দৈনিক কক্সবাজার৭১ এ নাইট্যংপাড়ার মাদককারবারীদের সংবাদ প্রকাশ করায়…
নিজস্ব প্রতিবেদক:
দৈনিক কক্সবাজার৭১ এর প্রথম পাতায় “ধরাছোঁয়ার বাইরে ইদ্রিস ভূলু সিন্ডিকেট!
টেকনাফ নাইট্যংপাড়া পয়েন্ট দিয়ে মাদক ও মানবপাচার সমানতালেই চলছে”
শিরুনামে তথ্য ভিত্তিক বস্তুনিষ্ট সংবাদ প্রকাশের পর টেকনাফ পৌরসভার মাদকের আস্তানা খ্যাত নাইট্যংপাড়ার চিহ্নিত মাদককারবারীদের টনক নড়েছে।
সংবাদ প্রকাশের জের সাংবাদিকের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিশোধ নিতে মরিয়া হয়ে উঠে এই মাদক সিন্ডিকেট।
তারই অংশ হিসাবে ‘নাইট্যংপাড়ার মাদকের রাজা’ খেতাবপ্রাপ্ত জনৈক কমিশনারের লেলিয়ে দেয়া বাহিনী দৈনিক কক্সবাজার৭১ এর টেকনাফ প্রতিনিধি আরাফাত সানির উপর হামলা করেছে। হামলাকারী মাদককারবারী রা তার উপর হামলা করেই ক্ষান্ত হয়নি। তার ১টি কেনন ব্রান্ডের ক্যামরা,১টি এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোন,নগদ ২৩ হাজার টাকা ও ছিনিয়ে নিয়েছে। এ ঘটনায় টেকনাফের সকল কর্মরত সাংবাদিক,সুশীল সমাজ ঘটনার ধিক্কার জানিয়ে হামলার সাথে জড়িত নাইট্যংপাড়ার মাদককারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের জোর দাবী জানিয়েছেন। দ্রুত তাদের গ্রেপ্তারের না করা গেলে প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন সহ নানা কর্মসুচি দিতে বাধ্য হবে বলে ও জানান। এদিকে
দৈনিক কক্সবাজার৭১ এর টেকনাফ প্রতিনিধি আরাফাত সানির উপর হামলার ঘটনায় টেকনাফ পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ড নাইট্যংপাড়ার করিম উল্লাহ প্রকাশ কালাইয়্যার দুই পুত্র যথাক্রমে মোঃ ইদ্রিস(২৫) ও ইয়াছিন,(৩৮)আব্দুল জব্বারের দুই পুত্র যথাক্রমে আলমগীর ওরফে জাবের (২৯),আলম নূর (২২),আব্দুররজ্জাকের পুত্র আব্দুল আমিন(২৩), মোঃ হোসেন ভুলুর পুত্র মোঃ জাহাঙ্গীর(২৩),মোঃ আলম(৩০), পিতা মোঃ হোছন ভুলু সহ মোট ৭ জন কে আসামী করে টেকনাফ মডেল থানায় একটি এজাহার দায়ের করেছে। টেকনাফ থানার অফিসার ইন্চার্জ হাফিজুররহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
উল্লেখ্য যে, টেকনাফ পৌর শহরের আলোচিত নাইট্যং পাড়া চোরাইপয়েন্ট ইয়াবা ও মানবপাচার সরগরম হয়ে উঠেছে। ইয়াবার বদৌলতে নাইট্যং পাড়ার দৃশ্যপট দিন দিন পাল্টে যাচ্ছে।
নাফ নদী সংলগ্ম উত্তর নাইট্যং পাড়া এবং প্যারাবনের আড়ালে চলে ইয়াবা ও মানবপাচার রমরমা বাণিজ্য। এ চোরাপয়েন্টে সীমান্তরক্ষী বিজিবির দিবানিশি টহল জোরদার থাকলেও অনেক সময় তাদের ফাঁকী দিয়ে মিয়ানমার থেকে নৌকা যোগে ইয়াবা ও রোহিংগা অনুপ্রবেশ ঘটে। রাত ঘনিয়ে আসার সাথে চলে চোরাচালান বাণিজ্য। নাইট্যং পাড়া চোরাই পয়েন্ট ইয়াবা ও মানবপাচারের স্বার্থে দখলদারিত্ব নিয়ে ইতিপূর্বে প্রভাবশালীর মধ্যে আদিপত্য বিস্তার নিয়ে রশি টানাটানি শুরু হয়েছিল। উত্তর নাইট্যং পাড়ায় ২টি ঘাট নিয়ে মালিকানা এবং এর আড়ালে ইয়াবা ও মানবপাচার বাণিজ্য দীর্ঘদিন যাবৎ তাদের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। এদিকে
