মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ০২:৪৭ অপরাহ্ন

উখিয়ায় দিনদুপুরে চাঞ্চল্যকর চুরি: সহকারী শিক্ষকের ঘর থেকে ৪.৫ লক্ষ টাকা ও ৩৩ লক্ষ টাকার স্বর্ণালংকার লুট

শাকুর মাহমুদ চৌধুরী, উখিয়াঃ
কক্সবাজারের উখিয়ায় রাজারপালং ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডে দিনদুপুরে এক সহকারী শিক্ষকের বাড়িতে ঘটে গেছে চাঞ্চল্যকর চুরির ঘটনা। ২১ জুন (শনিবার) দুপুরে আনুমানিক ১টা ৩০ মিনিট থেকে ২টা ৩০ মিনিটের মধ্যে অজ্ঞাতনামা চোরেরা ঘরের টিনের চালা কেটে প্রবেশ করে প্রায় ৩৭ লক্ষাধিক টাকার নগদ অর্থ, স্বর্ণালংকার ও গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র চুরি করে নিয়ে গেছে।
ভুক্তভোগী শিক্ষক মাষ্টার আবুল কালাম (৫৫), যিনি রাজাপালংস্থ শাহ জব্বারিয়া আদর্শ বালিকা দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত, উখিয়া থানায় এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ঘটনার সময় ভুক্তভোগীর স্ত্রী গোলনাহার বেগম (৪৭) ঘরে তালা লাগিয়ে জেঠাতো ভাইয়ের বাড়িতে যান। ফিরে এসে তিনি ঘরের সামনের দরজাটি ভেতর থেকে বন্ধ অবস্থায় পান। পরে বিষয়টি স্বামীকে জানালে তিনি এসে দেখতে পান যে, বাড়ির রান্না ঘরের দরজা খোলা এবং ঘরের বারান্দার টিনের চালা কাটা।
ঘরের ভেতরে প্রবেশ করে তারা দেখতে পান, ঘরের বিভিন্ন আলমারি, ড্রেসিং টেবিল এবং ওয়্যারড্রপ এর ড্রয়ার ভাঙ্গা ও এলোমেলো অবস্থায় রয়েছে। তল্লাশি করে জানা যায়, স্টিলের আলমিরায় থাকা বাড়ি নির্মাণের জন্য রাখা ৪,৫০,০০০/- টাকা, এবং স্ত্রীর ব্যবহৃত সাড়ে ১৮ ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার (যার বাজারমূল্য প্রায় ৩৩,৩০,০০০/- টাকা) এবং গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র চুরি হয়ে গেছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় কয়েকজন গন্যমান্য ব্যক্তিকে বিষয়টি জানানো হয়। সাক্ষীদের মধ্যে আছেন আব্দুর রহিম (৬২), জাফর আলম (৬০), সিরাজুল কবির (৬২) প্রমুখ। তবে অনেক খোঁজাখুঁজির পরও চোর বা চোরচক্রের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।
এবিষয়ে অভিযোগকারী আবুল কালাম আজাদ জানান, অজ্ঞাতনামা চোরেরা অত্যন্ত সুকৌশলে বারান্দার টিন কেটে ঘরে প্রবেশ করে, এবং পূর্ব পরিকল্পিতভাবে স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থ ও কাগজপত্র চুরি করে নিয়ে গেছে।
এদিকে উক্ত ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। দিনদুপুরে এমন একটি বড় চুরির ঘটনা আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, সম্প্রতি এলাকায় চুরি-ডাকাতির ঘটনা বেড়ে গেছে, কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অপরাধীরা রয়ে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে।
উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আরিফ হোসেন ঘটনার বিষয়ে বলেন, অভিযোগটি পাওয়া গেছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অপরদিকে, ভুক্তভোগী শিক্ষক মাষ্টার আবুল কালাম পুলিশ প্রশাসনের প্রতি চোরচক্রকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে লুন্ঠিত মালামাল উদ্ধারের জোর দাবি জানান।
উল্লেখ্য, উখিয়া-টেকনাফ মহাসড়কের পাশবর্তী এই জনবহুল এলাকায় নিরাপত্তার ঘাটতি এবং বাড়ি বাড়ি পাহারা না থাকায় চোরের দৌরাত্ম্য বেড়েছে বলে এলাকাবাসীর দাবি।
এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষীদের চিহ্নিত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনার জন্য এলাকাবাসী প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *