বাংলাদেশের সীমান্ত জেলা কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন ও তাদের পক্ষে ন্যায়বিচার, জবাবদিহিতা নিশ্চিতের মাধ্যমে চলমান সংকটের টেকসই সমাধানের ওপর জোর দিয়ে জাতিসংঘে একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে।
শুক্রবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের চলমান ৫৩তম অধিবেশনে প্রস্তাবটি সর্বসম্মতিক্রমে পাস হয়।
জেনেভায় বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধির অফিস থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অধিবেশনে বাংলাদেশের উদ্যোগে অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশনের (ওআইসি) পক্ষ থেকে ‘রোহিঙ্গা মুসলিম ও মিয়ানমারের অন্যান্য সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার পরিস্থিতি’ শীর্ষক প্রস্তাবটি উত্থাপিত হয়।
প্রস্তাব উত্থাপনের পর বিভিন্ন ইস্যুতে জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলোর মধ্যে মতভেদ দেখা দেয়। এ সময় মিয়ানমারের অস্থিতিশীল রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা ঝুঁকির বিষয়টি সামনে আসে। দেশটিতে চলমান রাজনৈতিক সংকট সমাধান না হওয়া পর্যন্ত প্রত্যাবাসন সম্ভব নয় বলে মত দেয় অনেক সদস্য রাষ্ট্র।
তবে দ্রুত প্রত্যাবাসন শুরুর পক্ষেও আসে মতামত। পরে দীর্ঘ আলোচনা শেষে প্রস্তাবটি সর্বসম্মতিক্রমে পাস হয়। এই প্রস্তাবে দ্রুত সহায়ক পরিবেশ তৈরি করে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
প্রস্তাবে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বাড়ানোর পাশাপাশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর সব ধরনের নির্যাতন, মানবতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনার কথাও বলা হয়।
অধিবেশনে জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের অধিবেশনে মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করা হয়।
উল্লেখ্য,২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমার সেনাবাহিনীর গণহত্যার শিকার হয়ে রাখাইন রাজ্য থেকে প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশের কক্সবাজারে এসে আশ্রয় নেয়। এ ছাড়া, মিয়ানমারে কয়েক হাজার রোহিঙ্গাকে হত্যা, নারীদের ধর্ষণ ও তাদের ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়।বর্তমানে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গার সংখ্যা প্রায় সোয়া ১২ লাখ। তারা উখিয়া-টেকনাফের ৩৪টি ক্যাম্পে অবস্থান করছেন।
Leave a Reply