বিশেষ প্রতিবেদক :
১৫১টি প্রতিমা ও ১৬৪টি ঘট পূজা মিলিয়ে জেলায় ৩১৫টি মণ্ডপে চলছে দুর্গাপূজা। অষ্টমী পেরিয়ে আজ মহানবমী। দুর্গোপুজায় জেলাব্যাপী উৎসব মূখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল অষ্টমির সকাল থেকে পুজামন্ডপ গুলোতে ছিল ভিড়। পুষ্পাঞ্জলী নেয়ার জন্য মন্ডপে মন্ডপে পুজারীদের পদচারণা বৃদ্ধি পায় সকাল থেকে। রবিবার সকাল পেরিয়ে বিকেলে প্রত্যেক পুজা মন্ডপে চলে চণ্ডীপাঠ। চন্ডীপাঠ শেষ হতে না হতেই সন্ধ্যা থেকে শুরু হয় আরতি। সাথে সাথে পুজামন্ডপগুলোতে বাড়তে থাকে ভক্তদের সমাগম।
গতকাল রবিবার শহরের পূজামন্ডপগুলোতে দেখা যায়, উলুধ্বনি, শঙ্খ, কাঁসর, ঘন্টা আর ঢাকের বাদ্যে প্রার্থনা আর আনন্দে মেতে উঠেছেন পুজারীরা। নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোরসহ সব বয়সের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সামিল হতে দেখা যায় পুজায়।
কক্সবাজার পৌর শহরের ইন্দ্রসেন দূর্গাবাড়ী, স্বরসতী বাড়ী, কালী বাড়ী, ঘোনার পাড়া, বঙ্গপাহাড়, মহাজের পাড়া, হাসপাতাল সড়ক, বিজিবি ক্যাম্প, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে আয়োজিত সংশ্লিষ্ট পুজা মন্ডপগুলোর পুরোহিতরা জানিয়েছেন, আজ নবমীতে ভক্তদের দেয়া ষোড়শ উপাচারের সঙ্গে ১০৮টি নীলপদ্মে পুজা হবে দেবী দূর্গার। নবমীবিহীত পুজা হচ্ছে নীল কণ্ঠ, নীল অপরাজিতা ফুল ও যজ্ঞের মাধ্যমে। দেবীর দুর্গার কাছে নবমী পুজায় যজ্ঞের মাধ্যমে আহুতি দেয়া হয়। শাস্ত্র মতে ১০৮টি বেল পাতা, আম কাঠ ও ঘি দিয়ে এই যজ্ঞের আয়োজন করা হয়।
আগত ভক্তরা জানান, প্রতি বছর এই তিথিতে দুর্গতিনাশিনী দেবী দুর্গা ভক্তদের মাঝে আবির্ভূত হন অসুর শক্তির হাত থেকে মানুষের মুক্তি ও রক্ষা করে অসুরকে বধ ও ধর্ম প্রতিষ্ঠার জন্য। নবমী পুজার মাধ্যমে মানবকূল সম্পদ লাভ করে।
এদিকে জেলা পূজা কমিটির সভাপতি উজ্জ্বল কর ও সাধারণ সম্পাদক বেন্টু দাশ দৈনিক কক্সবাজারকে বলেন, গতকাল রবিবার ছিল মহাষ্টমী। দুর্গাপুজার ৩য় দিন। আজ সোমবার ৪র্থ দিন মহানবমী। নবমী দুর্গাপুজার গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। আগামীকাল বিজয়া দশমীর মধ্যদিয়ে ৫ দিনব্যাপী দুর্গাপুজার সমাপ্তি ঘটবে। এই পর্যন্ত কোন ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই পুজা চলছে। প্রশাসনের রয়েছে কড়া নিরাপত্তা। জেলাব্যাপী আমাদের রয়েছে বিশেষ টিম।এদিকে র্যাব-১৫ পক্ষ থেকে শারদীয় দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চেকপোস্ট, গোয়েন্দা নজরদারি ও টহল কার্যক্রম বাড়ানো হয়েছে। ইতিমধ্যে পূজা উপলক্ষে যে কোনো ধরনের নাশকতা বা অপ্রীতিকর ঘটনা প্রতিরোধে কক্সবাজারের প্রবেশপথসহ গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে র্যাবের চেকপোস্ট কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। পূজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত নিরাপত্তা জোরদার করতে দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় চেকপোস্ট স্থাপন ও টহল জোরদারসহ পর্যাপ্ত সংখ্যক র্যাব সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কক্সবাজারে দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পুরো জেলাব্যাপী আছে প্রশাসনের বড় একটা টিম। এই টিমটি জেলায় দুর্গাপূজা চলাকালীন সময়ে এবং সমুদ্র সৈকতে বিসর্জন অনুষ্ঠান শেষ না হওয়া পর্যন্ত গত ২০ অক্টোবর থেকে মাঠে রয়েছে এবং ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার ব্যবস্থা করবেন।
Related