রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫, ০৭:১৮ অপরাহ্ন

ক্র্যাচে ভর করে আদালতে উঠলেন মামুনুল হক

ক্র্যাচে ভর করে পায়ে হেঁটে ‘আল্লাহু আকবার’ তাকবীর দিতে দিতে নারায়ণগঞ্জ আদালতে উঠেছেন হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম-মহাসচিব মামুনুল হক। সেই সাথে আদালত থেকে নেমে ‘আল্লাহু আকবার’ তাকবীর দিতে দিতেই পুলিশ ভ্যানে গিয়ে উঠেন।

বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক নাজমুল হক শ্যামলের আদালতে সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আদালতে উঠানো ও নামানোর সময়ে পুলিশের নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে থেকে তিনি এই ‘আল্লাহু আকবার’ তাকবীর দেন।

এসময় আদালত প্রাঙ্গনে উপস্থিত থাকা মামুনুল হকের অনুসারিরাও স্লোগান দেয়ার চেষ্টা পুলিশ তাদের থামিয়ে দূরে সরিয়ে দেন। সেই সাথে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। মামুনুল হক ও তার অনুসারীরা সকলেই শান্ত ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শী আইনজীবীরা জানান, মামুনুল হককে আদালতে উঠানোর পুরো সময় জুড়েই আল্লাহু আকবার বলে বলে আসছিলেন।

এ প্রসঙ্গে মামুনুল হকের আইনজীবী অ্যাভোকেট একেএম ওমর ফারুক নয়ন বলেন, মামুনুল হক অসুস্থ্য। তিনি হাঁটতে পারেন না। এজন্য তাকে ক্র্যাচে ভর করে হাঁটতে হয়েছে তিনি একজন সম্মানিত ও আল্লাহওয়ালা মানুষ। এজন্যই হয়তো তিনি ‘আল্লাহু আকবার’ তাকবীর দিয়েছেন। তার অনুসারীদের শক্ত থাকার ইঙ্গিত দিয়েছেন।

এদিকে পুলিশ ভ্যানে উঠার সময়ে মামুনুল হক তার অনুসারীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, তোমরা সত্যের উপর অবিচল থাকো। একদিন সত্যের বিজয় হবে।

এদিন মামুনুল হকের বিরুদ্ধে তিন পুলিশ কর্মকর্তা সাক্ষ্য দিয়েছেন। সাক্ষ্যদাতারা হলেন, চার্জশিটের ২৩ নাম্বার সাক্ষী এ এস আই আনিসুর রহমান, ২৪ নাম্বার স্বাক্ষী এ এস আই কর্ণকুমার হালদার ও ২৫ নাম্বার সাক্ষী এ এস আই শেখ ফরিদ। এ পর্যন্ত এ মামলায় মোট ১৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। সাক্ষী শেষে আদালত আগামী ২৫ এপ্রিল পরবর্তী শুনানীর দিন ধার্য করেছেন।

আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) রকিব উদ্দিন আহমেদ বলেন, আজ মামুনুল হকের বিরুদ্ধে তিন জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। এই মামলায় এই পর্যন্ত ১৮ জনে সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। যারাই সাক্ষী দিয়েছেন তারা সকলেই বলেছেন মামুনুল হক ধর্ষণের সাথে জড়িত। ওই নারীকে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ করেছিলো।

নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান বলেন, সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য নারায়ণগঞ্জ আদালতে আনা হয়েছিলো মামুনুল হককে। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে তাকে আবার কাশিমপুর কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে রয়েল রিসোর্টে এক নারীর সঙ্গে অবস্থান করছিলেন মামুনুল হক। ওই সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এসে তাকে ঘেরাও করেন। পরে স্থানীয় হেফাজতের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা এসে রিসোর্টে ব্যাপক ভাঙচুর করেন এবং তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যান।

ঘটনার পর থেকেই মামুনুল হক মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসায় অবস্থান করে আসছিলেন। এ সময় পুলিশ তাকে নজরদারির মধ্যে রাখে। এরপর গত ১৮ এপ্রিল মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসা থেকে গ্রেফতার করা হয় মামুনুলকে। পরে এই ঘটনায় ৩০ এপ্রিল সোনারগাঁ থানায় মামুনুল হকের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ মামলা করেন ওই নারী। তবে ওই নারীকে তার দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি করে আসছেন মামুনুল হক।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *