স্মরণ সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে কক্সবাজার সাংবাদিক ইউনিয়ন।