নাইট্যংপাড়া নামে আদমঘাট বাস্তবে প্রবেশ করছে মাদকের বড় বড় চালান। সম্প্রতি মিয়ানমারের মাংগালার রোহিঙ্গাকারবারী মোস্তাক বস্তা বস্তা ইয়াবা নাইট্যংপাড়ার চোরাকারবারী জনৈক্য ভূলুর সিন্ডিকেটের হাতে তুলে দিচ্ছে প্রতিনিয়ত। দুদেশের সীমান্ত পর্যায়ে আআত্মীয়তার সম্পর্ক থাকায় মাদকের চালান নাইট্যং পাড়ায় এসে মওজুদ হয়। পরে সুকৌশলে দেশের বিভিন্ন স্থানে সাপ্লাই হয়ে যাচ্ছে।নাইট্যংপাড়ায় মোঃ হোছন প্রকাশ ভূলো এবং ইদ্রিস হচ্ছে মাদক সিন্ডিকেটের প্রধান হোতা। তাদের নেতৃত্বে আলমগীর হোসেন জাবের,শাহাব উদ্দিন আহমদ মুনিয়া,সরওয়ার,ছৈয়দ নূর প্রকাশ
জাবেদ,আবছার গং মাদক পাচারের সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত। যদি ও বা তারা অস্বীকার করেছে। টেকনাফের নাইট্যংপাড়া সীমান্তের মাদক পাচারে দীর্ঘদিন থেকে তারা জড়িত। সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে ইয়াবা ও স্বর্ণের চালান উত্তর নাইট্যং পাড়া সীমান্তের জহিরুল পয়েন্টে নাফ নদীর জংগলে সুকৌশলে খালাস করে পরে সিন্ডিকেটের বাহকদের হাতে তুলে দেয়।
মিয়ানমারের কারবারী মাংগালার শীর্ষ মাদককেরর গডফাদার মোস্তাক জিরোপয়েন্টে হাতবদল হয়ে সাঁতরিয়ে ইয়াবা ও স্বর্ণের চালান এদেশে নিয়ে আসে নাইট্যং পাড়ায়।
অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, নাইট্যং পাড়ার ইয়াবা কারবারী ইয়াছিন, ইদ্রিস, ভূলু, আব্দুল আমিন,আলম নূর গং মাদক জগতের শীর্ষস্থান দখল করলেও ওরা কেন আইন শৃংখলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়েনা, তা নিয়ে এলাকায় নানা প্রশ্ন উঠেছে। তারাই ইয়াবা, মাদকের চালান এদেশে প্রবেশ করে স্থানীয় যুব সমাজকে ধ্বংসের পথে ঠেলে দিচ্ছে বলে স্বচেতন মহলের অভিযোগ । বিজিবি সূত্রে জানা যায় গত ২৮ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার) সকাল ১১ টায় টেকনাফ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) গোপন সংবাদ পান যে, মিয়ানমার মাংগালা থেকে ইয়াবার একটি বড় চালান মাদক কারবারী ভূলুর বাড়ীতে মওজুদ করে এবং পরে বিজিবি অভিযান চালিয়ে ১লাখ ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করে। সূত্র জানায় মওজুদকৃত ইয়াবা পরিমাণ ৩লাখ ৫০হাজার ছিল এবং উক্ত স্থান থেকে আড়াই লাখ ইয়াবার চালান ভূলুর পুত্র সরিয়ে অন্যত্র নিয়ে যায় বলে এলাকায় অভিযোগ উঠেছে। বিজিবি এ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পূণরায় তন্ন তন্ন করে অভিযান চালালেও তার হাদিস পায়নি। এছাড়া গত ১২ আগষ্ট বিজিবি নাইট্যং পাড়া বরফ মিলের পার্শ্বে অভিযান চালিয়ে ১লাখ পিস ইয়াবার চালান জব্দ করে। এসময় বিজিবি কাউকে আটক করতে পারেনি।
জানা যায়,বিজিবি সহ আইনশৃংখলা বাহিনী অতীতে প্রায় সময় এ ঘাট এলাকা থেকে ইয়াবার চালান জব্দ করে আসছে। কিন্তু নেপথ্যে এর সাথে জড়িত হোতারা থাকে নিরাপদে । নাইট্যং পাড়া চোরাইপথ দিয়ে আসা বস্তা বস্তা ইয়াবা এবং স্বর্ণ বেশিরভাগ নাইট্যং পাড়া সংলগ্ন বাস টার্মিনালের যাত্রীবাহী বাস এবং পরিবহন ট্রাকের আড়ালে এবং আলিদা যোগান তৈরী করে ইয়াবা ও স্বর্ণের চালান পাচার হয়ে যায়। তারা সর্বদা ঘুরেফিরে বাসটার্মিনাল এলাকায় গাড়ি চালক ও হেলপারদের সাথে বসে বসে আড্ডা দেয়। সুযোগ বুজে যুগানে মাল দেয়!
নাইট্যং পাড়ার যে ক’জন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের তালিকা ভূক্ত ইয়াবা কারবারী এবং পেশাদার চোরাকারবারী রয়েছে। তম্মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়েরর তালিকায় ইদ্রিসের নাম অগ্রভাগে রয়েছে। তার ভাই
ইয়াছিন সম্প্রতি চটগ্রামে ডিবির হাতে ১০ হাজার ইয়াবা ধরা পড়ে। তার বিরুদ্ধে পর পর ৩টি মাদকের মামলা রয়েছে। টেকনাফ মডেল থানা মামলা নং-৩২/তাঃ- ১২.৭.২০২২, সিএমপি চাঁদগাও থানা মামলা নং-২১/ তাঃ-১৫.০৭.২০১৮
তার নামে বেনামে গাড়ি,ফ্লাটবাড়ি রয়েছে।
আরেক কারবারীরা নাম মোঃ নুর। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র ইয়াবা,খুন মামলা রয়েছে।
মূলত তাদের যোগ সাজশে মিয়ানমার থেকে ইয়াবা ও স্বর্ণের চালান খালাস হয় নাইট্যংপাড়ায়। মাদক ও স্বর্ণ সহজে আসার নেপথ্যে যে বিষয়টি কাজ করছে দুদেশের সীমান্ত পর্যায়ে তাদের রয়েছে আত্মীয়তার বন্ধন। কেননা নাইট্যং পাড়ার প্রায় লোক মিয়ানমারের বংশদ্ভুত। তারা বাংলাদেশী নাগরিক সেজে এ ব্যবসা চালিয়ে জিরো থেকে অনেকে হিরো বনে গেছেন। আয়ের উৎস্য ছাড়াই ওরা কিভাবে এতো অর্থ ও বিত্তের মালিক বনে গেছেন।
বিষয়টি সবাইকে ভাবিয়ে তুলেছে!
এদিকে কথিত সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে মানব পাচারের ও অভিযোগ রয়েছে। একদিকে মাদক অপরদিকে মানবপাচারে তাদের জুড়ি নেই। গত ১৫.১২.২০২১ ইসমত কলিম নামক এক রোহিঙ্গা নারী কে সিএনজি থেকে নামিয়ে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। একদিন পরে তারা উক্ত মেয়ের পরিবার কে মুক্তিপনের টাকা দেয়ার প্রস্তাব দেয়।
একই দিন ইসমত কলিমের শাশুড়ি সেতারা বেগম বাদী হয়ে মামলা(অভিযোগ) দায়ের করে। ১৭.১২.২০২১ উক্ত রোহিঙ্গা নারীর মরদেহ নাইট্যংপাড়া জলালের জুরা এলাকা থেকে উদ্ধার করে। মোটা টাকায় উক্ত কারবারীরা হত্যা মামলাটি ধামাচাপা দেয়। সর্বশেষ পাওয়া খবরে জানা যায়,তাদের বিরুদ্ধে একটি মানবপাচার মামলা রুজু হয়।
এদিকে নাইট্যংপাড়ার মাদকের ঘাট নিয়ন্ত্রণ করতে তারা পথে পথে আস্তানা গেঁড়েছে। নাইট্যংপাড়া উপকূলীয় বন বিভাগের অফিসের সামনে পৌরসভার টোল আদায়ের বাহানা দিয়ে টংঘর স্থাপন করে। ঝর্নার পাশের উক্ত টংঘরে মাদকের সিন্ডিকেটের লোকজন পাহারা বসায় সারারাত।
অপরদিকে পালকি কাউন্টারের পাশে নাইটগার্ড নুরু কে দিয়ে ইয়াবা পাচার নিরাপদ করতে পাহারা বসায়। নুরু পালকির নাইটগার্ড নামে মাত্র! এ ভাবে প্রতিরাতেই এক চিহ্নিত কমিশনারের নেতৃত্বে ইয়াবার বড় বড় চালান খালাস করে তাদের সিন্ডিকেটের সদস্যদের বাড়িতে অবাধে পৌছে যায়।
গত ৩১.০৮.২০২২ উক্ত সিন্ডিকেট পাহারা বসিয়ে নাফনদীর মোহনা থেকে নাইট্যংপাড়ায় ইয়াবার বড় একটি চালান আনার দৃশ্য গোপনে ভিডিও ধারণ করার সময় সাংবাদিক আরাফাত সানির উপর আক্রমন করে উক্ত সিন্ডিকেট। থানা পুলিশ সহ বিভিন্ন দপ্তরের তাদের কুকৃর্তির খতিয়ান রয়েছে।
বর্তমানে ইয়াবাকারবারীদের অব্যাহত হুমকির মুখে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছে আরাফাত সানি ও তার পরিবার।
যে কোন সময় খুন,গুমের হুমকি দেয়া হচ্ছে আরাফাত মানিকে।
Related