শাকিব খান। চিত্রনায়ক ও প্রযোজক। ঈদে মুক্তি পাওয়া আটটি সিনেমার মধ্যে সর্বাধিক হলে চলছে তাঁর অভিনীত ‘লিডার– আমিই বাংলাদেশ’। প্রতিবাদ, সাধারণ মানুষের মধ্যে জাগরণ, অনিয়ম আর সামাজিক সচেতনতার গল্পের এ সিনেমা ও নানা প্রসঙ্গে কথা হলো তাঁর সঙ্গে।

 

ঈদের শুভেচ্ছা… ঈদ মোবারক।

সমকাল পরিবার ও সমকালের মাধ্যমে পুরো দেশবাসীকে জানাই ঈদ মোবারক। সবাই আনন্দে দিনগুলো উদযাপন করুন। ভালো থাকুন।

এবারের ঈদ কেমন কাটল?

মায়ের হাতে বানানো নানা পদের সেমাই খাওয়ার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছিল এবারের ঈদ। দুপুরের পর আমার সিনেমা নিয়ে সুখবর আসতে শুরু করে। এসবের মধ্যেই ভক্ত ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের সঙ্গে চলে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়।

সুখবরগুলো কী ছিল?

‘লিডার– আমিই বাংলাদেশ’ সিনেমার পরিচালক তপু খান ও তাঁর টিম প্রতিটি হলে খোঁজখবর নিচ্ছিলেন। ঢাকার হলগুলোতে দর্শকের আগ্রহের কথা ফোনে জানান। পরে পুরো দেশের হলের খবর আসে। ফলে ঈদের আনন্দ আরও বেশি অনুভব করি। এখানে আরও একটা কথা বলা প্রয়োজন, যেখানে বলিউড, দক্ষিণী সিনেমা, এমনকি নেপালের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি এগিয়ে যাচ্ছে, সেখানে আমাদের ইন্ডাস্ট্রি তো থমকে আছে। এ পরিস্থিতিতে লিডার নিয়ে দর্শক মাতামাতি করছে– এমন সাফল্যের খবরে সত্যিকার আনন্দটাই লাগে।

আনন্দের দিনে কি দুই সন্তান পাশে ছিল?

আব্রাহাম আর বীর দু’জনই আমার কাছে ছিল। দু’জনের সঙ্গেই দারুণ সুন্দর সময় কেটেছে। আব্রাহাম তো বড় হয়ে যাচ্ছে। তাই নানা বিষয়ে ওর মধ্যে কৌতূহলও বাড়ছে। যতক্ষণ কাছে থাকে, নানা ধরনের প্রশ্ন করে। অনেক কিছু জানতে চায়। ওর এসব প্রশ্নের উত্তর দিতে আমারও বেশ ভালো লাগে। আর বীর এখনও অনেক ছোট। তবে ওর নিজস্ব একটা জগৎ আছে। সেই জগতেই থাকতে পছন্দ ওর। আমার সঙ্গে থাকলেও নিজের মতো করে খেলাধুলা করে, গেমস আর গাড়ি চালায়। বীর যখন এসব করে, তখন আমি সঙ্গ দিই। সব মিলিয়ে ওদের সঙ্গে দারুণ সময় কাটে। ঈদের দিনও কেটেছে।

বাবা হিসেবে দুই সন্তান নিয়ে আপনার স্বপ্ন কী?

ওদের নিয়ে আমার একটাই স্বপ্ন, ওরা যেন ওদের মতো করে সুন্দরভাবে বেড়ে ওঠে। বাবা হিসেবে বেড়ে ওঠার পরিবেশটা আমি নিশ্চিত করতে চাই।

‘লিডার– আমিই বাংলাদেশ’ দর্শক টানার কারণ কী বলে মনে করছেন?

উৎসবের ছবি উৎসবের মতো হওয়া লাগে। সিনেমায় সব একশতে একশ হতে হয়। তাহলেই তার প্রতি সবার আগ্রহ জাগে। এই ছবির গল্প ভালো। প্রতিবাদ, সাধারণ মানুষের মধ্যে জাগরণ, অনিয়ম আর সামাজিক সচেতনতার গল্প বলা হয়েছে এতে। ছবির দুটি গান বেশ সাড়া ফেলেছে। ভালো গান কিন্তু দর্শকের কাছে সিনেমার বিজ্ঞাপন। আর আমাকে যাঁরা ভালোবাসেন, তাঁরা গত এক বছরে আমার নতুন ছবি দেখতে পাননি। তাঁদের মধ্যে একটা আগ্রহ ছিল। সব মিলিয়েই হয়তো দর্শক ছবিটির প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

প্রতিবারই আপনার ছবি মুক্তি পেলে একটা পক্ষ দাঁড়িয়ে যায় ফ্লপ প্রমাণ করতে। এবারও কি তেমনটি দেখা গেছে?

ওই পক্ষটা সব সময় ছিল, হয়তো আগামীতেও থাকবে। শুধু আমার ছবির বেলায় না, কোনো ছবি ভাালো চললে, বা কেউ ভালো করলে তারা তাদের আটকাতে তারা মরিয়া হয়ে যায়। মূলত তারা দেশের সিনেমার শক্রু। তবে দর্শকের ভালোবাসা যার বা যাদের পক্ষে আছে, তাদের আটকে রাখার সাধ্য কারও নেই।  কত চেষ্টাই তো করল, ‘লিডার– আমিই বাংলাদেশ’কে কি আটকে রাখতে পারল? এদের দর্শকরা চিনে ফেলেছে।

কিছুদিন আগে কথিত প্রযোজক রহমত উল্লাহ আপনার নামে মামলা করলেন। ওটাও কি এই আটকে রাখার অংশ…

একটু খেয়াল করলে সবাই বুঝতে পারব, তার পুরো প্রক্রিয়াটাই ছিল আমার ছবি আটকে দেওয়া চেষ্টা বা নীলনকশা। অস্ট্রেলিয়ায় আমার বিরুদ্ধে মামলা হবে আর আমি সেখান থেকে ফিরে আসব। সেখান থেকে এসে আরেকবার অস্ট্রেলিয়ায় গিয়েছি আমি। আমার নামে সেখানে অভিযোগ থাকলে তো সেখানকার পুলিশ আমাকে ছেড়ে দিত না। অথচ হুট করে কোথা থেকে এসে রহমত উল্লাহ আমার নামে অভিযোগ দায়ের করলেন। যে প্রযোজক সমিতিতে তিনি অভিযোগ দিলেন, তিনি তো সেখানকার সদস্যও নন। প্রযোজক নেতারা কিছু চেক না করেই বিষয়টি বড় করে ফেললেন। যখন কোনোভাবেই আটকাতে পারলেন না, ঠিক তখন ঈদের আগে ফের এসে মামলা করলেন যেন ঈদের ছবিতে প্রভাব পড়ে। এর পেছনে কারও হাত আছে, আমাকে আটকে রাখার অসৎ উদ্দেশ্য আছে।

ঈদের পর কি নতুন ছবির শুটিং শুরু হচ্ছে…

নতুন ছবির কাজ তো শুরু করতেই হবে। তবে এখন আপাতত ‘লিডার, আমি বাংলাদেশ’ এর ভাইব নিয়েই আছি। সিনেমাটি নিয়ে দর্শকদের উচ্ছ্বাস উপভোগ করছি।